কলকাতা, 11 সেপ্টেম্বর:মৃনাল সেনের হাত ধরেই আবার স্কটিশ চার্চ কলেজে ফিরলেন মিঠুন চক্রবর্তী । সেখানে তিনি সুপারস্টার নন, কিংবদন্তি অভিনেতা নন কেবলই একজন কলেজ ছাত্র । স্কটিশচার্চ কলেজ এবং প্রাক্তনীদের পক্ষ থেকে এদিন আয়োজন করা হয়েছিল 'শতবর্ষে মৃনাল সেন' শীর্ষক একটি অনুষ্ঠান । সেই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসেছিলেন মিঠুন চক্রবর্তীও । ঘটনাচক্রে প্রয়াত চিত্র পরিচালক মৃনাল সেন এবং মিঠুন চক্রবর্তী দু'জনেই স্কটিশচার্চের প্রাক্তনী । আবার পেশাগত সূত্রে দু'জনে গুরু-শিষ্য । মৃণালের হাত ধরেই শুরু হয়েছিল মিঠুনের কেরিয়ার ৷
স্বাভাবিকভাবেই মিঠুন এদিন নস্টালজিক হয়ে পড়লেন ৷ উত্তর কলকাতার ছেলে, উত্তর কলকাতার কলেজেই কেটেছে তাঁর শিক্ষাজীবন । মিঠুন বলেন, “কলকাতার যে গলিতে আমাদের বাড়ি ছিল সেখানে সকাল আটটার আগে রোদ ঢুকত না । সেখান থেকে যেখানে এসেছি তা আমার ডেস্টিনি । কলেজের নির্বাচনে এমন ঝামেলা হল যে এদিকের পাট শেষ করতে বাধ্য হলাম । শুরু হল নিয়তির খেলা । মৃনালদা আমায় প্রথমবার দেখেননি । একটি অনুষ্ঠান দেখতে গিয়েছিলাম সেখানে উনি আমাকে পিছন থেকে দেখে পছন্দ করেছিলেন । কে কে মহাজনকে বলেছিলেন এই ছেলেটাকে আমার চাই । আমার চুল গায়ের রং নাকি ওঁর পছন্দ হয়েছিল ৷"
বিমল রায়ের কাছে মিঠুন জানতে পারেন মৃনাল সেন তাঁকে খুঁজছেন ৷ এক বন্ধুকে ধরে বেশ কয়েকটি ছবি পাঠিয়েছিলেন অভিনেতা । তিনি বলেন, “ওই সময়টা আমি ভাবতেই পারিনি প্রধান চরিত্রের জন্য আমাকে নেওয়া হতে পারে । ঠোক্কর খেতে খেতে আমি ঠিক করেছিলাম খলনায়ক হব । আমার গায়ের রং কালো । অন্যদের মতো ফর্সা নই ৷ তাই কিছুটা দাঁতমুখ খিচিয়ে ছবি তুলে পাঠিয়ে দিয়েছিলাম । সেইসময় মার্শাল আর্ট করতাম । তার কিছু ভঙ্গির ছবিও দিয়েছিলাম । আসলে আমি এমন একটা কিছু করতে চেয়েছিলাম যা একটু আলদা । ভিলেন যে নাচটা ভালো পারে । যাই হোক ছবি দেখে মৃনালদা বাতিল করে দিয়েছিলেন ৷"
সেই সময় মিঠুন 'দো আনজানে' ছবিতে একটা ছোট চরিত্রে অভিনয় করেছেন । পরিচালক তাঁর কাছে জানতে চান পারিশ্রমিক হিসাবে কত টাকা চান তিনি ৷ মিঠুন তাঁকে জানান, তিনি যেন তাঁর বিমানের টিকিটের ব্যবস্থাটুকু করে দেন ৷ আসলে তিনি চাইছিলেন কলকাতায় ফিরতে ৷ ভাগ্যের খেলা বোধহয় একেই বলে ৷ 'দো আনজানে' ছবির শুটিং হওয়ার কথা ছিল কলকাতাতেই ৷ ফলে পুরো ইউনিটের সঙ্গে মিঠুন তিলোত্তমায় চলে আসেন ।