দার্জিলিং, 11 সেপ্টেম্বর : আফগানিস্তান তালিবানের দখলে চলে যাওয়ার পর থেকেই ভারতের সঙ্গে সবরকম বাণিজ্য বন্ধ হয়েছে ৷ দেশের পাশাপাশি বড়সড় ধাক্কা খেয়েছে এরাজ্যও ৷ উত্তরবঙ্গের চা শিল্পও রয়েছে সেই তালিকায় ৷ উত্তরবঙ্গের পাহাড়, তরাই, ডুয়ার্সের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের মূল স্তম্ভই হল চা-শিল্প । এই অঞ্চলের চা সারা বিশ্বে রফতানি হয়ে থাকে, যার মধ্যে রয়েছে আফগানিস্তানও । কিন্তু সেদেশের বর্তমান পরিস্থিতির কারণে চা রফতানি এখন সম্পূর্ণ বন্ধ । তাতেই আশঙ্কা ছড়িয়েছে চা শিল্পপতি এবং ব্যবসায়ীদের মধ্যে । আফগানিস্তানে চা রফতানি বন্ধ হওয়ার ফলে তার প্রভাব ইতিমধ্যে পড়তে শুরু করেছে উত্তরের চা শিল্পে । সেজন্য দ্রুত রাজ্য এবং কেন্দ্রের হস্তক্ষেপের আবেদন জানিয়েছেন চা শিল্পপতিরা ।
আফগানিস্তান-সহ আরব বিশ্বের উত্তরের চায়ের একটা বড় অংশ রফতানি হয়ে থাকে । দক্ষিণ ভারতের তুলনায় উত্তর ভারতের বিশেষ করে দার্জিলিংয়ের চায়ের ওই দেশগুলিতে আলাদা চাহিদা রয়েছে । পুরো ভারতে মোট উৎপাদিত চায়ের একটি বড় অংশ উত্তরবঙ্গ থেকে পাকিস্তান হয়ে আফগানিস্তানে রফতানি হয় । কিন্তু গত 15 অগস্ট থেকে সেখানে চা রফতানি সম্পূর্ণ বন্ধ হয়েছে ৷ ফলে ক্ষতির মুখে পড়তে শুরু করেছেন চা ব্যবসায়ীরা । ইতিমধ্যেই প্রায় 20 কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে ৷ এমন যদি চলতেই থাকে তাহলে প্রতি বছরে ক্ষতি হবে প্রায় 27 কোটি টাকারও বেশি । সেজন্য টি বোর্ডের কাছে সাহায্যের আর্জি জানিয়েছে বিভিন্ন চা সংগঠন । কারণ উত্তরবঙ্গের অর্থনীতির অন্যতম স্তম্ভ হল ঐতিহ্যবাহী চা শিল্প । এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে লক্ষ লক্ষ মানুষের রুজিরুটি ।
টি অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়ার সমীক্ষা অনুযায়ী, 2019-20 সালে সিটিসি, গ্রিন টি ও বিভিন্ন ধরণের চা মিলিয়ে তরাই অঞ্চল থেকে প্রায় 217 লক্ষ কেজি বেশি চা রফতানি হত আফগানিস্তানে । এই মুহূর্তে তা সম্পূর্ণই বন্ধ হয়ে গিয়েছে । পরিস্থিতি এমনই থাকলে গোটা বছরের হিসাবে 25 থেকে 27 কোটি টাকারও বেশি ক্ষতির মুখে পড়তে হবে । অন্যদিকে, করোনা পরিস্থিতির জেরে দীর্ঘদিন বাগান প্রায় বন্ধ থাকায় এমনিতেই দুর্ভোগের শিকার হতে হয়েছে চা শিল্পকে ৷ তার ওপর আবার এই পরিস্থিতিতে রফতানি বন্ধ হওয়ায় চিন্তায় পড়েছেন চা ব্যবসায়ীরা ৷