দিল্লি, 15 মার্চ : বিষয়টা ছিল কোরোনা মোকাবিলায় SAARC-গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলি কেমন পদক্ষেপ করছে তার রূপরেখা নিয়ে আলোচনা ৷ বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া এই মারণ রোগের মোকাবিলা করা আগামীদিনে কীভাবে সম্ভব, তা নিয়েও আলোচনা করার ছিল আজকের ভিডিয়ো কনফারেন্সের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় ৷ কিন্তু এহেন বৈঠকের সেই কাশ্মীর প্রসঙ্গ তুলে আলাদা মাত্রা যোগ করার চেষ্টা করল ইসলামাবাদ ৷ এদিন SAARC-গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্সের কথা ছিল ৷ অত্য়ন্ত শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে উপস্থিত ছিলেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি, ছিলেন একাধিক সমস্যায় জর্জরিত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং অন্যান্য দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরাও ৷ কিন্তু যেন সবার নজর কাড়লেন একজন ৷ তিনি পাকিস্তানের প্রতিনিধি ৷ শীর্ষ প্রধানদের বৈঠক থাকলেও, আজ সেখানে যোগ দেননি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ৷ যোগ দেন ইমরানের প্রধান পরামর্শদাতা ততা দেশের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাফর মির্জা ৷ নিজের বক্তব্য পেশের সময়, যেভাবে কাশ্মীরের প্রসঙ্গ টেনে আনলেন তা নিঃসন্দেহে তারপর্যপূর্ণ ৷
কোরোনা নিয়ে SAARC-এর ভিডিয়ো কনফারেন্সে তাল কাটল পাকিস্তানের কাশ্মীর ইশু
COVID-19’এর মোকাবিলায় SAARC গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলিকে নিয়ে ভিডিয়ো কনফারেন্সের আবেদন জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৷
আজ মির্জা বলেন, SAARC গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়ে ইসলামাবাদের সদিচ্ছার কথা ৷ জানান, SAARC-এর প্রতিটা দেশের মানুষ যাতে সুস্থ থাকতে পারেন, সেজন্য সবরকম সহযোগিতা করতে প্রস্তুত ৷ এরপরই নিয়ে আসেন কাশ্মীর খোঁচা ৷ বলতে থাকেন, ‘‘ভারত সরকার যেভাবে কাশ্মীরকে আটকে রেখেছে, তাতে সেখানকার মানুষের পক্ষে সমস্যা তৈরি করছে ৷’’ তাঁদের চিকিৎসাসহ একাধিক পদক্ষেপ করা উচিত বলে SAARC নেতাদের সামনে প্রস্তাব রাখেন মির্জা ৷ পাশাপাশি তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কোরোনার আতঙ্কে রয়েছেন কাশ্মীরের মানুষ ৷ অনেকেই ঠিকমতো যোগাযোগ রাখতে পারছেন না ৷ চিকিৎসা পরিষেবা ব্যহত হচ্ছে ৷ এবিষয়ে সংশ্লিষ্ট সরকারের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা উচিত ৷
প্রথমত, আজকের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের অনুপস্থিতি ঘিরে নতুন করে জল্পনা তৈরি হয়েছে ৷ যেভাবে দিল্লি এবং ইসলামাবাদের মধ্যে কূনৈতিক চাপান উতোর চরমে উঠেছে, তাতে আজকে ইমরান খানের উপস্থিতি নতুন মাত্রা যোগ করল ৷ যেভাবে জঙ্গি দমন এবং জঙ্গি মদত ইশুতে বিপরীত মেরুতে অবস্থান করছে, তাতে মনো করা হয়েছিল অন্তত আজ দুই শীর্ষ প্রধানের উপস্থিতি কিছুটা হলেও সম্পর্কের বরফ গলাবে ৷ অন্তত মানবিকতার ইশুতে, ভারত-পাকিস্তান একযোগে কোরোনার মতো বিপর্যয় মোকাবিলায় এগিয়ে আসবে ৷ বস্তুত, দিনকয়েক আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির এক টুইট বার্তায় যেভাবে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন, তারপর আজ ভিডিয়ো কনফারেন্স ঘিরে নতুন করে প্রত্যাশার পারদ চড়ছিল ৷ কিন্তু প্রথমত ইমরান খানের অনুপস্থিতি এবং দ্বিতীয়ত প্রধানমন্ত্রীর প্রতিনিধি হিসেবে জাফর মির্জার কাশ্মীর প্রসঙ্গ উত্থাপন, নতুন করে বিভেদের মানচিত্রকে আরও স্পষ্ট করল? সেটাই যেন কোরোনা আতঙ্ক ছাড়িয়ে নতুন প্রশ্ন তুলে দিল ৷