কাঁথি (দক্ষিণ), 21 মার্চ : রাজ্যের দাপুটে বিরোধী নেত্রী থেকে মুখ্যমন্ত্রীর তখ্ত ৷ মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের রাজনৈতিক উত্থানে তাঁর দীর্ঘদিনের সহযোদ্ধা ছিলেন কাঁথির অধিকারী পরিবারের সদস্যরা ৷ প্রবীণ রাজনীতিক শিশির অধিকারী যদি মমতার যোগ্য পরামর্শদাতা হোন, তাহলে তাঁর মেজো ছেলে শুভেন্দু অবশ্যই অন্যতম সেরা তরুণ সেনাপতি ৷ নন্দীগ্রামের আন্দোলনে যাঁদের ভূমিকা ছিল অনস্বীকার্য ৷ অথচ আজ সেই অধিকারী পরিবারের সঙ্গেই শুরু হয়েছে সম্মুখ সমর ৷ রবিবার এগরায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সভায় বিজেপিতে যোগ দেন শিশির ৷ সভামঞ্চে সরব হন পুরনো দলের বিরুদ্ধে ৷ অন্যদিকে, ঠিক তখনই পূর্ব মেদিনীপুরের আর এক প্রান্তে অধিকারী পরিবারের বিরুদ্ধে একের পর এক তোপ দাগতে শুরু করে দিয়েছেন শিশির-শুভেন্দুর দীর্ঘদিনের নেত্রী, তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় ৷
এদিন মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের প্রচার কর্মসূচিতে ছিল পূর্ব মেদিনীপুরের তিনটি জনসভা ৷ প্রথম সভাটি তিনি করেন কাঁথি দক্ষিণে ৷ সভামঞ্চে উঠেই তোপ দাগতে শুরু করেন অধিকারী পরিবারের বিরুদ্ধে ৷ কার্যত শিশির-শুভেন্দুর গড়ে ঢুকেই তাঁদের নিশানা করেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ আনেন একের পর এক মারাত্মক অভিযোগ ৷ মমতার দাবি, একটা সময় তাঁকে পর্যন্ত কাঁথি, এগরা, পটাশপুরে সভা করতে দেওয়া হত না ৷ কারণ, সেখানে একটা পরিবারেরই জমিদারি চলত ৷ তাদের যাঁকে পছন্দ হত না, তাঁদের এলাকায় ঢুকতে দেওয়া হত না ৷ ভোটে হারিয়ে দেওয়া হত ৷ এই কারণেই নির্বেদ রায়ের মতো নেতাকে হারতে হয়েছিল ৷ এমনকী, সেই জমিদার পরিবারের অপছন্দের লোকজনকে মারধর করার অভিযোগও করেন মমতা ৷
এদিনের সভায় একবারের জন্যও শিশির অধিকারী বা তাঁর ছেলে শুভেন্দু অধিকারীর নাম নেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ কিন্তু, তাঁদের উপর গদ্দার, মীরজাফরের তকমা সেঁটে দিয়েছেন আরও একবার ৷ মমতার আক্ষেপ, একদিন যাঁকে তিনি শ্রদ্ধা করতেন, ভালোবাসতেন, যাঁর বাড়িতে নিজে হাতে আঁকা তারামায়ের ছবি পৌঁছে দিয়েছিলেন, আজ সেই তিনিই বিজেপিকে হাত ধরে নিয়ে আসছেন ৷ প্রসঙ্গত, এদিনই দল বদলে বিজেপিতে যোগ দেন শিশির ৷ এক্ষেত্রে মমতার লক্ষ্য যে তিনিই, তা বলাই বাহুল্য ৷