কলকাতা, 12 জানুয়ারি: দুর্গাপুজোর প্রেক্ষাপটে 'বিজয়ার পরে' বানিয়েছেন পরিচালক অভিজিৎ শ্রী দাস। শুক্রবার প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রশংসিত 'বিজয়ার পরে' ৷ দুর্গাপুজোয় এক বৃদ্ধ দম্পতির ছেলে-মেয়েদের বাড়ি ফেরা না ফেরা, সন্তানকে কাছে পাওয়া না পাওয়ার ছবি 'বিজয়ার পরে'। স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়কে এই ছবিতে বৃদ্ধ দম্পতি অলকানন্দা ও আনন্দের মেয়ে মৃণ্ময়ীর চরিত্রে দেখা গিয়েছে।
তিনি কী বাস্তবে কখনও শারদোৎসবের সময়ে থেকেছেন বাবা-মাকে ছেড়ে ? প্রশ্নের উত্তরে স্বস্তিকা ইটিভি ভারতকে বলেন, "আমি পুজোর সময়ে কলকাতা ছেড়ে থাকিনি কখনও । একবার মনে আছে, কোনও একটা কাজের জন্য আমি রাউরকেল্লাতে শুট করছিলাম, আমার কেরিয়ারের শুরুর দিকে । খুব মন খারাপ লাগছিল যে, পুজোর সময়ে শুট করছিলাম । বাবা বাড়িতে রয়েছেন । এরপর পরিচালককে হাতে পায়ে ধরে দু'দিনের ছুটি নিয়ে আমি রাউরকেল্লা থেকে কলকাতায় এসেছিলাম অষ্টমীর দিন ।"
অভিনেত্রী আরও বলেন, "ট্রেনের রিজার্ভেশন পাইনি বলে আমি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে এসেছিলাম । টয়লেট আর দরজার মাঝখানের যে জায়গাটা সেখানে হাতে একটা লাগেজ নিয়ে দাঁড়িয়ে এসেছি । এরপর দশমীর দিন রাতে একা একা ট্রেনে রাউরকেল্লা ফিরে যাই ৷ কারণ একাদশী থেকে শুটিং ছিল । তাও আমি পুজোর তিনটে দিন বাড়িতেই থেকেছি । বাবাকে কখনও পুজোয় একা থাকতে দিতাম না । এমনি সময়েও বাইরে শুটিং থাকলে সেটা সেরে পরদিনই চলে আসতাম বাবার জন্য । আজ আর বাবা নেই । মেয়েও বাইরে থাকে, তাই বাড়ি ফেরার তাড়াও নেই ।..."
এই প্রসঙ্গে স্বস্তিকা বলেন, "একটা হিন্দি ছবির কাজও আমি ছেড়ে দিয়েছি এই বছর । কারণ পুজোর শুটিংটা ষষ্টী থেকে দশমী পর্যন্ত ছিল । মা বেঁচে থাকতে ঘটে দুর্গাপুজো করতেন । সেটা আমি যতদিন পারব করে যাব । আরও নানা পুজো হত আমাদের বাড়িতে, সেগুলো বন্ধ হয়ে গিয়েছে । কারণ আমি সেই পুজোটার সময়ে কলকাতায় থাকব কি থাকব না সেটা জানি না । বাড়িতে যাঁরা কাজ করেন, তাঁরাই যদি পুজোর দায়িত্ব সামলান সেটার তো মানে হয় না কোনও ।"
উল্লেখ্য, 'বিজয়ার পরে'র গল্পে উঠে এসেছে প্রবীণ দম্পতি অলকানন্দা ও আনন্দের পরিবারের কথা ৷ বাবা-মাকে ছেড়ে ছেলেমেয়েরা দূরে থাকে কাজের সূত্রে । বৃদ্ধ-বৃদ্ধা বাড়িতে একাই থাকেন। অপেক্ষায় থাকেন, কবে আবার ছেলেমেয়েরা আসবে আর বাড়িটা গমগম করে উঠবে । বাড়ির মেয়ে মৃণ্ময়ী । বাবা তাঁকে ত্যাজ্য কন্যা করেছেন । তবে, পুজোর সময়ে সব ছেলেমেয়েকেই বাড়িতে ডাকেন আনন্দ । কিন্তু সন্তানদের সময় হয় না আসার । তারা আসে বিজয়ার পরে । তাঁদের আসতে কি বড্ড দেরি হয়ে যায় ? এখানেই ছবির ক্লাইম্যাক্স ।