কলকাতা, 25 অক্টোবর: আটাত্তরে পা দিলেন মেমসাহেব ৷ তিনি উত্তম-সৌমিত্রের নায়িকা । আবার সত্যজিতের 'তিনকন্যা'র অন্যতম ৷ কেউ কেউ আবার তাঁকে দেখেন বাংলার সোফিয়া লোরেন হিসেবে ৷ সময় যতই এগিয়ে যাক তিনি আজও বাঙালির আদি-অকৃত্রিম মেমসাহেব ।
1945 সালের 25 অক্টোবর জন্ম অপর্ণার । বাবা ছিলেন বিখ্যাত পরিচালক চিদানন্দ দাশগুপ্ত । তাই শুরু থেকেই বাড়িতে ছিল ছবির পরিবেশ । আবার একটু অন্য়দিক থেকে দেখলে তিনি প্রবাদপ্রতীম কবি জীবনানন্দ দাশের ভাইঝিও বটে ৷ বাড়িতে ছোটবেলা থেকে তিনি বেড়ে উঠেছেন এক সুন্দর সাংস্কৃতিক পরিবেশে ৷ ছবি, কবিতা, গল্প, গান ছিল তাঁর নিত্যসঙ্গী (Remembering Aparna Sen on her 77th Birthday ) ৷
মাত্র 16 বছর বয়সে প্রথম ছবিতে কাজের সুযোগ আসে তাঁর কাছে ৷ আর প্রথম সুযোগটাই আসে কিংবদন্তি সত্যজিৎ রায়ের হাত ধরে । 1961 সালে মুক্তি পায় ‘সমাপ্তি’। এরপর অবশ্য সত্যজিৎ তাঁকে ব্যবহার করেছেন একাধিক ছবিতে । ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’, ‘জনঅরণ্য’-র মতো কালজয়ী ছবিতে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র পেয়েছেন অপর্ণা । তথাকথিত আর্ট ফিল্মের পাশাপাশি রিনাদি সফল বানিজ্যিক ছবিতেও (Aparna Sen 77th Birthday ) ৷ শুধু অভিনয় নয় লেখালেখিতেও যথেষ্ট আগ্রহী অপর্ণা । তাঁর লেখাও প্রশংসা কুড়িয়েছে রীতিমতো ।
কেরিয়ারের শুরুতে ‘বসন্ত বিলাপ’ কিংবা ‘ছুটির ফাঁদে’র মতো বাণিজ্যিক ছবিতে তাঁর অভিনয় মন জিতে নিয়েছিল সকলের । সৌমিত্রের নায়িকা হিসেবে রীতিমতো জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন ৷ কিন্তু হঠাৎই তিনি থামিয়ে দেন আলোর দিকে ইঁদুরের মতো দৌড়ে চলার এই সফর ৷ নিজের ভালো লাগা, মন্দ লাগা নিয়ে বরাবরই সরব অপর্ণা (Aparna Sen)। একসময় নিজেই জানিয়েছিলেন, অতৃপ্তি ছিল বলেই অভিনেত্রী থেকে পরিচালক হওয়ার শপথ নেন । ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে প্রায় একরকম সংলাপ বলতে, কিংবা একভাবে অভিনয় করতে করতে দমবন্ধ লাগছিল তাঁর । অতএব নিজেকে ভেঙে আবার গড়ার খেলায় মেতে উঠলেন অপর্ণা । হয়ে উঠলেন ডাকসাইটের পরিচালক । নায়িকা জীবনের মতো পরিচালক জীবনেও অপর্ণা মানেই ছবি সুপারহিট ।