পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / elections

বরকত সাহেবের মতো মালদার জন্য কাজ করেন মমতাও : মৌসম - TMC

আজ কোতওয়ালির খান চৌধুরি ভবনে হাজির হয়েছিলেন জেলা কংগ্রেস ও তৃণমূল নেতৃত্ব। উত্তর মালদার তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী মৌসম নুর গণি খানের সমাধিতে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করে বলেন, "বরকত সাহেব যেভাবে কাজ করতেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মালদাসহ পশ্চিমবঙ্গের জন্য সেভাবে কাজ করেন।"

সমাধিতে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করছেন মৌসম নুর

By

Published : Apr 14, 2019, 6:41 PM IST

Updated : Apr 14, 2019, 8:47 PM IST

মালদা, ১৪ এপ্রিল : আজ বরকত গণি খান চৌধুরির প্রয়াণ দিবস। তাই জেলাজুড়ে এই দিনটি পালন করছে কংগ্রেস ও তৃণমূল। গণি খানকে নিজেদের সম্পদ হিসেবে প্রমাণ করতে এই মুহূর্তে দুই শিবিরই মরিয়া হয়ে উঠেছে। আজ সকালে জেলা কংগ্রেস ও তৃণমূল নেতৃত্ব হাজির হয়েছিলেন কোতওয়ালির খান চৌধুরি ভবনে। সেই ভবন চত্বরেই গণি খানের সমাধিস্থল। সেখানে যান উত্তর মালদার তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী মৌসম নুর। মৌসম কোতওয়ালি ভবন ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই বরকত সাহেবের সমাধিস্থলে আসেন আবু হাসেম খান চৌধুরি ও ইশা খান চৌধুরি। তাঁরাও প্রয়াত নেতার সমাধিতে নিজেদের শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন।

ভিডিয়োয় শুনুন বক্তব্য

২০০৬ সালের ১৪ এপ্রিল গণি খান চৌধুরি মারা যান। কিন্তু মৃত্যুর ১৩ বছর পরেও তিনি এই জেলার ভোট রাজনীতিতে বড় ভূমিকা পালন করছেন। সেই কারণেই রাহুল গান্ধিও দলীয় প্রার্থীদের সমর্থনে ভোটপ্রচারে এসে গণি-স্মরণ করেন। অন্যদিকে শুভেন্দু অধিকারী, ফিরহাদ হাকিম, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও এই জেলায় গণি-নাম জপ করতে হয়।

আজ মৌসুম নুরের সঙ্গে ছিলেন জেলা তৃণমূলের দায়িত্বপ্রাপ্ত সভাপতি দুলাল সরকার, ইংরেজবাজারের বিধায়ক নীহাররঞ্জন ঘোষ, আবু নাসের খান চৌধুরি, শেহনাজ কাদেরি, অরুণ তরফদার সহ অন্যরা। সমাধিতে শ্রদ্ধা জানানোর পর মৌসম বলেন, "আজ বরকত সাহেবের ১৪ তম প্রয়াণ দিবস। প্রতি বছরই এই দিনে তাঁর সমাধিতে আমরা দোয়া করি। আজও আমরা সবাই সেখানে দোয়া করেছি। প্রতিদিন আমরা তাঁকে স্মরণ করলেও আজকের দিনটা একটু অন্যরকম। উনি যে আমাদের মধ্যে নেই তা কখনও মনে হয় না। তাঁর কাজের জন্য মানুষ সবসময় তাঁকে মনে রাখবে। আজ আমাদের পরিবারের সঙ্গে তাঁর কাছের মানুষরাও বরকত সাহেবের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাতে এসেছেন। যদিও ভোটের মুখে আজ বরকত সাহেবকে শ্রদ্ধা জানানোটা বিশেষ কোনও বার্তা বহন করবে বলে আমার মনে হয় না। তবে তাঁর সঙ্গে যাঁরা নিরন্তর কাজ করেছেন, তাঁদের বেশিরভাগই আজ তৃণমূলে। বরকত সাহেব যখন কাজ করেছেন তখন কংগ্রেস খুব মজবুত ছিল। কিন্তু এখন পশ্চিমবঙ্গে সেই জায়গাটা কংগ্রেসের নেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে এখন তৃণমূল এই রাজ্যে মজবুত। বরকত সাহেব যেভাবে কাজ করতেন, সেভাবেই নেত্রী (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) মালদাসহ পশ্চিমবঙ্গের জন্য কাজ করছেন। তাঁরা দুজনেই শ্রদ্ধেয়। দু'জনকেই আমরা সম্মান জানাই। আমি তৃণমূলে এসেছি। তাঁর মতোই যেন মানুষের কাজ করতে পারি, আজ সেই আশীর্বাদই বরকত সাহেবের কাছে চাইলাম।"

