প্যারিস, 2 জুলাই: এখনও জ্বলছে ফ্রান্স। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে, দেশে অশান্তির আবহে জার্মানি সফর বাতিল করলেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমান্যুয়েল ম্যাক্রো। দেশজুড়ে মারাত্মক আকারে ছড়িয়ে পড়েছে হিংসা। 17 বছরের তরুণ ডেলিভারি বয়কে পুলিশের গুলি ও তার মৃত্যুকে মেনে নিতে পারছে না সে দেশের জনসাধারণ। মঙ্গলবারের ঘটনায় পুলিশ এবং প্রতিবাদীদের মধ্যে খণ্ডযুদ্ধ লাগাতার চলছে। শনিবার রাতভোর চাশোরও বেশি বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পরিস্থিতি ক্রমশ হাতের বাইরে যেতে দেখে ফ্রান্সের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী জেরাল্ড ডারমেইন নিজেই ময়দানে নামেন। তিনি জানাচ্ছেন, শনিবার রাতে বিক্ষোভের আঁচ এতটাই মারাত্মক ছিল যে দেশজুড়ে মোট 45,000 পুলিশ মোতায়েন করা হয়। শুক্রবারও 1300 বিক্ষোভকারীকে আটক করেছিল পুলিশ।
নিউইয়র্ক টাইমস সূত্রের খবর, মৃত তরুণের শেষকৃত্যের পর ফ্রান্সে অশান্তির রেশ আরও বাড়ে। বিভিন্ন এলাকায় অগ্নিসংযোগ ঘটায় বিক্ষুব্ধরা। অন্তত 2500টি আগুন লাগার ঘটনা ঘটে ফ্রান্স জুড়ে। ফ্রান্সের আইনমন্ত্রী জানাচ্ছেন, বিক্ষোভকারীদের মধ্যে বেশিরভাগই নাবালক ও নাবালিকা। এমনকী মন্ত্রীর দাবি, নাবালক বিক্ষোভকারীদের উসকানো হচ্ছে। নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট স্কুল-কলেজ পড়ুয়াদের অভিভাবকদের তাঁদের সন্তানদের প্রতি নজর দেওয়ার কথা বলেছেন। যাতে কোনওভাবেই তাঁরা ঘর থেকে না-বেরোয় সেই আবেদনও করেছেন। প্যারিসের শহরতলি নানতেরেতে 17 বছর বয়সি ডেলিভারি বয়কে গুলি করে হত্যা করে প্যারিস পুলিশ। ফ্রান্সে যেহেতু পুলিশের গুলি চালানোর উপর বিশেষ কোনও কড়া আইন নেই, যেহেতু পুলিশ সন্দেহের বশেই চলন্ত গাড়ির চালককে গুলি চালাতেই পারে। সেহেতু নায়েলের ক্ষেত্রে গুলি চালানো ঘিরে প্যারিস পুলিশ খুব বেশি ভাবিত ছিল না বলেই মনে করা হচ্ছে। কিন্তু, বিষয়টিকে সহজভাবে নিতে পারছে না ফ্রান্সের মানুষ। তাদের অভিযোগ পুলিশের এলোপাথাড়ি গুলি ফ্রান্সে নতুন নয়। কিন্তু নায়েলের ঘটনা যেন পুরনো আগ্নেয়গিরি জাগিয়ে দেওয়ার কাজ করল। এক পুলিশ অফিসার নায়েলকে গুলি করার অভিযোগে অভিযুক্ত। তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে ইতিমধ্যেই।