বেজিং, 11 মে : কোরোনা সংক্রমণের পর দেশকে ঘুরে দাঁড় করাতে নতুন নীতি নিয়ে আসতে চলেছে চিন । শুধু নতুন নীতিই নয়, পুরোনো নীতিগুলিকেও পরিবর্তন করার কথা ভাবছে এই দেশ ।
চিনের একটি সংবাদপত্রের রিপোর্ট অনুযায়ী, বুধবার প্রিমিয়ার লি কেগিয়াংয়ের সভাপতিত্ত্বে স্টেট কাউন্সিলের কার্যনির্বাহী বৈঠক হয় । সেখানে আলোচনা হয়, চিন কর্মসংস্থান স্থিতিশীল রাখতে ও মানুষের জীবিকা নিশ্চিত করতে বেশ কিছু নতুন নীতি আনতে চলেছে । পাশাপাশি, পুরোনো নীতিগুলিকে উন্নত করতে চলেছে ।
সম্প্রতি কয়েক মাসে দেশজুড়ে সরকারি বিভাগগুলিতে পুনরায় উৎপাদনের কাজ ও ব্যবসায়িক উন্নতির জন্য কাজ শুরু করা হয়েছে । এই কাজগুলি চালিয়ে যাওয়ার জন্য যে শক্তিশালী ও লক্ষ্যযুক্ত নীতি গ্রহণ করা হয়েছিল, সেই বিষয়েও এই বৈঠকে আলোচনা করা হয় ।
এই নীতিমালার অন্তর্ভুক্ত ব্যবস্থাগুলি নিম্নরূপ -
- ক্ষুদ্র, ছোটো ও পারিবারিক ব্যবসার ক্ষেত্রে VAT-এ আরও ছাড় দেওয়া হবে ।
- পরিবহন, ক্যাটারিং ও পর্যটনের মতো কোরোনায় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ সেক্টরগুলির জন্য লোকসানের বহনকালীন মেয়াদ পাঁচ থেকে আট বছর পর্যন্ত বাড়ানো হবে ।
- পেনশনের জন্য কোম্পানির তরফে দেওয়া অর্থের 600 বিলিয়ন ইউয়ান (85.7 বিলিয়ন ডলার) হ্রাস বা মকুব করা হবে ।
- বছরের প্রথমার্ধে বেকারত্ব ও কর্মক্ষেত্রে সুরক্ষা প্রকল্পগুলি চালু করা হবে ।
- বেতন স্থিতিশীল রাখার জন্য বেকারত্ব বিমার প্রিমিয়ামগুলির রিফান্ডের উপর অবলম্বন করতে হবে । আগে এর থেকে 84 মিলিয়ন কর্মচারী উপকৃত হয়েছে ।
- বছরের প্রথমার্ধে সড়ক ও হাইওয়ের টোল থেকে এবং এন্টারপ্রাইজ়ের বিদ্যুৎ ও গ্যাসের হার 140 বিলিয়ন ইউয়ান থেকে কমিয়ে 67 বিলিয়ন ইউয়ান করা হয়েছে ।
- তহবিল থেকে প্রয়োজনীয় সংরক্ষণ কেটে 1.75 ট্রিলিয়ন ইউয়ান রিলিজ় করা হয়েছে ।
- পুনরায় বিশেষ ছাড়ের মাধ্যমে ব্যবসার জন্য বিশেষত ক্ষুদ্র, ছোটো ও মাঝারি আকারের সংস্থাগুলি ও গৃহনির্ভর ব্যবসার জন্য কম খরচে 2.85 ট্রিলিয়ন ইউয়ান ঋণ সরবরাহ করা হচ্ছে । রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বড় ব্যাঙ্কগুলিকে ক্ষুদ্র ও ছোটো ব্যবসায় ঋণ প্রদানের জন্য উৎসাহ দেওয়া, এবং পলিসি ব্যাঙ্কগুলির বিশেষ ঋণের কোটা বৃদ্ধি করা হচ্ছে ।
- 1.1 মিলিয়নেরও বেশি ক্ষুদ্র, ছোটো ও মাঝারি ব্যবসার জন্য এক ট্রিলিয়ন ইউয়ান সুদ দেওয়া হচ্ছে । এছাড়া, বসন্তকালীন চাষ ও পশুপালন বিকাশের জন্যও সমর্থন বাড়ানো হচ্ছে ।
জ়িনহুয়া সংবাদ সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী, বৈঠকেও সকলে উপরিউক্ত ব্যবস্থাগুলি নেওয়ার জন্য একমত হয়েছিল । উৎপাদন স্বাভাবিক ক্ষমতায় ফিরছে । ব্যবসায় তৈরি অসুবিধাগুলি হ্রাস হচ্ছে । জীবন ও কাজও স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসছে ।
এই বৈঠকে কর্মসংস্থান, মানুষের জীবিকা নির্বাহ, বাজারগুলিতে উন্নয়ন, খাদ্য ও জ্বালানীর সুরক্ষা, শিল্প ও সাপ্লাই চেইনের স্থিতিশীলতা এবং সম্প্রদায় স্তরে সুষ্ঠুভাবে কার্যক্রম এই ছয়টি বিষয়কে কার্যকরভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজনীয়তার কথাও তুলে ধরা হয় ।
ছয়টি মূল ক্ষেত্রের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার জন্য এই ডিজ়াইন করা হয়েছে । এর মধ্যে কর্মসংস্থান, অর্থ, বৈদেশিক বাণিজ্য, বৈদেশিক বিনিয়োগ, দেশীয় বিনিয়োগ, বাজার থেকে প্রত্যাশা ও অর্থনৈতিক দিককে বজায় রাখার প্রচেষ্টা করতে হবে ।