ব্রাসেলস, 22 মে: বিশ্বজুড়ে বিঘ্নিত হচ্ছে বাস্তুতন্ত্র । প্রভাব পড়ছে জীব বৈচিত্রে । ক্ষতির সম্মুখীন মানুষ । এই অবস্থায় বাস্তুতন্ত্র ও জীব বৈচিত্র রক্ষা করা প্রয়োজন । তাই কমাতে হবে কীটনাশকের ব্যবহার । তার জায়গায় জৈব সার ব্যবহারের পরিমাণ বাড়াতে হবে । বাড়াতে হবে জৈব কৃষি। বুধবার এই বিষয়টি আরও একবার স্পষ্ট করল ইউরোপীয় ইউনিয়ন । বিশ্বের 27টি দেশে জীব বৈচিত্র রক্ষা করতে কী কী পদক্ষেপ করা উচিত তা ঘোষণা করা হয় । প্রাকৃতিকভাবে সুষ্ঠু একটি খাদ্য শৃঙ্খল গড়তে কীটনাশকের ব্যবহার কমানো অত্যন্ত আবশ্যক । পরিবর্তে ব্যবহার করতে হবে জৈব সার । জৈব কৃষির উপর জোর দিতে হবে ।
লক্ষ্য মূলত পরিবেশে গ্রিন হাউস গ্যাস কমানো । আর তার জন্য 2030 সালের মধ্যে রাসায়নিক কীটনাশকের ব্যবহার অর্ধেক করে ফেলার কথা বলা হয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের তরফে । বর্তমানে জৈব কৃষির জন্য 8% জমি সংরক্ষিত রয়েছে । এই পরিমাণটি বাড়িয়ে 25%-এ নিয়ে যেতে হবে । আগামী 10 বছরে ন্যূনতম 3 বিলিয়ন অতিরিক্ত গাছ লাগাতে হবে । মাছ এবং পশু পালনের জন্য অ্যান্টিমাইক্রোবায়ালস যা অ্যান্টিবায়োটিকে অন্তর্ভুক্ত থাকে তার ব্যবহার 50% কমাতে হবে । ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতে সমগ্র গ্রিন হাউস গ্যাসের পরিমাণের 10% উৎপন্ন হয় কৃষি কার্যক্রমের থেকেই ।
স্বাস্থ্য ও খাদ্য সুরক্ষা বিভাগের কমিশনার স্টেলা ক্রিয়াকিডস বলেন, "শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য প্রকৃতির অবদান অনস্বীকার্য । প্রাকৃতিকভাবেই জল ও বাতাস পরিস্রুত হয় । জলবায়ুর পরিবর্তন হয় । ফসলে পরাগসংযোগ ঘটে । কিন্তু বর্তমানে আমরা প্রকৃতির অবদানকে ভুলে যেতে বসেছি । এর ফল মারাত্মক হতে পারে । প্রাকৃতিক ভারসাম্য এর ফলেই লোপ পাচ্ছে । " এই বিষয়ে সবুজ চুক্তির দায়িত্বে থাকা কমিশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট জানান, নতুন পরিকল্পনাগুলি সদস্য দেশগুলির দ্বারা অনুমোদিত হওয়া প্রয়োজন । কোরোনা অতিমারীর কারণে তৈরি হওয়া আর্থিক সংকটকেও এর ফলে মোকাবিলা করা সম্ভব হবে ।
জৈব কৃষির ফলে প্রতি হেক্টর পিছু 10-12% কর্ম সংস্থান বৃদ্ধির সহায়ক হতে পারে বলে অনুমান করছে কমিশন । কমিশনের তরফে বলা হয়েছে, "পরিবেশ এবং জলবায়ুর পরিবর্তনের জন্য বিপুল সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষতি হচ্ছে । ঘনঘন আবহাওয়া পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ এর মূল কারণ । এরফলে EU GDP-র হার 2% কমে যেতে পারে । এছাড়াও EU-এর আরও কয়েকটি ক্ষেত্রে ক্ষতি হতে পারে ।" কমিশনের তরফে সামনে আনা রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, "1997-2011-র মধ্যে বাস্তুতন্ত্র রক্ষা সম্পর্কিত ক্ষেত্রে সারা বিশ্বে প্রতিবছর 3.5-18.5 ট্রিলিয়ন ইউরো ক্ষতি হয়েছে । প্রতি বছর ভূমি অবক্ষয় ও ভূমি চরিত্র পরিবর্তনের ফলে আনুমানিক 5.5-10.5 ট্রিলিয়ন ইউরো ক্ষতি হয় ।"
গ্রিন পিসের EU এগ্রিকালচার পলিসি ডিরেক্টর ম্যাক্রো কন্টিএরো বলেন, "বেশি পরিমাণে মাংস উৎপাদন ও তা গ্রহণ করা স্বাস্থের পক্ষের ক্ষতিকারক । পাশাপাশি তা প্রকৃতিকেও ধ্বংস করছে । আর এর ফলেই জলবায়ুর পরিবর্তন হচ্ছে । কিন্তু বিষয়টি রোখার জন্য কিছুই করার নেই ।"