ইশার গলায় আজ শুধুই বরকত সাহেবের উত্তরাধিকারের সুর। তিনি বলেন, "বরকত সাহেব মানুষের জন্য এতটাই কাজ করেছেন যে মানুষ তাঁকে ভুলতে পারে না। এটা রাজনীতি নয়। উনি মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছেন। মৌসম আজ প্রথমবার আলাদাভাবে বরকত সাহেবের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানালেও এনিয়ে আমি কোনও মন্তব্য করতে চাই না। এটা মৌসমের ব্যক্তিগত বিষয়। তবে আজ পরিবারের সবাই একসঙ্গে বরকত সাহেবকে শ্রদ্ধা জানালে ভালো লাগত। কিন্তু কিছু করার নেই। আমি দুটি কথা বলতে চাই। বরকত সাহেব কংগ্রেসকে কোনওদিন ছেড়ে যাননি। উনি ৫ বছর রাজ্যের ও ৫ বছর কেন্দ্রের মন্ত্রী ছিলেন। নিজের স্বার্থ কোনওদিন ভাবেননি। সবসময় অধিকারের জন্য লড়তেন। কিন্তু মৌসম যে দলে গেছে, তারা তো পঞ্চায়েত নির্বাচনে পুলিশ-প্রশাসন দিয়ে ভোট লুট করেছে। এবারের নির্বাচনেও তৃণমূল ফের সন্ত্রাস শুরু করেছে। যেমন গতকাল রতুয়া থানা ময়দানে তৃণমূল আমাদের সভা বানচাল করার চেষ্টা করেছে। এটা গণতন্ত্রের উপর আক্রমণ। এসব কোনওদিন বরকত সাহেবের নীতি ছিল না। তবে মুখ্যমন্ত্রীর নীতি হল বিভাজনের রাজনীতি করা। কোতওয়ালি ভবনে ভাঙন ধরানোর চেষ্টা করা। কিন্তু যতবার তিনি সেই চেষ্টা করেছেন, ততবার হেরে গেছেন। কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে গিয়ে কেউ নির্বাচনে জিততে পারেনি। মালদার মানুষ তাদের এই শিক্ষা দিয়েছে। এবারও মানুষ সেই শিক্ষা দেবে বলে আমার মনে হয়।"

অন্যদিকে ডালু মিঞা বলেন, "বরকতদা সবসময় বলতেন, যারা তোমার কাছে এসেছে, তাঁদের তুমি সময় দাও। মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা কর। বরকতদা কংগ্রেস ছাড়া কোনওদিন কিছু ভাবেননি। তবে বরকত সাহেবের উত্তরাধিকারী নিয়ে যেসব প্রশ্ন উঠছে তার কোনও মানে নেই। শুধু মনে করি, আমরা কংগ্রেসের একটা অংশ। আজ মৌসম আলাদাভাবে বরকত সাহেবের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানালেও আমি এনিয়ে কিছু বলতে চাই না।"

Last Updated : Apr 14, 2019, 8:47 PM IST

ABOUT THE AUTHOR

...view details