কলকাতা, 13 জুন: গোটা জুন মাস জুড়ে সারা বিশ্বে 'প্রাইড মাস' পালিত হয় । মাসভর কর্মসূচি চলে দিকে দিকে । আর এই মাসেই প্রদর্শিত হবে ভারতের প্রথম রূপান্তরকামী ওটি টেকশিয়ানের জীবনকাহিনি নির্ভর তথ্যচিত্র 'জিয়ার গল্প'। এর পরিচালক ঋতমা ঘোষ । তথ্যচিত্র প্রদর্শনের সঙ্গে থাকবে একটি আলোচনা সভা । অংশগ্রহণ করবেন সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ । আলোচনার মূল বিষয় 'নিজের জেন্ডার নিজে নির্বাচন করুন'।
উল্লেখ্য, 1969 সাল থেকে সমাজে তৃতীয় লিঙ্গের অধিকার নিয়ে লড়াই শুরু হয় । সেই লড়াই আজও অব্যাহত । সারা বিশ্বে এ বারের প্রাইড মাসের প্রধান কর্মসূচি তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের সমানাধিকার । সমাজে সবার সঙ্গে এক আসনে যেন বসতে পারে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ, এই সমানাধিকারের লড়াই ধীরে ধীরে সমাজে ছাপ ফেলতে শুরু করেছে । সমাজের বহু স্তরে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষরা আজ স্বীকৃতি পাচ্ছেন । মূলস্রোতে তাঁদের সাদরে গ্রহণ করা হচ্ছে । পরিবারে, সমাজে, স্কুল-কলেজে, কাজের জায়গায় তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের জায়গা করে দেওয়া হচ্ছে । পরিচালক ঋতমা ঘোষের তথ্যচিত্র 'জিয়ার গল্প' এই সাদরে গ্রহণ করার দিকটিই তুলে ধরেছে ।
জিয়া একজন রূপান্তরকামী পুরুষ । তিনি শরীরে পুরুষ, মননে নারী । এই নারীসত্ত্বাকেই তিনি প্রাধান্য দিতে চান । তাই তিনি লম্বা চুল রাখেন, মেয়েদের পোশাক পরে, ঠোঁটে লিপস্টিক দেন । তাঁর এই ইচ্ছেকে সাদরে গ্রহণ করেছে তথাকথিত গোঁড়া সমাজ । জিয়া ভারতের প্রথম ওটি টেকনিশিয়ান, যিনি কলকাতার একটি নামী হাসপাতালে চাকরিও পান । হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, তাঁর সহকর্মীরা, রোগীরা, রোগীর পরিবার সবাই জিয়ার ইচ্ছেকে সম্মান দেন । তাঁকে কাছে টেনে নেন । জিয়া এখন সেই হাসপাতালে দাপিয়ে কাজ করছেন । কোনও বিশেষ লিঙ্গের মানুষ হয়ে নয়, জিয়া একজন মানুষ হয়েই মানুষের সেবা করছেন ।
আরও পড়ুন:কটাক্ষের জবাবে সাফল্যের সোপান গড়ে উচ্চমাধ্যমিকে সপ্তম রূপান্তরকামী স্মরণ্যা