কলকাতা, 23 অগস্ট:জংলাহাটার মেয়ে মাধবীলতার জঙ্গল বাঁচানোর লড়াই নিয়ে শুরু হল নতুন ধারাবাহিক 'মাধবীলতা'। এই স্লটেই এতদিন দর্শক ভালোবেসে এসেছে 'মন ফাগুন'কে । ঋষি-পিহুর জুটিকে এত তাড়াতাড়ি ছেড়ে দিতে চায়নি দর্শক । তার প্রমাণ মিলেছে নেটপাড়ায় । আরও কিছুদিন এই জুটিকে আঁকড়ে ধরে সময় কাটাতে চেয়েছিল দর্শক ( Serial Mon Phagun)। কিন্তু সেই চাওয়াকে প্রাধান্য না দিয়ে হঠাতই শেষ হয়ে গেল এই ধারাবাহিক । সব অঙ্ক না মিলিয়ে অসম্পূর্ণতাতেই শেষ হল 'মন ফাগুন', দাবি দর্শকের (Netizens on Serial Mon Phagun) ।
গল্পের দিকে তাকালে দেখা যায়, ঋষিকে কদিন আগে গল্পের সাম্প্রতিক ভিলেন রোহন সুর ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে তার শরীরে বিষ খাইয়ে জলে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয় । ঋষি ভাসতে ভাসতে চলে যায় রেশম দীঘিতে । সেখানে হুবহু তার মতো দেখতে রোমিও পরিবারেরই একজনের ষড়যন্ত্রের শিকার । সেও নিখোঁজ । এরপর রোমিওর বাবার অনুরোধে ঋষি সেই গ্রামে থেকে যায় । রোমিওর মাও ছেলেকে পেয়ে স্বাভাবিক হয় ।
রোমিওকে ফিরে পেয়ে তার বাল্যবন্ধু তথা হবু বউ নেত্রাও খুশি । রোমিও-নেত্রার বিয়ের দিনই পিহুর সঙ্গে রোহনের বিয়ে দিচ্ছে সেন পরিবার । বিয়ে আটকাতে সেন বাড়িতে পৌঁছয় ঋষি । রোহনের আসল চেহারা তার কাছে স্পষ্ট । কিন্তু তা সর্বসমক্ষে তুলে ধরার জন্য সে ধরা দেয় না । নেত্রার সঙ্গেই সে রেশম দীঘির দিকে রওনা দেয় । এরই মাঝে কাকাইয়ের ফোনে সে জানতে পারে রোহন মণিকার ছেলে । এরপরের ঘটনা দর্শক জানে ।
রুশা বলে, "যে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে আমাকে আর পিহুকে বাঁচায় সে আমার ভাইয়ের থেকে কম কেউ নয়।" আর শেষ পর্বে পিহুকে ঋষি বলে, "আমি রোমিও নাকি ঋষি সেটা এই সিজনে সাসপেন্সই থাক ।" তা হলে কি এই ধারাবাহিকের সেকেন্ড পার্ট আসবে? এই ব্যাপারে প্রযোজক স্নিগ্ধা বসুর(Producer Snigdha Basu on Serial Mon Phagun) সঙ্গে কথা বলা হলে তিনি সহাস্যে বলেন, "দেখা যাক পরে আসে কিনা আবার ঋষি-পিহু? এই মুহূর্তে কোনও পরিকল্পনা নেই। দর্শক ওদের যে পরিমাণে ভালোবেসেছে তা নতুন করে বলার দরকার পড়ে না ।"
তা হলে কেন এত তাড়াতাড়ি শেষ করে দেওয়া এই ধারাবাহিক? প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, "আমাদের শুরুর দিন থেকেই পরিকল্পনা ছিল 365 এপিসোড অবধি আমরা গল্প চালাব। ধারাবাহিক শেষ হল 386 পর্বে। আমি পারতাম টাকার জন্য আরও তিন মাস অন্য স্লটে চালাতে প্রজেক্টটা । কিন্তু আমি চেয়েছি সম্মানের সঙ্গে একই স্লটে থাকাকালীন শেষ হোক ঋষি-পিহুর জার্নি । বহু সপ্তাহে বেঙ্গল টপার হয়েছে এই ধারাবাহিক। "
সব অঙ্ক না মিলিয়ে অসম্পূর্ণতাতেই শেষ হল 'মন ফাগুন', দাবি দর্শকের তিনি আরও বলেন, "আমার মাথায় আসে না চারটে চ্যানেলে কীভাবে তিনটে আলাদা আলাদা রেটিং বেরোয় । প্রত্যেকটা চ্যানেল যে যার ধারাবাহিককে এক নম্বরে রাখে । কেউ সেই রেটিং নিজের হাউজেই রেখে দেয় । কেউ বিলি করে । সেই বিলি হওয়া রেটিং পৌঁছয় মিডিয়ার কাছে । এরপর তা দিয়ে চলে লেখালিখি । এরা জানেই না রেটিং-এর আসল বিষয়টা । দর্শকও কনফিউজড হয়ে যাচ্ছে এর ফলে । কোন প্যারামিটারে দাঁড়িয়ে আমরা কাজ করছি বুঝতে পারছি না । তাই মন ফাগুনের মতো এরকম একটা হিট ধারাবাহিককে আমরা সম্মানের সঙ্গে শেষ করে দিলাম । টি আর পি'র হ্রাস-বৃদ্ধির চক্কর থেকে মুক্তি দিলাম । ধারাবাহিকটা পরপর বেঙ্গল টপার হয়েছে, দর্শকের ভোটের ভিত্তিতে চারটে ক্যাটাগরিতে জনপ্রিয়তার পুরস্কার পেয়েছে, যা চ্যানেলের তেরো বছরের ইতিহাসে প্রথম । দর্শকের প্রিয় ধারাবাহিক মন ফাগুনকে অনেক লড়াই করতে হয়েছে । মন ফাগুনের পাশে গাঁটছড়া, মিঠাই কেউ দাঁড়াতে পারবে না । অল বেঙ্গল প্লাস টু-তে 11-12 রেটিং দিয়েছে এই ধারাবাহিক । সেই ধারাবাহিককে আর অন্য স্লটে নিয়ে প্রতিযোগিতায় নামাতে আপত্তি আছে আমার (Snigdha Basu on Mon Phagun)।"
আরও পড়ুন:আমিরের লাল সিং চড্ডার বিরুদ্ধে জনস্বার্থ মামলা কলকাতা হাইকোর্টে
এই প্রসঙ্গে তিনি আরও জানান, অন্য এক বড় চ্যানেলের রেটিং শুরুই হয় 6-7 পয়েন্ট থেকে। সেখানে মন ফাগুনের চ্যানেলের রেটিং শুরু হয় 10-11 পয়েন্ট থেকে । তা হলে কীভাবে 'মিঠাই' আমাদের 'গাঁটছড়া', 'মন ফাগুন'-কে হারিয়ে দেয় বিষয়টা তিনি বুঝতে পারেন না । শুধু তাঁর ধারাবাহিক নয়, অন্যান্য প্রযোজনা সংস্থার ধারাবাহিকও দর্শকের মন ভেঙে হঠাত করে বন্ধ হয়ে যায় এই টিআরপি রেটিং-এর চক্করে । এই অঙ্কটা তাঁর মাথায় আসে না ।