পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

By

Published : Apr 16, 2020, 1:09 PM IST

Updated : Apr 16, 2020, 4:21 PM IST

ETV Bharat / international

উপসাগর থেকে নাগরিকদের সরিয়ে আনার এটা সঠিক সময় নয়: প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত নভদীপ সুরি

উপসাগরীয় অঞ্চলে থাকা বড় অংশের ভারতীয় অভিবাসী শ্রমিকদের জন্য উদ্বেগ বাড়তে শুরু করেছে ৷ এই বিষয়টি নিয়ে বরিষ্ঠ সাংবাদিক স্মিতা শর্মা কথা বলেছেন UAE-তে কাজ করা ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত এবং ORF (অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেসন)-এর বিশিষ্ট কর্মী নভদীপ সুরির সঙ্গে ৷

Former Ambassador Navdeep Suri
প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত নভদীপ সুরি

নয়াদিল্লি,১6 এপ্রিল: উপসাগরীয় অঞ্চলে থাকা বড় অংশের ভারতীয় অভিবাসী শ্রমিকদের জন্য উদ্বেগ বাড়তে শুরু করেছে ৷ কারণ, সেখানকার দেশগুলির স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, আইসোলেশন ও কোয়ারেন্টাইন পরিষেবার ঘাটতি নিয়ে নানা খবর আসতে শুরু করেছে ৷ উপসাগরীয় অঞ্চলে ভারতীয় অভিবাসী ব্লু কলার কর্মচারীদের সংখ্যা প্রায় নয় মিলিয়ন ৷ এর মধ্যে UAE-তেই রয়েছেন তিন মিলিয়নের চেয়েও বেশি শ্রমিক ৷ আগামী দিনে ভারত-সহ অন্যান্য দেশকে তাদের নাগরিকদের দেশে ফিরিয়ে নেওয়া যাওয়ার আবেদন করেছে UAE ৷ এই বিষয় নিয়ে সরব হয়েছেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন ৷ তিনি এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে চিঠিও লিখেছেন ৷ কারণ, ওই রাজ্য থেকেই সবচেয়ে বেশি অভিবাসী শ্রমিক উপসাগরীয় অঞ্চলে কাজ করতে যান ৷ উপসাগরীয় অঞ্চলে মাথাচাড়া দেওয়া এই সংকট, কাজ হারানো এবং এর সম্ভাব্য প্রভাব ভারতেও পড়তে পারে ৷ এই বিষয়গুলি নিয়ে বরিষ্ঠ সাংবাদিক স্মিতা শর্মা কথা বলেছেন UAE-তে কাজ করা ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত এবং ORF (অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেসন)-এর বিশিষ্ট কর্মী নভদীপ সুরির সঙ্গে ৷ অবসরপ্রাপ্ত এই কূটনীতিক মনে করেন যে, এটি এখনও কোনও মানবিক সঙ্কট নয়, যেখানে লক্ষ লক্ষ লোককে উপসাগরীয় অঞ্চল থেকে সরিয়ে নিলেই কোনও সমাধান হতে পারে । তিনি আরও যোগ করেন যে কোনও রকম আতঙ্ক তৈরি করা উচিত নয় ৷ সুরি জানিয়েছেন, কোরোনা ভাইরাসের জেরে অর্থনৈতিক সংকট এবং G20-র মতো সংগঠনগুলিকে তাদের প্রস্তাব বাস্তবায়নের জন্য অনেক কাজ করতে হবে ৷ প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত এর সঙ্গে যোগ করে বলেন যে, যে দেশে দু’টি পবিত্র মসজিদ রয়েছে, সেই সৌদি-সহ ইসলামিক দেশগুলি হজ-সহ নানা ধর্মীয় জমায়েত নিয়ে কড়া অবস্থান নিয়েছে ৷ অন্য এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানিয়েছেন যে, WHO-এর থেকে শিক্ষা নিয়ে অন্য প্রতিষ্ঠিত আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলির চিনের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে তাদের দিকে ঝুঁকে পড়া উচিত নয় ৷ তিনি আরও জানিয়েছেন যে ভারতে অর্থনৈতিক দিক থেকে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতে সরবরাহ ব্যবস্থার বাধা সরিয়ে ফেলতে হবে ৷

নিম্নে সাক্ষাৎকারটি দেওয়া হল -

প্রশ্ন : উপসাগরীয় অঞ্চলের অভিবাসী শ্রমিকরা দীর্ঘদিন ধরেই স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যায় ভুগছেন৷ এই প্যানডেমিকের জেরে তৈরি হওয়া পরিস্থিতিতে তাঁরা কী ধরনের মানবিক সংকটের মুখে পড়তে পারে?

