কলকাতা, 1 জুন : মঙ্গলবারের বিকেল, কৃষ্ণকুমার কুন্নাথকে ঘিরে কলকাতাবাসীর উন্মাদনা তখন চরমে। দক্ষিণ কলকাতার নজরুল মঞ্চে এদিন তিল ধারণের জায়গা ছিল না। কারণ নবীন প্রজন্মের হার্টথ্রব কে কে যে হাজির মঞ্চে। আর তারপর....
দক্ষিণ কলকাতার নজরুল মঞ্চে এদিন যেন আলোর প্রদর্শনী ৷ লাল, নীল, হলুদ, সবুজের ঝলকানিতে চোখ ধাঁধিয়ে যাওয়ার জোগাড়। গান গাইছেন আজকের প্রজন্মের সঙ্গীত প্রেমীদের হার্টথ্রব কে কে। কিন্তু কে জানত গান গাইতে গাইতেই এদিন না ফেরার দেশে পাড়ি দেবেন তিনি !
গুরুসদয় মহাবিদ্যালয়ের কলেজ ফেস্ট 'উৎকর্ষ 2022'-এ গান গাইতে এসেছিলেন শিল্পী । মঙ্গলবার মঞ্চে গান গাইতে গাইতেই অসুস্থ হন শিল্পী । বারবার নিজের শারীরিক অস্বস্তির কথা বলছিলেন । এরপর স্টেজ থেকে নেমে সোজা হোটেলে চলে যান । শারীরিক অসুস্থতা বাড়লে এরপর তাঁকে এক নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হলে ডাক্তাররা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন ।
তিলধারণের জায়গা ছিল না মঞ্চে দিনকয়েক আগে নিজের সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে একটি ভিডিয়োর মাধ্যমে তিনি কলকাতায় গান গাইতে আসার খবর দেন কে কে । আসলেন, দেখলেন, মন জয় করলেন । এর পরেরটা মেনে নিতে নারাজ তাঁর অনুরাগীরা । তাঁর কণ্ঠের "হাম রহে ইয়া না রহে কাল, পল..." গানটি যেন আজ কানে বিঁধছে কাঁটার মতো । নবীন প্রজন্মকে এই গানে ভাসিয়ে দিয়েছিলেন কে কে। তাঁর জনপ্রিয় সব গানের তালিকায় আছে - হাম দিল দে চুকে সনম, তুনে মারি এন্ট্রিয়াঁ, আঁখো মে তেরি আজব সি আজব সি আদায়ে হ্যায়, খুদা জানে কে, তড়প তড়প সে দিলসে, তুহি মেরি সব হ্যায়- এর মতো একাধিক হৃদয়হরণকারী গান। বাংলা, হিন্দি, তামিল, কন্নড়, মালয়ালাম, মরাঠি, অসমীয়া ভাষায় বহু গান গেয়েছেন কে কে ।
খুব ভুল না হলে '99 থেকে উত্থান শুরু কে কে'র। একের পর এক রোম্যান্টিক হিট গান উপহার দিয়েছেন তিনি । মাত্র 54 বছর বয়সে এই কণ্ঠ থেমে যাবে তা কে জানত ? তবে, সংস্কৃতিজগতের বড় ক্ষতি হয়ে গেল তা বলার অপেক্ষা রাখে না ৷ নিয়তির নির্মম খেলা আটকাবে কার সাধ্যি ? কে কে'র গাওয়া "হাম রহে ইয়া না রহে কাল" গানটা যে সত্যিই কতটা বাস্তবসম্মত তা প্রমাণ হল আজ আরও একবার ।