ইজিপ্ট, 29 মার্চ : দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর আবার ভাসতে শুরু করল সুয়েজ খালে আটকে পড়া পণ্যবাহী জাহাজ 'এভার গিভেন'৷ মেরিটাইম সার্ভিস প্রোভাইডার ইঞ্চকেপ জানিয়েছে, প্রায় এক সপ্তাহ ধরে উদ্ধারকারী দলের চেষ্টায় বিশ্বের ব্যস্ততম জলপথে আটকে পড়া বিরাট জাহাজটি ফের আংশিকভাবে ভেসেছে ৷ তবে এই জাহাজ আটকে পড়ার ফলে তার পিছনে এতদিন ধরে আটকে থাকা অন্যান্য জাহাজগুলির জন্য কবে এই পথ খোলা হবে, তা এখনও স্পষ্টভাবে জানানো হয়নি ৷
সূত্রের খবর, এভার গিভেন এই জলপথ এতদিন ধরে অবরুদ্ধ করে রাখার জন্য প্রায় 450-রও বেশি জাহাজ সেখানে আটকে পড়েছে ৷ সেই যানজট কীভাবে কাটানো হবে, বিকল্প কোনও পথ বেছে নেওয়া হবে কি না, সে বিষয়ে এখনও স্পষ্টভাবে কিছু জানানো হয়নি ৷ তবে ইতিমধ্যেই এই ঘটনার প্রভাব পড়তে শুরু করে দিয়েছে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ৷ পণ্যের সরবরাহ চালু করতে সুয়েজের পরিবর্তে আরও খরচসাপেক্ষ ও দীর্ঘ জলপথই বেছে নিতে বাধ্য হয়েছে বেশ কিছু জাহাজ ৷ তারা সুয়েজের পরিবর্তে আফ্রিকার দক্ষিণ প্রান্ত ঘুরে গন্তব্যে পৌঁছনোর চেষ্টা করছে ৷
আরও পড়ুন:হ্যাপি হোলি, টুইটারে শুভেচ্ছাবার্তা কমলা হ্যারিসের
গত মঙ্গলবার সকালে সুয়েজ খাল দিয়ে ভূমধ্যসাগরের দিকে যাচ্ছিল তাইওয়ানের বিরাট পণ্যবাহী জাহাজ 'এভার গিভেন'। দীর্ঘদিন রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সঙ্কীর্ণ হয়ে গিয়েছে সুয়েজ। হঠাৎই তীব্র হাওয়ার কারণে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে আড়াআড়ি ঘুরে খাল অবরুদ্ধ করে ফেলে কন্টেনার জাহাজটি। স্বাভাবিকভাবেই তীব্র যানজটে পরপর দাঁড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন দেশের গুরুত্বপূর্ণ বহু জাহাজ ৷ অপরিশোধিত তেল থেকে শুরু করে গবাদি পশু-সহ আরও নানা পণ্যবাহী জাহাজ এতদিন ধরে আটকে থাকায় তার তীব্র প্রভাব পড়েছে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের উপর ৷
কীভাবে কাটল 'এভার গিভেন' জট ?
পূর্ণিমায় জোয়ারে বেড়েছে জল ৷ সেই অনুকূল পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে 10টি টাগবোট দিয়ে টানা ও ঠেলার মাধ্যমে আংশিকভাবে ফের ভাসানো সম্ভব হয় এভার গিভেনকে ৷ তার আগেই সারারাত ধরে 18 মিটার পর্যন্ত খনন কার্য চালিয়ে 27,000 ঘন মিটার বালি ও কাদা তোলে বহু ড্রেজার ৷ জানা গিয়েছে, জাহাজটির সামনের অংশ কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও জাহাজটির অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে ৷ আরও এক শক্তিশালী টাগবোট কার্লো ম্যাগনোকে কাজে লাগানো হয় ৷ বর্তমান পরিস্থিতিতে এই জাহাজের আরও ক্ষতির আশঙ্কা করা হলেও এর মালিক কোম্পানি শোই কিসেন কাইশার দাবি, জাহাজের ইঞ্জিন একেবারে ঠিক রয়েছে ৷ পুরোপুরি মুক্ত হয়ে গেলে এটি স্বাভাবিকভাবেই সফর শেষ করতে পারবে ৷
তবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই জলপথ কবে বাকি জাহাজগুলির জন্য খুলে দেওয়া হবে, সে বিষয়ে কোনও টাইমলাইন বেঁধে দেওয়া হয়নি ৷