উত্তর : বিভিন্ন উপসাগরীয় দেশ, তা সৌদী হোক কিংবা আমিরশাহী, তাদের বিভিন্ন নিয়ম রয়েছে ৷ তবে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যার জেরে সেখানে কোনও বিপর্যয় বা সংকট তৈরি হয়েছে বলে এমন কিছু আমার কানে আসেনি ৷ কিছু বিছিন্ন ঘটনা আপনি শুনে থাকতে পারেন ৷ এখনও পর্যন্ত সমস্ত সরকারই বলছে তারা যথাসাধ্য স্বাস্থ্য পরিষেবা দিতে বদ্ধপরিকর ৷ তারা অবশ্যই চায়, তাদের দেশের নাগরিকদের ফিরিয়ে আনতে, যাঁরা কোথাও আটকে পড়েছেন অথবা কাজ হারিয়েছেন ৷ কিন্তু এটা দ্বিতীয় প্রাধান্যের বিষয় ৷ এমন একটি অর্থনৈতিক পরিস্থিতির তৈরি হয়েছে, এমন স্বাস্থ্য সংকট তৈরি হয়েছে এবং উপসাগরীয় অঞ্চলও এর বাইরে নয় ৷ এই অঞ্চলও ততটাই ক্ষতিগ্রস্ত, যতটা অন্য দেশগুলির ক্ষতি হয়েছে ৷ প্রতিটি দেশই নিজের মতো করে এই পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা করছে ৷

প্রশ্ন : কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে চিঠি লিখেছেন ৷ তথ্য অনুযায়ী, নার্স, ছোট ব্যবসায়ী, শ্রমিকদের একটা বড় অংশ সংক্রামিত হয়েছেন ৷ বেশিরভাগ অভিবাসীরা ভারত থেকে সস্তার ওষুধ মজুদ করে রাখেন । এই তীব্র সংকট মোকাবিলায় ভারত সরকার কীভাবে পদক্ষেপ করতে পারে ?

উত্তর : আমার পরামর্শ আমাদের রাষ্ট্রদূত এবং কনসোল জেনারেলের সঙ্গে কথা বলা উচিত ৷ তাঁরা এই পরিস্থিতিতে সর্বোচ্চ সহায়তা করে পরিষেবা দিয়ে চলেছেন ৷ ওই দেশগুলির সরকারের সঙ্গে সংযোগ রক্ষা করে চলা গোষ্ঠী সংগঠনগুলির সঙ্গে যোগাযোগ রেখে তাঁরা কাজ করছেন ৷ তবে ভারতীয়র সংখ্যাটা অনেকটাই বেশি ৷ প্রাথমিকভাবে এই দায়িত্ব বর্তায় ওই দেশগুলি এবং যে সংস্থার অধীনে এঁরা কাজ করেন, তাঁদের উপর ৷ কোনও সমস্যা তৈরি হলে অবশ্যই দূতাবাসের তরফে পদক্ষেপ করতে হবে এবং আমার মনে হয় তাঁরা প্রতিদিন কাজ করছেন, যাতে যতটা সম্ভব সাহায্য করা যায় ৷

প্রশ্ন : UAE ঘোষণা করেছে, যে সমস্ত দেশ তাদের নাগরিকদের উপসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলিতে থেকে ফিরিয়ে নিতে অস্বীকার করবে, তাদের বিরুদ্ধে কড়া বিধিনিষেধ আরোপ করা হবে৷ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে এই সিদ্ধান্ত কেমন প্রভাব ফেলতে পারে ? কতদিন উপসাগরীয় অঞ্চল থেকে দেশের নাগরিকদের ফিরিয়ে আনতে পারবে না ভারত?

