কলকাতা, 1 জুন :কেকে'র অকালমৃত্যুতে গভীর শোকে আচ্ছন্ন তামাম দুনিয়া । গান স্যালুট দিয়ে তাঁকে শেষশ্রদ্ধা জানানো হল রবীন্দ্রসদনে । ইতিমধ্যেই শিল্পীর দেহ নিয়ে মুম্বইয়ের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছে তাঁর পরিবার । তাঁর হঠাৎ অসুস্থতা যেমন তাঁর চলে যাওয়ার কারণ তেমনি উদ্যোক্তাদের ব্যবস্থাপনার গাফিলতিও এক্ষেত্রে সমান অপরাধী বলে মনে করছেন সেদিনের অনুষ্ঠানে হাজির প্রত্যক্ষদর্শীরা (Demise of KK Creates Controversy in Social Media)। জানা গিয়েছে, গান গাইবার সময়ে অনবরত ঘামছিলেন কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ । বারবার রুমাল দিয়ে ঘাম মুছে নিচ্ছিলেন । এমনকী স্পটলাইট বন্ধ করে দিতে বলেন তিনি।
শিল্পী কেকের অকাল মৃত্যুর পর নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে সোশ্যাল মিডিয়ায় কিন্তু উদ্যোক্তারা সেদিকে কান না-দিয়ে মঞ্চের দু'পাশে দাঁড়িয়েছিলেন । স্টেজে ঘুরে ফিরে গান গাওয়ার জন্য প্রয়োজন মতো জায়গাও নাকি ছিল না । স্টেজ পর্যন্ত এয়ার কন্ডিশনারের হাওয়াও পৌঁছচ্ছিল না সেদিন । প্রচণ্ড ভিড়ে কাজ করছিল না মেশিন । যার জেরে সাতটি দরজার পাঁচটিই খোলা রাখতে হয়েছিল । তাই অডিটোরিয়াম কর্তৃপক্ষকে বাধ্য হয়েই এয়ার কন্ডিশনার বন্ধ করে দেন । সাধারণ দর্শকেরও এই অবস্থায় যথেষ্ট কষ্ট হচ্ছিল । এই অবস্থায় চুপ করে বসে থাকাই কঠিন আর সেখানে কে কে নেচে-গেয়ে মনোরঞ্জন করছিলেন দর্শকের ।
এই গাফিলতির কথা তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন অনেকেই । অভিনেত্রী স্নেহা চট্টোপাধ্যায় লিখেছেন, "আমরা অপেশাদারী হব, অমানবিক হব, অপরিকল্পিত পথে চলব, আমরা 2000-এর ক্যাপাসিটিতে 5000 লোক ঢোকাব, কিন্তু শিল্পীকে যখন পয়সা দিয়ে এনেছি তখন এক বিন্দু তাঁর কথা ভাবব না । আর তাকে 1000 ভাগ প্রফেশনাল হতে হবে । সে ঘেমেনেয়ে গেয়ে অসুস্থ বোধ করলেও স্টেজ ছাড়বে না । সত্যিকারের শিল্পীরা পারেনও না অবশ্য ৷ অভিনেতার ক্ষেত্রেও একই কথা খাটে । হাজার অসুস্থতা সত্তেও মরতে মরতে তাদের শট দিতে হবে । তারপর যদি এরকম ঘটনা ঘটে আমরা আহা উহু করব, ফেসবুকে লিখব, টিভি চ্যানেল চালিয়ে বসে থাকব । ক'দিন এভাবে চলার পর আবার অমানবিক হব, অপেশাদারী হব । চলতে থাকবে এভাবেই । ওই যে 'দ্য শো মাস্ট গো অন'।"
গান স্যালুট দিয়ে তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হল রবীন্দ্র সদনে আরও পড়ুন : কে কে থেকে লতা...যাঁরা রবে নীরবে...অগণিত হৃদয়ে
একই মত অভিনেত্রী শ্রুতি দাসেরও ৷ তিনি লেখেন, "পারলে যথাযথ ইনফাস্ট্রাকচার থাকলে তবেই টাকা উশুল করানোর জন্য শিল্পী আনুন । ওনারা অডিয়েন্সের রেসপন্স দেখে গান থামান না, কষ্ট হলেও গেয়ে যান । আর ইনি তো চলেই গেলেন !" প্রশ্ন এমনও উঠছে গান স্যালুট...! কেন ? শিল্পীর গুণগতমান কে পরিমাপ করার লক্ষ্যে, নাকি.... নিজেদের অক্ষমতাগুলোকে চোখের আড়াল করার উদ্দেশ্যে ?