কলকাতা, 30 মে: সালটা 1994। ঋতুপর্ণ ঘোষের পরিচালনায় মুক্তি পায় বাংলা ছবি 'উনিশে এপ্রিল'। ছবিতে অভিনয় করেন অপর্ণা সেন, দেবশ্রী রায়, দীপঙ্কর দে, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়-সহ আরও অনেকে। মঙ্গলবার পরিচালক ঋতুপর্ণ ঘোষের দশম মৃত্যুবার্ষিকীতে 'উনিশে এপ্রিল'-এর মাধ্যমেই বন্ধু ঋতুকে ঘিরে স্মৃতির সরণীতে হাঁটলেন দেবশ্রী রায়।
প্রথম দেখা : "দীপঙ্কর দা'র মেয়ের বিয়েতে প্রথম দেখা হয়েছিল ঋতুর সঙ্গে। প্রথম সাক্ষাতেই আমাকে 'তুই' সম্বোধন করেছিল ঋতু। বলেছিল, আমার একটা ছবিতে অভিনয় করবি? চিনি না জানি না আমাকে 'তুই' বলে ডাকায় অদ্ভুত লেগেছিল। যেহেতু আমাকে 'তুই' বলে ডেকেছিল তাই আমিও 'তুই' বলেই ডেকেছিলাম। বলেছিলাম তুই আগে গল্পটা তো শোনা। ও সেদিনই আমাকে বলেছিল আমার মায়ের চরিত্রে রিনা দি (অপর্ণা সেন) থাকবে। এরপর একটা দিন ঠিক হয়। গল্প শুনি। শুনে মনে হয় এই ছবিটা আমার জীবনে একটা অন্য ধরনের ছবি হয়ে থেকে যেতে পারে। আর হলও তাই। এই ছবিই আমাকে জাতীয় পুরস্কার এনে দেয় জীবনে। অনেক ছবি বানিয়েছে ঋতু, অনেক বড় বড় শিল্পীদের নিয়ে বানিয়েছে কিন্তু 'উনিশে এপ্রিল' ওর জীবনের ল্যান্ডমার্ক ছবি। জাতীয় স্তরে পৌঁছে গিয়েছিল ছবিটা। এই ছবি আমার জীবনেও অন্যতম একটি হয়ে আছে। 'দাদার কীর্তি', '৩৬ চৌরঙ্গী লেন', 'ভালোবাসা ভালোবাসা' যেমন আমার জীবনের অন্যতম কয়েকটি ছবি, তেমনিই 'উনিশে এপ্রিল' আমার জীবনের সেরা একটি ছবি। উনিশে এপ্রিল ছবিটা মা এবং মেয়ে একসঙ্গে দেখে একজন মা আমাকে জানিয়েছিলেন তাঁর সঙ্গে তাঁর মেয়ের সম্পর্ক ভালো হয়ে গিয়েছে। এর থেকে বড় প্রাপ্তি আর কী হতে পারে?"
আর কোনও ঘটনা? অভিনেত্রী বলেন, "অনেক ঘটনা রয়েছে। রাত কাবার হয়ে যাবে। যে বাড়িতে আমাদের শুটিংটা হত সেই বাড়িটা ভেঙে ফেলার কথা ছিল। ক্যামেরা ভেঙে যাওয়ার কারণে শুটিং পিছিয়ে গিয়ে দেরি হওয়ায় লোকজন বাড়িটা ভাঙতে চলে আসে নির্দিষ্ট দিনে। ঋতু তো আর তাদের সামাল দিতে পারে না। আমাকে আর রিনা দি'কে বলে সামাল দিতে। আমরা শেষে চা খাইয়ে বুঝিয়ে সুঝিয়ে রাজি করাই ভদ্রলোককে। শেষ হয় শুটিং।