উত্তর : দয়া করে দেখুন কী পরিস্থিতিতে এবং ঠিক কী ভাষা ব্যবহার করেছে UAE সরকার ৷ ওই সরকারের সঙ্গে আমাদের দূতাবাসের তরফে যোগাযোগ রেখে চলা হচ্ছে এবং তারা দিল্লির জন্য গুরুত্বপূর্ণ এমন সব তথ্যই জানাচ্ছে ভারতকে ৷ UAE-তে ছোট দলের ভারতীয় নাগরিক, যাঁদের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে কিংবা বেড়াতে গিয়ে যাঁরা আটকে পড়েছেন, তাঁদের সঙ্গে যাঁরা কাজ করতে গিয়েছেন বা অন্য কোনও বিভাগে ভিসা নিয়ে গিয়েছেন, এই দু’টি বিষয়ের মধ্যে পার্থক্য করা উচিত ৷ ছোট ছোট দলগুলিই বেশি চাপ সৃষ্টি করছে ৷ এমনকী, কেরলের মুখ্যমন্ত্রী এই ছোট দলগুলির কথাই তাঁর চিঠিতে উল্লেখ করেছেন, উপসাগরীয় অঞ্চলে কাজ করা কয়েক মিলিয়ন ভারতীয়র কথা বলেননি ৷

প্রশ্ন : তথ্য অনুযায়ী, শ্রমিকদের ছাঁটাই করা হয়েছে, আটকে রাখা হয়েছে এবং তাঁরা জনবহুল জায়গায় আটকে পড়েছেন ৷ এতে তাঁদের বিপদের মধ্যে ফেলে দেওয়া হচ্ছে না কি ?

উত্তর : আমাদের নয় মিলিয়নের বেশি ভারতীয় রয়েছেন, যা আকারে একটি বড় মহানগরের মতো ৷ একটি বিমান গড়ে ১৮০ জনকে বহন করতে পারে ৷ হিসেব করে বলুন যে ১০ লক্ষ মানুষকে ফিরিয়ে আনতে ঠিক কতগুলি বিমানের প্রয়োজন পড়বে ? কোথায় তাঁদের কোয়ারেন্টাইন করে রাখা হবে? আমরা কি নিশ্চিত যে উপসাগরীয় অঞ্চলে বর্তমানে ভাইরাসের প্রকৃতি আমাদের ভারতে কোরোনা ভাইরাসের প্রকৃতির মতোই । যতক্ষণ না সরিয়ে নিয়ে আসার মতো পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে, ততক্ষণ আমাদের যান্ত্রিক মাধ্যমে চিন্তাভাবনা করতে হবে ৷ তাঁরা যেখানে আছেন, সেখানে থাকলেই ভালো থাকবেন এবং আমরা সেখানে তাঁদের ভালো রাখার জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেব, এই কথাটি সরকার একেবারে ঠিকই বলেছে ৷

বহু প্রতিবেশী দেশ এবং অন্য দেশের তুলনায় নিজেদের নাগরিকদের দেখভালের বিষয়ে ভারতের রেকর্ড বেশ ভালো ৷ UAE-তে কাজ করার অভিজ্ঞতা থেকে থেকে বলতে পারি যে সেখানে আমাদের গোষ্ঠী সংগঠনগুলির সঙ্গে সুষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে ৷ হ্যাঁ, সেখানে অনেকে আছেন, যাঁরা বেকার ৷ কোরোনা ভাইরাসের জেরে তৈরি হওয়া পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক মন্দা তৈরি হয়েছে ৷ আমরা এমন পরিস্থিতির মোকাবিলা করেছি যেখানে সংস্থাগুলি থেকে কর্মী ছাঁটাই করা হয়েছে এবং তখন হয় তাঁদের ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করতে হয়েছে অথবা নতুন কাজের সন্ধান করা পর্যন্ত দেখভালের দায়িত্ব নিতে হয়েছে ৷ এসব করার জন্য আমাদের দূতাবাস সবসময় তৈরি ৷ কিন্তু আমাদের দেখতে হবে, যাতে আতঙ্ক এবং হতাশা তৈরি না হয় ৷ এটা কারও কোনও কাজে আসবে না ।

প্রশ্ন : রোজগার এবং চাকরির যে বিপুল ক্ষতি হল, তার প্রভাব সম্পর্কে ভারত GCC-র কাছ থেকে কী বার্তা পাচ্ছে ?

