মস্কো, 11 অগাস্ট : বিশ্বে প্রথম কোরোনা ভ্যাকসিন তৈরি করল রাশিয়া । আজ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ঘোষণা করেন, এই ভ্যাকসিন কোরোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে সক্ষম । তাঁর মেয়ের উপর ইতিমধ্যেই ভ্যাকসিনটিপ্রয়োগ করা হয়েছে । তিনি ভালো আছেন বলে জানিয়েছেন পুতিন । আজ রুশ মন্ত্রিসভার বৈঠকে পুতিন ভ্যাকসিনের বিষয়ে ঘোষণা করেন । জানান, ভ্যাকসিনটি পরীক্ষা করা হচ্ছে এবং এটি নিরাপদ ।
কিন্তু রাশিয়ার এই ঘোষণাকে এখনই মান্যতা দিচ্ছে না বিজ্ঞান মহলের অনেকেই। দেশ-বিদেশের বিজ্ঞানীরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষামূলক প্রয়োগের কথা । তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালে সাধারণত কয়েক মাস সময় লেগে যায়। এবং হাজারের বেশি মানুষের উপর ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হয় । তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালের আগেই ভ্যাকসিন ব্যবহারে তাড়াহুড়ো হিতে বিপরীত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা ।
তবে এই কোরোনা ভাইরাস ভ্যাকসিনের অনুমোদন দিয়েছে রুশ স্বাস্থ্যমন্ত্রক । পুতিনের মেয়ের শরীরে ভ্যাকসিন প্রয়োগের প্রথম দিনে তাপমাত্রা ছিল 100.4 ডিগ্রি ফারেনহাইট । এরপরই তাঁর শরীরের তাপমাত্রা কমে যায় । পরের দিন তাপমাত্রা হয় 98.6 ডিগ্রি ফারেনহাইট । দ্বিতীয় দফায় প্রয়োগের পর তাপমাত্রার সামান্য বৃদ্ধি হয়েছিল । কিন্তু তারপর সব সাধারণ হয়ে যায় । পুতিন জানিয়েছেন, এখন তাঁর মেয়ে ভালো আছেন । তাঁর শরীরে সর্বোচ্চ সংখ্যক অ্যান্টিবডি রয়েছে । তবে দুই মেয়ে মারিয়া ও ক্যাটেরিনার মধ্যে কার শরীরে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হয়েছে, সে বিষয়ে কিছু জানাননি পুতিন ।
রুশ সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, যাঁরা ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেন তাঁদের উপরে প্রয়োগ করা হবে প্রথম দফার ভ্যাকসিন । স্বাস্থ্যকর্মী, শিক্ষকদের উপর প্রয়োগ করা হবে । উপ-প্রধানমন্ত্রী গোলিকোভা জানিয়েছেন, এই মাসে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকদের উপর ভ্যাকসিনপ্রয়োগ করা হবে । দু'বছর পর্যন্ত এই ভ্যাকসিন প্রতিরোধ ক্ষমতা দিতে সক্ষম বলে জানিয়েছে রুশ স্বাস্থ্যমন্ত্রক । তবে পুতিনের বক্তব্য, স্বেচ্ছায় ভ্যাকিসন নিতে পারবেন সবাই । সেপ্টেম্বর থেকে প্রচুর সংখ্যক ভ্যাকসিন উৎপাদন হবে। অক্টোবরে যত দ্রুত সম্ভব এই ভ্যাকসিনের গণপ্রয়োগ শুরু হবে ।
বিশ্বে প্রথমবার COVID-19-এর ভ্যাকসিন আনতে চলেছে বলে আগেই দাবি করেছিল রাশিয়া । ভ্যাকসিন তৈরির গবেষণায় সাহায্য করেছে রাশিয়ার ডিরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড । এই ডিরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট ফান্ডের প্রধান কিরিল দিমিত্রিভ জানিয়েছেন, ভ্যাকসিন আবিষ্কারের নেপথ্যে রয়েছে গামালেয়া নামে মস্কোর এক গবেষণা সংস্থা ।