কলকাতা, 29 সেপ্টেম্বর:উত্তম কুমারের পর বাংলা সিনেমার বৃত্তে নায়ক হিসেবে যে মানুষটি একটি নিজস্ব আসন তৈরি করে নিতে পেরেছিলেন তিনি তাপস পাল ৷ সাদামাটা বাঙালি চেহারা, সহজ-সরল চোখের চাহনি আর অনায়াস অভিনয় দক্ষতা তাঁকে চলচ্চিত্রের ইতিহাসের এক রঙিন তারা করে তুলেছিল অচিরেই ৷ আবার এই মানুষটি আদ্যপান্ত একটু বেশি বাঙালি ৷ খেতে ভালোবাসতেন প্রবল পরিমাণে ৷ গ্ল্যামারের দিকে আলাদা করে খেয়াল রাখার সময়ই নেই ৷
শোনা যায়, মোটা হয়ে যাচ্ছেন বলে একবার নাকি তরুণ মজুমদার তাপসের ডায়েট চার্ট তৈরি করে দেন ৷ কিন্তু তাপস পাল তো তাপস পাল-ই ৷ তিনি অন্যদের খাবারে ভাগ বসাতে শুরু করলেন। কমার বদলে বেড়ে গেল খাওয়ার পরিমাণ। দিনশেষে দেখা গেল এমনিতে হয়তো অতটা বেশি খেতে পারতেন না নায়ক!
তিনিই আবার বারবার জড়িয়েছেন বিতর্কে ৷ রাজনীতিতে প্রবেশের পর থেকে সমালোচনা তাঁর পিছু ছাড়েনি ৷ নাম জড়ায় দুর্নীতির সঙ্গেও। তাঁর প্রয়াণের পর শাসক শিবির বিস্ফোরক অভিযোগ তোলে । তাদের দাবি, রাজনীতির টানাপোড়েনই নাকি অকালে কেড়ে নিল অভিনেতার প্রাণ ৷ তবে অভিনেতা বেঁচে থাকেন কাজের মধ্যে ৷ আজ তাঁর জন্মদিনে দেখে নেওয়া যাক সেইরকমই কিছু কালজয়ী কাজ ৷
দাদার কীর্তি:আটেরদশকের একেবারে গোড়ার দিকে শরদিন্দু বন্দোপাধ্যায়ের কাহিনি অবলম্বনে এই কালজয়ী ছবিটি তৈরি করেন পরিচালক তরুণ মজুমদার ৷ মুখ্যচরিত্রে তাপস পাল, অয়ন বন্দোপাধ্যায়, দেবশ্রী রায় এবং মহুয়া রায়চৌধুরী ৷ সহজ সরল এই গল্প কতটা জনপ্রিয় হয়েছিল তা আর আলাদা করে বলার দরকার নেই ৷ আজও বাঙালির প্রিয় ছবির তালিকায় অমর হয়ে আছে তনুদাদার এই কীর্তি ৷
ভালোবাসা ভালোবাসা:সালটা 1985 ৷ আবার পর্দায় এল তরুণ মজুমদার-তাপস পাল জুটি। বাঙালি আবার উপহার পেল এক অসামান্য প্রেমের ছবি ৷ নিজের তৈরি গল্পে তরুণ এবার নায়ক বাছলেন তাপস পালকে ৷ আর নায়িকা সেই দেবশ্রীই ৷ এবারও শহর আর গ্রাম মিলিয়ে প্রেম তৈরি করল এক নতুন অধ্যায় ৷ উৎপল দত্তের মতো অভিনেতাকে কীভাবে ব্যবহার করে নিতে হয় ঋত্বিক ঘটক-সত্যজিৎ রায়ের পর তা আরও একবার বাঙালিকে দেখিয়ে দিলেন তরুণ মজুমদার ৷ এই ছবির গানের কথাও আলাদা করে উল্লেখের দাবি রাখে।