কলকাতা, 5 জানুয়ারি: শুক্রবার 'জাতীয় চিত্রনাট্যকার দিবস' । ফিল্ম, ধারাবাহিক, বিজ্ঞাপনের চিত্রনাট্য যাঁদের কলমে কথা হয়ে ওঠে তাঁরাই চিত্রনাট্যকার । তাঁদের জন্যও বারো মাসের ক্যালেন্ডারে বরাদ্দ রয়েছে একটি দিন, 5 জানুয়ারি । এই দিনটিই খাতায় কলমে 'জাতীয় চিত্রনাট্যকার দিবস' হিসেবে পালন করা হয় । দিনটি প্রথম পালন করা হয় 2016 সালে । 'স্ক্রিন রাইটার্স ইউ ডট কম'-এর উদ্যোগে এই দিনটি বরাদ্দ হয়েছে ইংরেজি ক্যালেন্ডারে ।
চিত্রনাট্যকার হওয়া খুব সহজ কাজ নয় । তাঁকে মাথায় রাখতে হয় অনেককিছু । গল্প অনুযায়ী চিত্রনাট্য বাঁধা না হলে তা সমালোচিত হয় । জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত পরিচালক তথা চিত্রনাট্যকার প্রভাত রায় বলেন, "চিত্রনাট্য লেখার সময়ে খেয়াল রাখতে হবে, বক্তব্য যেন ক্ষুণ্ণ না হয় । দর্শক যাতে তা বুঝতে পারেন । পাশাপাশি গল্পের গতি যেন স্লো না হয়ে যায় । স্ক্রিপ্টটাকে টাইট করতে হয় সবসময় । অহেতুক কথা দিয়ে স্ক্রিপ্ট বড় করার কোনও মানেই হয় না ।"
তিনি আরও বলেন, "একটা সত্যি কথা হল, চিত্রনাট্য ভালো হলে ছবির অন্য খুঁতও ঢাকা পড়ে যায় ।" প্রভাত রায় আরও বলেন, "বায়োপিক কিংবা সাহিত্যের চিত্রনাট্য লিখতে গেলে অনেক বেশি রিসার্চ করতে হয় । বিশেষ করে যেখানে সাল, তারিখের বিষয় থাকে । আসল কথা, সাহিত্যিকের ভাবটা যেন ঠিকভাবে ফোটে ।"
পরিচালক তথা চিত্রনাট্যকার এবং অভিনেত্রী সুদেষ্ণা রায়ের মতে, "ভালো লিখতে পারলেই ভালো চিত্রনাট্যকার হওয়া যায় না । তা হলে সব সাহিত্যিকই ভালো চিত্রনাট্যকার হয়ে যেতেন । একজন ভালো চিত্রনাট্যকার হতে গেলে প্রথমেই তাঁকে গল্পটা ঠিকমতো বুঝতে হবে । কনসেপ্ট ক্লিয়ার থাকতে হবে নিজের কাছে । চিত্রনাট্য আর সংলাপ এক জিনিস নয় । প্রত্যেকটা সিন কীভাবে যাবে, কী দেখানো হবে এই সব থাকে চিত্রনাট্যে ।"
তিনি আরও বলেন, "সিনেমা আর ধারাবাহিকের চিত্রনাট্যের ধাঁচ আলাদা । একইভাবে সব চিত্রনাট্যকারের কাজের ধরনও আলাদা । অনেক পরিচালক নিজেরাই চিত্রনাট্য লেখেন । তাঁরা তাঁদের মতো করে বিষয়টা গুছিয়ে নেন । যেমন, মৃণালদা (সেন) চিত্রনাট্য সে রকম লিখতেনই না । বুঝিয়ে দিয়ে বলতেন, এভাবে সিন যাবে । এ বার তোমরা কী বলবে বলো । সত্যজিৎ রায় আবার পুরো বিষয়টা লিখে রাখতেন । ঋতুপর্ণ ঘোষও সিন ধরে ধরে চিত্রনাট্য লিখতেন । ভালো চিত্রনাট্যকার হতে গেলে সিনেমাটা বুঝতে হবে সর্বোপরি ।"