উত্তর : এটি প্রভাব ফেলতে বাধ্য । এটা ঠিক যে কেরল এবং GCC-র মধ্যে একটা যোগাযোগ আছে ৷ কিন্তু বিহার, উত্তরপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা এবং অন্যান্য জায়গার সঙ্গেও এর যোগাযোগ আছে ৷ গত বছর শুধুমাত্র UAE থেকে আয়ের পরিমাণ ছিল প্রায় ১৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার । এবং উপসাগরীয় অঞ্চল থেকে সামগ্রিকভাবে আয়ের পরিমাণ ছিল প্রায় ৫০ বিলিয়ন UDSD, যা ভারতের GDP-র প্রায় ২ শতাংশ । সুতরাং চাকরি হারানোর একটি সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে এবং অনেকে হয়তো দেশে ফিরে আসবেন ৷ এর ফলে আয়ে প্রভাব পড়বে ৷ তবে আমরা ভারতের মধ্যে যা দেখছি, এটা তার থেকে কোনওভাবেই আলাদা নয় । আমরা কি দেখছি না যে অভিবাসীরা যখন দিল্লি এবং মুম্বই থেকে চাকরি ছেড়ে তাঁদের গ্রামে ফিরে যাচ্ছে ৷ সেই আয়ের অর্থনীতিও শুকিয়ে গিয়েছে । আমরা বিশ্বজুড়ে যে বিপর্যয় প্রত্যক্ষ করছি, তা এই অর্থনৈতিক পরিস্থিতির সঙ্গে একেবারে যুক্তিযুক্ত ৷

প্রশ্ন : আমরা একাধিক বহুপাক্ষিক উদ্যোগ দেখলাম, এই সংকট কাটাতে G20-র প্রস্তাবগুলিকে আমরা কীভাবে দেখব ? এগুলি কতটা প্রয়োগযোগ্য ?

উত্তর : এই প্রস্তাবগুলিকে বাস্তবের রূপ দেওয়ার আগে আমাদের আরও অনেক কিছু করতে হবে ৷ এই মুহূর্তে আন্তর্জাতিক সমন্বয় রক্ষার বিষয়ে পদক্ষেপ করতে হবে ৷ আর বাস্তবটি হল প্রতিটি দেশই জাতীয় পদেক্ষেপের উপর ভরসা করে আছে ৷

প্রশ্ন :এই প্যানডেমিকের মোকাবিলায় WHO (বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা) অনেক সমালোচনার মুখে পড়েছে, যখন এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়া নিয়ে চিনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে ৷ আপনার কী মনে হয় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের WHO এবং চিনের জবাবদিহি চাওয়া উচিত ?

উত্তর : যদি ঘটনাপ্রবাহের দিকে নজর রাখা যায়, তাহলে বোঝা যাবে যে ঠিক কী ঘটেছে ৷ চিন কীভাবে নিজেদের বাঁচাতে WHO-এর নেতৃত্বকে ভুল পথে পরিচালিত করেছে ৷ ২০১৯ সালের নভেম্বরেই চিন জানত যে কিছু একটা সমস্যা তৈরি হয়েছে ৷ ডিসেম্বরেই চিনের সংবাদমাধ্যম থেকে জানা গিয়েছিল যে মানুষের মধ্যে সংক্রমণের এমন কিছু ঘটনা ঘটেছে, যা থেকে আতঙ্কিত হওয়াই স্বাভাবিক ৷ মানুষ এই বিষয়ে লেখালেখি শুরু করেছিল ৷ অথচ এই বছরের ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত WHO এবং চিন বারবার বলছিল যে এই রোগ মানুষের থেকে মানুষে সংক্রামিত হচ্ছে কি না, তা এখনও নিশ্চিত নয় ৷ বিমান পরিবহণ চালু ছিল ৷ এই বিষয়টি আমরা দু’টি ভাগে দেখতে পারি ৷ WHO খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি আন্তর্জাতিক সংগঠন, যারা এখনও বিভিন্ন পরামর্শ, সতর্কতা এবং অন্য বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করছে এবং এই পরিস্থিতিতে WHO-এর নেতৃত্ব যেভাবে কাজ করছে ৷ এই শিক্ষাটি শুধু WHO-এর জন্য নয়, এটা অন্য আন্তর্জাতিক সংগঠনের কাছেও শিক্ষণীয় ৷ কারণ, চিন একাধিক আন্তর্জাতিক সংগঠনের উপর নিজেদের নিয়ন্ত্রণ তৈরি করতে চাইছে ৷ আমরা চাই না যে প্রতিষ্ঠিত, গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলি চিনের মতো হয়ে যাক ৷

