কলকাতা, 23 অগস্ট:কলকাতায় গান গাইতে এসে অনুষ্ঠান চলাকালীন অসুস্থ হয়ে অকালমৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী কেকে । কলকাতার দু'টি কলেজের অনুষ্ঠানে গান গাইতে এসেছিলেন তিনি । অডিটোরিয়ামের ভিতরে চরম অব্যবস্থা, জনসমাগমে দমবদ্ধকর পরিস্থিতিতে অসুস্থ হয়ে পড়েন শিল্পী । মঞ্চ পর্যন্ত পৌঁছে যেতে দেখা গিয়েছিল শ্রোতাদেরও । যেটা কোনওভাবেই কোনও মঞ্চ অনুষ্ঠানের সঠিক চিত্র নয় । গান গাইতে-গাইতে দরদর করে ঘামছিলেন শিল্পী । কাজ করছিল না শীততাপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্রটিও । চূড়ান্ত অসুস্থতা বোধ করা সত্ত্বেও পেশাদারিত্বের কারণে গান থামাননি গায়ক । এরপর অসুস্থতা বাড়ে এবং বাকিটা সকলেরই জানা ৷
মৃত্যুর পর কেকে'র আজ প্রথম জন্মদিবস (Birth Anniversary of KK )। বাংলায় আজ তাঁকে ঘিরে নানা অনুষ্ঠানের খবর পৌঁছে গিয়েছে সংবাদমাধ্যমের কাছে । যেমন বাগবাজারের ফণীভূষণ মঞ্চে গানে গানে তাঁকে স্মরণ করে নেবেন শিল্পী সুমন কল্যাণ । এরকম রয়েছে আরও কয়েকটি অনুষ্ঠানের আয়োজন ।কেকে'র মৃত্যু নিয়ে উদ্যোক্তাদের গাফিলতির প্রশ্ন ঘুরে ফিরে এসেছে বারবার । আড়াই হাজার শ্রোতার বসে অনুষ্ঠান শোনার মতো ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও প্রায় সাত হাজার মানুষ ঢুকে পড়েছিল অডিটোরিয়ামে । ফলে যা হওয়ার তার থেকেও বেশি কিছু ঘটে গেছে কলকাতার বুকে । এই ঘটনার পর কলকাতায় এসে গান গাইতে চাননি সঙ্গীত শিল্পী জুবিন । শহরবাসীর কাছে এ বড় লজ্জার, বড় অপমানের ।
এতকিছুর পর উদ্যোক্তারা কতটা সতর্ক হলেন তার সরেজমিনে খোঁজ নিল ইটিভি ভারত । ক্যাকটাসের 30 বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে আগামী 27 অগস্ট এক বর্ণময় অনুষ্ঠান মঞ্চস্থ হতে চলেছে নজরুল মঞ্চে । সিধু বলেন, "নজরুল মঞ্চ কর্তৃপক্ষ, কেএমডিএ, পুলিশ কর্তৃপক্ষের মধ্যে বেশিই সাবধানতা কাজ করছে দেখতে পাচ্ছি। নজরুল মঞ্চের তরফে আমাদের প্রথমেই বলা হয়েছে আড়াই হাজার লোকের ক্যাপাসিটি থাকলেও দু'হাজারের বেশি লোককে ঢুকতে দেওয়া হবে না । পুলিশও বেশ সতর্ক । ফায়ার পারমিশন, অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা সবকিছু নিয়েই বেশ তৎপর পুলিশ-প্রশাসন । আমরাও সবরকমের সাবধানতা, নিয়ম-বিধি মেনেই অনুষ্ঠান মঞ্চস্থ করার ব্যাপারে সতর্ক আছি (Sidhu on The Organizers)।"
এ ব্যাপারে সঙ্গীতশিল্পী উজ্জয়িনী মুখোপাধ্যায়ের (Ujjaini Mukherjee on The Organizers) সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, "সত্যি কথা বলতে কী কেকে'র মৃত্যুর পর থেকে এখনও অবধি কোনও অডিটোরিয়ামে আমার অনুষ্ঠান করা হয়নি । 27 তারিখে করব । তাই তারপরে বলতে পারব কীরকম কী দেখলাম ।"
সঙ্গীতানুষ্ঠান আয়োজক সুদীপ্ত চন্দ বলেন, "কেকে'র ঘটনা ব্যতিক্রমী । নিয়তিকে অস্বীকার করার উপায় নেই । কেকে'র ঘটনার আগেও অডিটোরিয়ামে ওভার ক্রাউডেড হয়নি তা নয় । কিংবা আগামীতেও হবে না সেই গ্যারান্টিও কেউ দিতে পারে না । হাজার লোকের ক্যাপাসিটিতে 1200 লোক অনায়াসে ঢোকে । সমস্যা হয় না । তাঁরা মাটিতে বসেই অনুষ্ঠান উপভোগ করেন । তবে, সেদিন সিটিং ক্যাপাসিটির দ্বিগুণের বেশি মানুষ ঢুকে পড়েছিল অডিটোরিয়ামে । এটা কাম্য ছিল না । আগামীতেও কাম্য নয় । তবে, শুধু ওভার ক্রাউডের জন্যই কেকে'র মৃত্যু হয়েছে তেমনটা নয় । শিল্পী আগে থেকেই অসুস্থ ছিলেন । কেকে, এ আর রহমান, অরিজিৎ সিং যে ধরনের আলোয় গান গাইতে অভ্যস্ত তাতে তাঁদের সমস্যা হয় না । গায়ক আগে থেকে অসুস্থ থাকার কারণে এই সব অনুষঙ্গ তাঁর জন্য ক্ষতিকারক হয়ে দাঁড়িয়েছিল ।"