কলকাতা, 10 জুলাই:অভিনেতা হিসাবে তাঁর সঙ্গে কাজ করতে ভালো লাগে ৷ আবার তাঁকে নাকি ঈর্ষাও করেন ৷ ঠিক এভাবেই ঋত্বিক চক্রবর্তীকে ব্যাখ্যা করেছিলেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় । ঋত্বিকের ঝুলিতে রয়েছে 'লে ছক্কা', 'চলো লেটস গো', 'ফড়িং'-এর মতো সিনেমা আবার তেমনই তিনি মন কেড়েছেন 'শব্দ', 'ভীতু', 'বাকিটা ব্যক্তিগত', 'জ্যেষ্ঠপুত্র', ‘মাছের ঝোল’-এর মতো ছবিতেও ।
কীভাবে একটা চরিত্র থেকে আরেকটা চরিত্রে নিজেকে বদলান ? কোনও চরিত্র কি তাঁর মধ্যে রেখে যায় দীর্ঘ প্রভাব ? একসময় তিনি গোয়েন্দার সহকারী হিসাবে কাজ করেছেন আজ তিনি নিজেই গোয়েন্দা । সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে তাঁর 'গোরা 2' সিরিজটি, কেমন লাগছে এই সিরিজ নিয়ে এত ভালোবাসা পেয়ে ? এই সব নিয়ে আড্ডা দিলেন ঋত্বিক চক্রবর্তী ।
প্রশ্ন:একসময় আপনাকে আমরা পেয়েছি অজিত হিসেবে। এবার আপনি কাজ করলেন গোয়েন্দা হিসেবে । এই গোয়ান্দা আমাদের চেনা গোয়েন্দাদের থেকে কিছুটা আলাদা, কেমন লেগেছিল প্রথমবার চরিত্রটা শুনে?
উত্তর:চরিত্রটা খুবই ইন্টারেস্টিং ৷ বেশ খানিকটা অন্যরকম ৷ আর আমাদের গোয়েন্দা সম্পর্কিত ধারণার ঠিক উলটো দিকে দাঁড়িয়ে থাকা একটা চরিত্র । আমাদের চেনা গোয়েন্দারা সাধারণত অধিকাংশই ভীষণ পারফেক্ট হয়ে থাকেন । আর গোরা এমন মানুষ যিনি একেবারেই পারফেক্ট নয় । তারপর গল্পটা যেভাবে গড়ায় তাতে একটা মজাও থাকে ৷ গোয়েন্দাসুলভ গুণ নেই গোরার । বরং এমন কিছু ব্যাপার আছে যা থাকলে গোয়েন্দাদের মুশকিল । ঠিক যেমন তার ভুলে যাওয়ার স্বভাব । সব মিলিয়ে চরিত্রটা খুবই আলাদা ।
প্রশ্ন: এমন একটা চরিত্রের জন্য প্রস্তুতিটা কতটা আলাদা ছিল?
উত্তর: আসলে একটা চরিত্রই ঠিক করে ঠিক করে দেয় চরিত্রের জন্য প্রস্তুতি কতটা নিতে হবে । সেটা গোয়েন্দা হতে পারে ৷ আবার নাও হতে পারে । চরিত্র নিজেই ঠিক করে দেয় প্রস্তুতি কেমন হবে । গোরার ক্ষেত্রে তার নানা চারিত্রিক বৈশিষ্ট আছে । তাকে বাইরে থেকে দেখে একেবারেই মনে হয় না সে এত বুদ্ধিমাণ একজন মানুষ । চরিত্রটা যেভাবে ভাবা হয়েছে তাতে কলেজের বন্ধুর সঙ্গে গোরার সম্পর্কটা খু আছে । ওপর থেকে দেখে মনে হয় বন্ধুকে সে খালি অপমান করে কিন্তু ভিতরে তাদের একটা দারুণ সম্পর্ক আছে । এই সমস্ত নিয়ে সচতেন থাকাটাই ছিল প্রস্তুতি ।
প্রশ্ন: বাংলায় গোয়েন্দার অভাব নেই । তাই তাদের থেকে গোরাকে আলাদা করার চাপ কতটা ছিল?
উত্তর: চাপ একেবারেই ছিল না । সাহানাদি এমনভাবে লেখাটা লিখেছিলেন যে চরিত্রটা আমাদের চেনা গোয়েন্দাদের থেকে এমনিতেই আলাদা । আমাদের এখানে গোয়েন্দাদের গাম্ভীর্য থাকে। একেনবাবু হয়তো একটু আলাদা। আমার ক্ষেত্রে চিত্রনাট্যের মধ্যেই 'গোরা'কে অন্যদের থেকে আলাদা করার অঢেল উপকরণ রয়েছে । তাই অরিরিক্ত চাপের কোনও বিষয় ছিল না ।
প্রশ্ন: আপনি তো এখন নানা ধরনের চরিত্রে অভিনয় করছেন ৷ একটি চরিত্রের পর অন্য একটি নতুন চরিত্র হয়ে উঠতে কতটা সময় লাগে?
উত্তর: আমার মনে হয় এটা আমাদের কাজের একটা অঙ্গ । খুব আইডিয়াল সিচুয়েশনে আমরা একটা কাজ থেকে বেরিয়ে অনেকদিনের বিরতি নিতে পারি । সেটা একটা আদর্শ পরিস্থিতি কিন্তু তেমনটা তো সবসময় ঘটে না । আমরা যারা প্রতিনিয়ত কাজ করি তাদের জন্য এটা খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যে একটা চরিত্র থেকে অন্যচরিত্রে নিজেকে সরিয়ে নিয়ে যেতে পারা । ফলে এটা করতেই হয় । আর সত্যি বলতে পরিচালক, চিত্রনাট্য, সহ অভিনেতা সবটা যদি তোমার অনুকুলে থাকে তাহলে সেটা ঘটেও যায় খুব তাড়াতাড়ি ।...কিন্তু হ্যাঁ আরেকটু সময় পেলে হয়তো আরও ভালো করে চরিত্রটার কাছে পৌঁছাতে পারতাম ।