কলকাতা, 26 সেপ্টেম্বর:শুধু বাঙালির প্রিয় অভিনেত্রী এবং পরিচালক বললে অপর্ণা সেন সম্পর্কে প্রায় কিছুই বলা হয় না (Remembering Aparna Sen)। যে কয়েকজন কুশিলব আধুনিক বাংলা চলচ্চিত্রকে আন্তর্জাতিক স্তরে নিয়ে গিয়েছেন তাঁর মধ্যে বাঙালির রিনাদির স্থান বেশ উপরের দিকে ।
নিজের ভালো লাগা, মন্দ লাগা নিয়ে বরাবরই সোজাসাপটা থেকেছেন অপর্ণা (Aparna Sen)। একসময় নিজেই জানিয়েছিলেন, অতৃপ্তি ছিল বলেই অভিনেত্রী থেকে পরিচালক হওয়ার শপথ নেন । ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে একইধরনের সংলাপ, একঘেঁয়ে অভিনয় করতে করতে দমবন্ধ লাগছিল তাঁর । বারবার মনে হচ্ছিল সিনেমাকে তাঁর আরও অনেক কিছু দেওয়ার আছে । আর সেই কারণেই লেন্সের পেছনে গেলেন 'মেমসাহেব'। একজন শিল্পীর কাছে সবচেয়ে বড় হাতিয়ার হল তাঁর শিল্প । তাঁর শিল্পই কথা বলে তাঁর হয়ে । ঠিক যেমন অপর্ণার জীবনবোধ থেকে শুরু করে রাজনৈতিক মতাদর্শ সবটাই ফুটিয়ে তুলেছে তাঁর ছবি (Aparna Sen Films) ।
কেরিয়ারের শুরুতে ‘সমাপ্তি’, ‘বসন্ত বিলাপ’ কিংবা ‘ছুটির ফাঁদে’র মতো বাণিজ্যিক ছবিতে তাঁর অভিনয় মন জিতে নিয়েছিল সকলের । এই অপর্ণাকেই বার বার অন্যভাবে পেয়েছে বাঙালি । ‘মিস্টার অ্যান্ড মিসেস আইয়ার’ হোক বা ‘জাপানিজ ওয়াইফ’ কিংবা ‘ইতি মৃণালিনী’ তাঁর ছবি আদ্যপান্ত তুলে ধরল তাঁর জীবন দর্শন । তুলে ধরল তাঁর রাজনৈতিক বোধকে ।
1945 সালের 25 অক্টোবর জন্ম এই মানুষটির । বাবা ছিলেন বিখ্যাত পরিচালক পরিচালক চিদানন্দ দাশগুপ্ত । তাই শুরু থেকেই বাড়িতে ছিল ছবির পরিবেশ । ছবির জগতে প্রবেশের প্রথম সুযোগটা আসে প্রবাদপ্রতীম সত্যজিৎ রায়ের হাত ধরে । 1961 সালে মুক্তি পায় ‘সমাপ্তি’। এরপর অবশ্য সত্যজিৎ রায় তাঁকে ব্যবহার করেছেন একাধিক ছবিতে । ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’, ‘জনঅরণ্য’-র মতো একাধিক ছবিতে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র পেয়েছেন অপর্ণা । শুধু অভিনয় নয় লেখালেখিতেও যথেষ্ট আগ্রহী অপর্ণা । তাঁর লেখাও প্রশংসা কুড়িয়েছে রীতিমতো ।