প্রশ্ন : উপসাগরীয় অঞ্চলে কাজ করার অভিজ্ঞতা থেকে কী মনে হয় যে COVID19 এবং তার পরবর্তী প্রভাবের জেরে হজ একটা পদ্ধতিগত পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যেতে পারে ?

উত্তর : সৌদী, মিশর, UAE-এর মতো দেশগুলি অনেক আগেই পদক্ষেপ করেছে এবং শুক্রবারের প্রার্থনার জন্য জমায়েতের অনুমতিও বাতিল করে দেওয়ার ঘোষণা করেছে ৷ তারা ‘প্রার্থনায় আসুন’ বলার পরিবর্তে ‘বাড়িতে থাকুন ও প্রার্থনা করুন’ বলতে শুরু করেছে ৷ হজ, উমরাহ কিংবা এই ধরনের অন্য কোনও জমায়েতের বিষয়ে এখন কড়া নজর রাখা হচ্ছে ৷ বলা হচ্ছে, যে এটা একটা নির্দিষ্ট দীর্ঘস্থায়ী ঐতিহ্য ৷ হজ একটি বার্ষিক অনুষ্ঠান, যা যুদ্ধের সময়ও চলেছে ৷ ফলে এই বছর হজ হবে না, এটা ঘোষণা করা সৌদীর পক্ষে বড় সিদ্ধান্ত এবং তারা এটা অনেক বিবেচনা করেই নিয়েছে ৷

প্রশ্ন : আগামী মাসগুলিতে সরকারকে নজর দিতে হবে, এমন গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক দিকগুলি কী ?

উত্তর : প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘জান ভি চাহিয়ে, জাঁহা ভি চাহিয়ে’ ৷ তাঁর ঘোষণাতেই ইঙ্গিত ছিল ছিল এপ্রিলের ২০ তারিখ থেকে হয়তো একটা ভারসাম্য রক্ষা করার চেষ্টা শুরু হবে ৷ লকডাউন থাকবে ৷ কিন্তু অর্থনীতি নির্ভর কাজ হয়, এমন অঞ্চলগুলি ধীরে ধীরে খুলতে শুরু করবে ৷ আমার মনে হয়, এটা ভারতীয় অর্থনীতির দিক থেকে এটা খুবই জরুরি ৷ কারণ, বহু মানুষ দৈনিক রোজগারের উপর নির্ভর করে বেঁচে থাকেন ৷ তাঁদের অর্থনৈতিক জীবনযাপন খুবই দরকারি ৷ এই চ্যালেঞ্জ নিয়েই সরকারের শীর্ষস্তরে প্রতিদিন কাজ চলছে ৷ তবে সরবরাহের কিছু বাধা সরিয়ে ফেলার বিষয়টি আমাদের নিশ্চিত করতে হবে ৷ যেমন বহু গাড়ি চালকরা তাঁদের গ্রামে ফিরে গিয়েছেন অথবা বন্দরগুলি বন্ধ হয়ে গিয়েছে ৷ অর্থনীতি হল একটি জীবন্ত প্রাণীর মতো, ঠিক যেন একটা শরীর ৷ যদি একটা অংশ ঠিক মতো কাজ করতে না পারে, তাহলে অন্য অংশেও তার প্রভাব পড়বে ৷ এই সরবরাহের ব্যবস্থা পুনরায় চালু করা খুব প্রয়োজনীয়, কারণ তাহলে অর্থনীতিতে কিছুটা হলেও স্বাভাবিকতা ফিরবে ৷

Last Updated : Apr 16, 2020, 4:21 PM IST

ABOUT THE AUTHOR

...view details