পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / international

ঝুঁকি জেনেও কোরোনা রোগীর শ্বাসনলের দায়িত্বে ফ্লোরিডার নার্স দম্পতি - বেন এবং মিন্দি

ফ্লোরিডার দুই নার্স । বেন কায়ার এবং মিন্দি ব্রক । স্বামী এবং স্ত্রী । দুজনের এখন একটিই লক্ষ্য । কোরোনা আক্রান্ত সার্জারি রোগীদের মধ্যে শ্বাসনল লাগানোর ভার বহন করছেন দুজনে । একের পর এক রোগী । তাঁদের অসম্ভব কষ্ট । এই অসময়ে রোগীদের পাশে তাঁদের কোনও প্রিয়জনের থাকা যাবে না । এই অসহনীয় অবস্থায় নার্সরাই একমাত্র সঙ্গী । পরম যত্নে ও মমতায় ওঁরা সেবা করে যাচ্ছেন অসহায় রোগীদের । তাঁদের বাঁচিয়ে রাখছে আশা আর ভালোবাসা ।

Nurse couple
বেন কায়ার এবং মিন্দি ব্রক

By

Published : Apr 18, 2020, 9:10 PM IST

ফ্লোরিডা, 18 এপ্রিল : একই বাড়িতে একসঙ্গে পাঁচ বছর আছেন দুজন । দুজনের একই পেশা । আর এখন কোরোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়েও ওঁরা একসঙ্গে কাজ করছেন । ফ্লোরিডার দুই নার্স । বেন কায়ার এবং মিন্দি ব্রক । স্বামী এবং স্ত্রী । দুজনের এখন একটিই লক্ষ্য । কোরোনা আক্রান্ত সার্জারি রোগীদের মধ্যে শ্বাসনল লাগানোর মতো মারাত্মক ঝুঁকির ভার বহন করছেন দুজনে । একের পর এক রোগী । তাঁদের অসম্ভব কষ্ট । এই অসময়ে রোগীদের পাশে তাঁদের কোনও প্রিয়জনের থাকা যাবে না । এই অসহনীয় অবস্থায় নার্সরাই একমাত্র সঙ্গী । পরম যত্নে ও মমতায় ওঁরা সেবা করে যাচ্ছেন অসহায় রোগীদের । তাঁদের বাঁচিয়ে রাখছে আশা আর ভালোবাসা ।

কর্মব্যস্ত সকাল । বেন এবং মিন্দি প্রতিরক্ষামূলক গিয়ার এবং লক করা চোখ দিয়েই যেন একে অপরের দিকে তাকিয়ে আছেন নিশ্চুপে । অপলক । প্রতিরক্ষামূলক গিয়ার ভেদ করে তাঁদের শব্দ একে অপরের কাছে পৌঁছাবে না । কিন্তু কোরোনার বিরুদ্ধে লড়াই করার কঠিন সময়েও তাঁদের পরস্পরের ভালোবাসার স্পর্শ রয়ে গিয়েছে অবিচ্ছিন্ন ।

30 মার্চ, 2020 । এক কঠিন কর্মব্যস্ত সকালেও দুজনের ভালোবাসার প্রকাশভঙ্গিমার ছবি প্রধান নার্স নিকোলে হাবার্ড ক্যামেরাবন্দী করেন । পরে সোশাল মিড়িয়ায় এই ছবি প্রকাশ হতেই তা ভাইরাল হয়ে যায় । একজন নার্স বলেন, সবাই এই ছবি নিয়ে আলোচনা করেছে । কারণ এই ছবি বেঁচে থাকার আশা ও ভালোবাসার ছবি ।

বেন কায়ার বলেন, "প্রত্যেকে ছবিটির বিষয়ে কথা বলছে।কারণ আমরা এই মুহুর্তে একই জিনিসের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি ৷ এই ছবিটি আমাদের সকলের আশা ও ভালবাসার প্রতীক।"

মিন্দি ব্রুক বলেন, “ একসঙ্গে থাকি ৷ পাশে থাকি ৷ আমরা সর্বদা একে অপরকে সমর্থন করি। শুধু বেন এবং আমি নয়, এখন গোটা মানব জাতি পরস্পরকে সাহায্য করছে।"

এই দম্পতি টম্পা জেনারেল হাসপাতালের নতুন এয়ারওয়ে দলের হয়ে স্বেচ্ছাসেবী হয়ে কাজ করার বিষয়ে দু'বার ভাবেনি।রোগীর মুখে এবং তাঁদের শ্বাসনালীতে নল স্থাপনের জন্য রোগীর খুব কাছে আসতে হয় । এর ফলে ভাইরাসটি নার্সদের প্রতিরক্ষামূলক গিয়ারের উপরেও ছড়িয়ে পড়ে । ফলে নার্সদের সংক্রমণের সম্ভাবনা থাকে । কিন্তু স্বাস্থ্য কর্মী তো ! ভয় পেলে চলে ?


2007 সালে পড়াশোনোা করার সময় আলাপ। সেখান থেকেই দুজনের ভালোবাসার পথচলাশুরু হয়েছিল। তাঁরা পাঁচ বছর আগে বিয়ে করেছেন এবং এখন টিমহেলথ নামে একটি মেডিকেল স্টাফিং ফার্মে কাজ করেন। এই কাজে যোগ দেওয়ার আগে হাসপাতালে আসার পথে কাজ থেকে ছুটির পর তাঁরা গাড়ির রেডিওতে কী শুনবেন এবং কে ঘরে গিয়ে খাবার তৈরি করবেন তা নিয়ে তর্ক হয় মাঝে মাঝে ।

COVID-19 প্রতিরোধে নতুন দলে যোগ দেওয়ার দিন চিন্তায় ছিলেন । মিন্দি বলেন "আমরা তর্ক করছিলাম" । পরে তাঁরা সার্জারি রুমের মধ্যে একে অপরকে দেখতে পেলেন। সমস্ত চিন্তা চলে গেল। একসঙ্গে কাজ করবেন, এই ভাবনাটাই বাকি সব দূরে ঠেলে দিল । "

তিনি বলেছেন যে তাঁরা নিজেরা কোরোনায় আক্রান্ত হওয়া নিয়ে খুব চিন্তা করেননি । যদিও ভাইরাসটি খুব কাছেই হয়তো আছে।মিন্দি বলেন, ব্রুকের মা এই রোগ থেকে সেরে উঠেছেন। এই রোগে আক্রান্ত রোগীরা একা অনুভব করেন ৷ কারণ বাড়ির কাউকে দেখা করতে দেওয়া হয় না ।

ব্রুক বলেন, "আমরা রোগীদের সঙ্গে আন্তরিকভাবে মেশার চেষ্টা করি । কারণ তাঁদের পরিবারের কেউ তাঁদের সঙ্গে থাকতে পারেন না।"

ABOUT THE AUTHOR

...view details