কোচি, 12 অক্টোবর:যুদ্ধ-বিধ্বস্ত ইজরায়েল থেকে দেশে ফিরলেন কেরলের একদল তীর্থযাত্রী ৷ গত 7 অক্টোবর যখন হামাস জঙ্গিগোষ্ঠী তেল আভিভের উপর অতর্কিত হামলা চালায়, তখন সেখানেই ছিলেন এই তীর্থযাত্রীরা ৷ গত কয়েকদিন তীব্র আতঙ্কে কাটানোর পর সেখান থেকে নিরাপদে দেশে ফিরতে সক্ষম হয়েছেন তাঁরা ৷ এ জন্য ভারতীয় দূতাবাসকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ইজরায়েল থেকে ফেরা তীর্থযাত্রীরা ৷
নিজেকে মৌলবী হিসেবে পরিচয় দেওয়া এক তীর্থযাত্রী বৃহস্পতিবার মালয়লম নিউজ চ্যানেলকে জানিয়েছেন যে, হামাসের বহুমুখী আক্রমণের মধ্যেও তাঁদের সময়মতো কেরলে ফেরাটা সম্ভব হয়েছে শুধুমাত্র ভারতীয় দূতাবাসের আধিকারিকদের দ্রুত এবং কার্যকর হস্তক্ষেপের জন্য ৷
ইজরায়েল থেকে ফেরা কেরলের তীর্থযাত্রী স্বস্তির হাসি হেসে বলেন, "যদি আমাদের দেশে ফেরা আর একদিনের জন্যও স্থগিত করা হত, তাহলে আমরা যুদ্ধক্ষেত্রে আটকে পড়তাম...যাইহোক, আমরা এখন বাড়িতে আছি ৷"
আলুভার বাসিন্দা এক মৌলবী ও তাঁর স্ত্রী কেরলের 45 সদস্যের ওই দলে ছিলেন যাঁরা তীর্থযাত্রায় ইজরায়েলে গিয়েছিলেন । বৃহস্পতিবার সকালে ওই দলটি কেরলের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছয় । মৌলবী এবং তাঁর স্ত্রী জানান, তাঁরা প্রাথমিকভাবে পরিস্থিতি কতটা গুরুতর তা বুঝতে পারেননি ৷ কিন্তু ক্ষেপণাস্ত্রের শব্দ শুনে এবং তাঁদের চারপাশের উত্তেজনাপূর্ণ পরিবেশ দেখার পর ভয় ও উদ্বেগ তাঁদের গ্রাস করে ।
আরও পড়ুন:লাশের পাহাড়েও থামছে না গোলাগুলি, ছবিতে দেখুন ইজরায়েল-প্যালেস্তাইন যুদ্ধের ভয়াবহ দৃশ্য
মধ্যবয়সী এই ব্যক্তি বলেন, তাঁদের 7 অক্টোবর ফেরার সফর নির্ধারিত ছিল এবং দলের সবাই ইজরায়েল সফর শেষে বাড়ি ফেরার আনন্দে উচ্ছ্বসিত ছিলেন ৷
তাঁর কথায়, "কিন্তু তারপরই হঠাৎ করে, আমরা হামাসের আক্রমণ সম্পর্কে তথ্য পেয়েছি...আমরা যাত্রা শুরুও করেদিয়েছিলাম, তবে মাঝপথেই আমাদের থামতে হল এবং সারা দিন একই জায়গায় থাকতে হয়েছিল । সেই সময়টা ছিল ভয়ের এবং অনিশ্চয়তার ৷"
তিনি আরও বলেন যে, তাঁরা বিদেশে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিলেন এবং তাঁদের উদ্ধারের জন্য অবিলম্বে কেউ কিছু করতে পারবে না - এই চিন্তা তাঁদের সকলকে আতঙ্কিত করে তুলেছিল ৷ তাঁর কথায়, "তবে, আমরা পরের দিন সকালেই আমাদের যাত্রা পুনরায় শুরু করি । আমাদের দল তাবা সীমান্ত দিয়ে মিশরে প্রবেশ করে । আমরা যখন ইজরায়েলের সীমান্ত অতিক্রম করি তখন স্বস্তি পেয়েছিলাম ৷" পশ্চিম এশিয়ার দেশে তাঁরা কোনও যুদ্ধের ভয়াবহতার প্রত্যক্ষদর্শী কি না তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাঁরা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা দেখেছেন, যদিও তাঁরা কয়েক কিলোমিটার দূরে ছিলেন তবে ভয়ানক শব্দ তাঁদের কানে এসেছে ৷
তাঁদের নিরাপদ প্রত্যাবর্তনের জন্য যাঁরা সমর্থন করেছেন এবং প্রার্থনা করেছেন, তাঁদের সবার প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন ওই মৌলবী । তিনি ভারতীয় দূতাবাসের আধিকারিকদের কথা আলাদা ভাবে উল্লেখ করেন, যাঁদের চটজলদি হস্তক্ষেপ তীর্থযাত্রীদের দেশে ফিরতে সাহায্য করেছেন ৷ মৌলবীর কথায়, "তাঁরা যুদ্ধ শুরু হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আমাদের হোটেলে ছুটে যান ।"
হামাস এবং ইজরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর মধ্যে চলমান সংঘর্ষে শনিবারের হামলার পর থেকে এখনও পর্যন্ত কয়েকশো মানুষ মর্মান্তিকভাবে প্রাণ হারিয়েছেন । (সংবাদসংস্থা পিটিআই)