নয়া দিল্লি, 2 ডিসেম্বর: 'বামন হয়ে চাঁদে হাত দেওয়ার উচ্চাশা করতে নেই', এমন প্রবাদ চালু রয়েছে বহুকাল ধরেই ৷ কিন্তু নাম যদি বোমান হয় তবেও যে আকাশ থুড়ি চাঁদও নেমে আসে পায়ের কাছে ৷ জন্মের আগে বাবাকে হারানো, বেকারি চালিয়ে সংসার টানা সেই মানুষটার নাম বোমান ইরানি যিনি স্বপ্নের জন্য নিজের সবটুকু উজাড় করে দিতে কখনও দ্বিধা করেননি ৷ তাঁর এই অভিনয়ের প্রতি ভালোবাসার পিছনে বড় ভূমিকা ছিল মায়ের ৷ ছেলেকে আলেকজান্ডার থিয়েটারে সিনেমা দেখতে পাঠাতেন তিনিই ৷ পড়াশোনা শেষ করার পর দু'বছর বিশ্ববিখ্যাত 'তাজমহল' হোটেলে এ ওয়েটার হিসাবেও কাজ করেন এই অভিনেতা ৷
32 বছর বয়স পর্যন্ত চালাতেন মায়ের বেকারিও ৷ শুধু কি তাই প্রিয়তমার সঙ্গে তাঁর দেখাও নাকি এই বেকারিতেই ৷ তবে সে অন্য গল্প ৷ একইসঙ্গে ছবি তোলার প্রতিও বোমানের ভীষণ আগ্রহ ছিল ৷ তিনি নিজেই 20-30 টাকায় ফুটবল বা ক্রিকেট ম্য়াচে তোলা ছবি বিক্রি করেছেন একসময় ৷ সঙ্গে সঙ্গে মাথা চাড়া দিয়ে উঠছিল অভিনয়ের পোকাও ৷
কারণ ততদিনে বোমানের নেশা শুধু সিনেমা দেখায় সীমাবদ্ধ নেই (Looking Back to The memorable Career of Boman Irani on His birthday)৷ বরং যাওয়া আসা শুরু হয়েছে থিয়েটারের মঞ্চে ৷ স্কুল এবং কলেজ জীবনেই অভিনয়ের গুরু হংসরাজ সিদ্ধার কাছে তালিম নিতে শুরু করেছিলেন এই অভিনেতা ৷ থিয়েটারে অভিনয়ও 1981 সালের আশেপাশেই ৷ 'মহত্মা ভার্সেস গান্ধী' নাটকে গান্ধী চরিত্রেও অভিনয় করেছিলেন অভিনেতা ৷ তবে বোমানের সবচেয়ে জনপ্রিয় নাটক ছিল 'আই অ্যাম নট বাজিরাও', যা চলেছিল প্রায় দশ বছর ৷
বড় স্ক্রিনে তাঁকে প্রথম বড় জায়গা করে দেন রাজকুমার হিরানি ৷ এর আগে 'ডরনা মানা হ্যায়' ছবিতে তিনি ছোট্ট একটি চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন ঠিকই তবে তা তেমনভাবে ছাপ ফেলতে পারেনি ৷ সালটা ছিল 2003 ৷ রাজকুমার হিরানি তাঁকে ডাক দিলেন 'মুন্না ভাই এমবিবিএস' ছবির জন্য় ৷ যদিও বিজ্ঞাপণী দুনিয়ায় কাজ করা রাজুকে খুব একটা পছন্দ হয়নি বোমানের ৷ তিনি নিজেই জানিয়েছিলেন, ছবির জন্য মোটেই প্রথম রাজি ছিলেন না তিনি ৷ কিন্তু যখন রাজকুমার তাঁকে ছবির চিত্রনাট্য শোনান তখন আর না করতে পারেননি অভিনেতা ৷ আর বোমানের ড: আস্থানার চরিত্রটি কেমন সাড়া ফেলেছিল তা বোধহয় আলাদা করে না বললেও চলে ৷