কাবুল, 16 অগস্ট : কাবুলের দখল নিয়েছে তালিবান ৷ দেশে ছেড়েছেন আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি ৷ এই অবস্থায় গতকাল থেকেই আফগানিস্তানের অরাজক পরিস্থিতি সংবাদ মাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে প্রত্যক্ষ করছে গোটা পৃথিবী ৷ তালিবানের থেকে বাঁচতে বিমানে দেশ ছাড়ার জন্য হুড়োহুড়ি পড়ে যায় ৷ এর পর দেখা যায় বিমানবন্দর চত্বরে পড়ে আছে একাধিক মৃতদেহ ৷ বিমানের চাকা থেকে পড়ে এক ব্যক্তির মর্মান্তিক মৃত্যুর ছবিও ভাইরাল হয়েছে ৷ সব মিলিয়ে তালিবান গোষ্ঠীর ক্ষমতা দখল ও গনি প্রশাসনের ক্ষমতচ্যুত হওয়ার পর্বে সবচেয়ে বেশি অসহায় আফগানিস্তানের সাধারণ মানুষ ৷ এই অবস্থায় দলমত নির্বিশেষ সকলকে গৃহযুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশের বিপন্ন সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ করলেন রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব ৷
এদিন রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুতরেজ বলেন, "যুদ্ধের কারণে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের গৃহহীন মানুষ কাবুলে ছুটে আসছেন ৷ তাঁরা নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন ৷ সব দলকে অনুরোধ করব, সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন ৷" রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব আরও বলেন, "সকলকে বলব, মানবাধিকারের খাতিরে সমস্ত জীবনদায়ী পরিষেবা অব্যাহত রাখুন ৷ এইসঙ্গে সমস্ত দেশকে অনুরোধ করব, বাস্তুচ্যুত উদবাস্তুদের এই বিপর্যয়ের সময় আপনারা স্থান দেবেন ৷" এইসঙ্গে অ্যান্টোনিও গুতরেজ তালিবান সহ আফগানিস্তানের সমস্ত দলকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন মানার অনুরোধ জানান ৷ গুতরেজ স্পষ্ট ভাষায় বলেন, "আমি সবচেয়ে বেশি চিন্তিত সে দেশের মহিলাদের নিয়ে ৷ অন্ধকার সময় ফিরে আসছে বলে যাঁরা ভয় পাচ্ছেন এখন ৷ আফগান মহিলাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সবচেয়ে বেশি জরুরি ৷"
আগেই জানা গিয়েছিল, আশরাফ গনি কাজাখস্তানে পালিয়েছেন ৷ সেই কথাই ভিডিয়ো বার্তায় বললেন আফগান সমাজকর্মী নিসার আহমেদ শেরজাই ৷ তিনি বলেন, "কাবুলে তালিবান ঢুকতেই গনি কাজাখস্তানে পালিয়ে গিয়েছেন ৷ এখন ভীত সন্ত্রস্ত মানুষ কী করবে বুঝতে পারছে না ৷ সাধারণ আফগানরা তালিবানের ভয় পায় ৷" তিনি আরও বলেন, "তালিবান মুখে ভাল কথা বললেও কাজে সেটা করে না ৷ গোটা দেশের মানুষে ভয়ে আছে, কে জানে এর পর কী হবে! মেয়েরা ঘর বন্ধ করে বসে আছে ৷"
এদিকে কাবুলের রুশ দূতাবাস সূত্রে খবর, রবিবার তালিবান বাহিনীর কাবুল দখল নিশ্চিত হতেই চারটি গাড়ি আর একটি হেলিকপ্টার-ভর্তি প্রচুর নগদ অর্থ নিয়ে দেশ ছেড়েছেন আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি। তবে চপারে জায়গার অভাবে সব টাকাপয়সা তিনি নিয়ে যেতে পারেননি। কিছু রেখেও গিয়েছেন বাসভবনে। এই গনিকে এখন বিশ্বাসঘাতক বলছেন সাধারণ মানুষ ৷