শিলিগুড়ি, ১৩ নভেম্বর : যেন 'সুফল বাংলা'-র বেসরকারি সংস্করণ । চাষের জমি থেকে সরাসরি দোকানে আসছে তাজা শাকসবজি । পাওয়া যাচ্ছে ডিম, ঘি, ফল । ফড়ে না থাকায় বাজার থেকে অপেক্ষাকৃত কম দামে বিক্রি হচ্ছে এসব পণ্য । দোকানে উপচে পড়ছে গ্রাহকের ভিড় । সরকারের সঠিক পরিকল্পনার অভাবে যখন 'সুফল বাংলা'-র বহু স্টল আগেই ঝাঁপ বন্ধ করে ফেলেছে, তখন ব্যক্তিগত উদ্যোগে 'ওয়ান্ডার শপ' চালিয়ে লাভের মুখ দেখছেন শিলিগুড়ির এক যুবক । এখন তিনি চাইছেন এবার অনলাইনেও একই পন্থায় পণ্য বিক্রি করতে।
পাহাড়ের আলু, স্কোয়াশ বা বিনস মিলছে শিলিগুড়ির হাতিমোড় সংলগ্ন 'ওয়ান্ডার শপ'-এ। মিলছে তাজা পোলট্রির ডিম । রয়েছে দেশি গরুর দুধে তৈরি ঘি। এছাড়া গ্রাম থেকে আসা শাকসবজি ও কলা আপেল সহ নানা ফল । শুধু তাই নয়, মিলছে হাতে তৈরি মুড়ি, বড়ি । দামও বাজার থেকে অনেকটাই কম। তাই প্রতিদিন ভিড় বাড়ছে দোকানে।
শিলিগুড়ির রবীন্দ্র নগরের বাসিন্দা তথা 'ওয়ান্ডার শপ'-এর মালিক সন্তু সাহার দাবি, "আমার এই দোকানে জিনিস বিক্রির ক্ষেত্রে শর্ত একটাই । সঠিক গুণমান আর জৈবসারে তৈরি হতে হবে পণ্য। কোনও ফড়ে নেই। আমি দিনে তিন ঘণ্টা আর রাতে তিনঘণ্টা দোকান খুলি। মাঝের সময়টায় গ্রামেগঞ্জে গিয়ে সরাসরি নিয়ে আসছি তাজা শাকসবজি।"
সস্তায় মিলছে ডিম, ঘি সবজি সন্তু জানান ,দোকানে সেসব পণ্যই বেশি বিক্রি হয় যার মুনাফার হার বেশি । পঞ্জাব বা অন্ধ্রপ্রদেশের ডিমে ভালোই লাভ থাকে । কিন্তু দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে সে ডিম যখন হেঁসেলে ঢোকে তার গুণমান কমে যায় । সাদা হয়ে যায় কুসুম । আমি কম মুনাফায় স্থানীয় পোলট্রির ডিম দিচ্ছি । সকালে ডিম ফুটিয়ে দুপুরেই আমরা দোকানে আনছি । অল্প মুনাফা হলেও বেশি গ্রাহক জুটলে আশাকরি আমিও ভালোভাবেই ব্যবসা করব। তাই বেশি টাকার লোভে পঞ্জাব বা অন্ধ্রপ্রদেশের ডিম বিক্রি করছি না ।"
সরকারি প্রকল্প যখন মুখ থুবড়ে পড়েছে, তখন একই ধাঁচে সরকারি সহায়তা ছাড়াই রমরম করে দোকান চালাচ্ছেন সন্তু । বাজারে পেঁয়াজ গড়ে 80 টাকা কেজি পিছু বিক্রি হলেও এখানে মিলছে মাত্র 62 টাকায়। রসুন বাজারে মেলে 250 টাকায়। বাজারে মুড়ির গড় দাম কেজি পিছু 100 টাকা হলেও এই দোকানে তা মিলছে 74 টাকায়। দেশি গরুর দুধে তৈরি ঘি 600 টাকা প্রতি কিলো ।
হাতের কাছে এমন ওয়ান্ডার শপ পেয়ে খুশি ক্রেতারাও ।