রানাঘাট, 16 জানুয়ারি: কল্যাণীতে অনুষ্ঠানের পর রানাঘাটে রবিবার কনসার্টে অবশেষে বিতর্ক নিয়ে মুখ খুললেন গান 'রকস্টার' রূপম ইসলাম ৷ অনুরাগীর উদ্দেশ্যে মেজাজ হারিয়ে খারাপ শব্দ ব্যবহারের নেপথ্যের কারণ তুলে ধরলেন অগণিত ভক্তদের কাছেই ৷ স্টেজে উঠে মাইক হাতে নিজের অভব্য ব্যবহারের কারণ ব্যাখ্যা করলেন রকস্টারের স্টাইলেই ৷
রাণাঘাটের মঞ্চে উঠে অগণিত শ্রোতার উদ্দেশ্যে রূপম ইসলাম বলেন, "তোমাদের তো গান শোনা দরকার। গান শুনতে টিকিট কেটেছ। গান শোনার সঙ্গে ছবি তোলা ফাউল। সেই ছবি যাবে ফ্রেমে আর ফেসবুকে। গান গাওয়ার পর আমার বুকে কী চলছে তা দেখা যাবে না। সেটা দেখতে হলে এক্স-রে করতে হবে। তার থেকে সহজ মুখের ছবিই তোলো। বন্ধু গো আর বলিতে পারি না বড় বিষ জ্বালা এই বুকে। দেখিয়া শুনিয়া খেপিয়া গিয়াছি, তাই যাহা আসে কই মুখে..."
তিনি আরও বলেন, "স্টেজ থেকে নামার পর কুড়িটা মিনিট আমাকে দিতে হবে। এই স্টেজে আমার বুক থেকে যে নিঃশ্বাসটা বেরিয়ে গিয়েছে সেটা ফিরিয়ে আনতে হবে। ছবি তোলাটা ফাইনাল। তবে, ওই কুড়ি মিনিটটাও আমার। পঞ্চাশ বছর বয়স হয়ে গেছে তো, এটুকু আমি চাইতে পারি। আমি জানি অনেক বরেণ্য শিল্পীরা আমার মতো স্টেজে উঠে লাফান না বাঁদরের মতো। আমাকে হনুমান বল বা বাঁদর বল, আমি লাফাব। লাফানিটা থাকবে। কেন লাফাব সেটা জানার দায় কারোর না। ছবি তোলাটা চাই। ছবি তুলব। কিন্তু ওই কুড়ি মিনিটটা আমার, আর ওই ভাষাটাও আমার। ওই কুড়ি মিনিট ধারে কাছে আসলে যে ভাষা বেরোবে সেটা 'বাইসাইকেল চোর'-এর ভাষা হয়ে যাবে, 'নেমেসিস'-এর ভাষা হয়ে যাবে, 'বিপ্লব'-এর ভাষা হয়ে যাবে। ওই কুড়ি মিনিট আমি নেব কারণ যে নিঃশ্বাসটা মঞ্চে ফেলে গিয়েছি সেটা সঞ্চয় করব আবার। যাতে ভ্যানিটি ভ্যান থেকে নেমে হাসিমুখে পোজ দিতে পারি।"
কলকাতা থেকে শহরতলি হয়ে গ্রামেগঞ্জে একের পর এক কনসার্ট করে চলেছেন রকস্টার রূপম ইসলাম। উত্তাল জনসমুদ্রে তিনি একা নাবিক যেন। টানা দু'ঘণ্টা বাংলা রক গাওয়ার পর দরকার পড়ে একটু বিশ্রামের। সেটাই চেয়েছিলেন রূপম। কিন্তু অনুরাগীরা তা মানতে নারাজ। তাদের দরকার সেলফি। রকস্টারের সঙ্গে ছবি বাঁধাতে হবে ফ্রেমে, পোস্ট করতে হবে ফেসবুক, ইনস্টায়। স্টেজ থেকে নেমেই সেই আবদার রাখতে সক্ষম হননি শিল্পী। মেজাজ হারান এবং গালমন্দ করে ফেলেন অনুরাগীদের। ব্যস, তারপরেই তিনি ট্রলড হন। সমালোচনা শুরু হয় সামাজিক মাধ্যমে। সেই নিন্দার স্টেজে দাঁড়িয়ে সেই অনুরাগীদের সামনেই দিলেন যোগ্য জবাব ৷