পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / city

Girls fighting against Child Marriage: নাবালিকাদের বিয়ে রুখতে অদম্য লড়াই রিয়া-পূজা-মামনিদের - বাল্য বিবাহ

দার্জিলিংয়ের প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে চা বাগান (Siliguri child marriage)। সমাজের হুমকি ও চোখরাঙানিকে উপেক্ষা করে নাবালিকা বিয়ের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে রিয়া, পূজা, মামনিরা (Girls fighting against Child Marriage)।

Minor girls fighting against child marriage at Siliguri
নাবালিকার বিয়ে রুখতে অদম্য লড়াই রিয়া-পূজা-মামনিদের

By

Published : May 18, 2022, 9:33 PM IST

Updated : May 18, 2022, 10:21 PM IST

দার্জিলিং, 18 মে: উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রবেশদ্বার শিলিগুড়ি (Girls fighting against Child Marriage)। দার্জিলিং জেলার সমতলের শিলিগুড়ি সংলগ্ন মহকুমার চারটি ব্লক প্রত্যন্ত গ্রাম ও চা বাগান অধ্যুষিত। বরাবরই এই এলাকা মানব পাচার ও নাবালিকা বিয়ের আখড়া । এর বিরুদ্ধে লড়াই চালাচ্ছে গ্রামের নাবালিকারাই ৷ গত দু'বছরে সাতটি নাবালিকার বিয়ে আটকে নজির গড়েছে তারা ৷

করোনাকালে দ্বিগুণ হয়েছিল নাবালিকা বিয়ে ও নারীপাচার ৷ আয় কমে যাওয়ায় সংসার চালাতে না পেরে বাড়ির মেয়েদের দ্রুত বিয়ে দিয়ে দিতে উদ্যত হতেন বাবা-মায়েরা ৷ অনেকে আবার লোভের তাড়নায় হত পাচারের শিকার ৷ স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা পাওয়ার অফ গার্লস গ্রামে গ্রামে ঘুরে মানুষকে বুঝিয়ে এই দুই বেআইনি কাজের বিরুদ্ধে সংগ্রাম শুরু করেছে ৷ নকশালবাড়ি, ফাঁসিদেওয়া, খড়িবাড়ির প্রত্যন্ত গ্রামে গ্রামে ঘুরে প্রচার চালাচ্ছে তারা ৷

নাবালিকার বিয়ে রুখতে অদম্য লড়াই রিয়া-পূজা-মামনিদের

এই কাজে সমাজের একাংশের বাধার মুখেও পড়তে হচ্ছে তাদের ৷ আসছে হুমকি (Siliguri child marriage)৷ তবে তাতে এতটুকুও না দমে মাইকিং করে, পথনাটিকা করে, বাড়ি বাড়ি গিয়ে বুঝিয়ে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে রিয়া, পূজা, মামনিরা ।

লড়াইটা শুরু হয়েছিল 2018 সালে । খড়িবাড়ি ব্লকের বাতাসী এলাকার প্রত্যন্ত গ্রাম সুকানু পালপাড়া । সেই গ্রামের কেউ স্কুল পড়ুয়া আবার কেউ কলেজে পড়ে ৷ তারাই এখন এলাকার বাঘিনী । কারণ তাদের ভয়ে আর কোনও পরিবার নিজের বাড়ির নাবালিকার বিয়ে দিতে পারে না । কোথাও নাবালিকার বিয়ে হচ্ছে শুনলেই পৌঁছে যায় তারা । বিয়ে রুখে দিয়ে তারা উদ্ধার করে নাবালিকাকে ।

2018 সালে পাওয়ার অফ গার্লসের সংখ্যাটা আট থেকে দশ জন হলেও এখন সেই দলের সদস্য সংখ্যা আরও বেড়েছে ৷ এখন প্রতিটি গ্রামে কাজ করছে অন্তত আট থেকে দশ জন । এই কাজে অনেক ক্ষেত্রেই পুলিশের উদাসীনতা তাদের কাজ কঠিন করে তোলে । কিন্তু নানা প্রতিকূলতার মাঝেও তারা লড়াই জারি রেখেছে ।

আরও পড়ুন:বাল্য বিবাহ রোধে জুলিমার লড়াই কুর্নিশযোগ্য

পঞ্চম শ্রেণি থেকে কলেজ পড়ুয়া, দলে রয়েছে নানা বয়সের মেয়ে । খোলা আকাশের নিচে আবার কখনও গাছের তলায় তাদের প্রশিক্ষণ চলে । কীভাবে নাবালিকার বিয়ে আটকাতে হয়, কীভাবে পুলিশে অভিযোগ জানাতে হয়, কীভাবে নজরদারি চালাতে হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়, চলে এ সবের প্রশিক্ষণ ৷ দলের এক সদস্য রিয়া সিংহ বলল, "অনেক হুমকি আসে । আগে খুব ভয় পেতাম । কিন্তু এখন আর পাই না । ছয় থেকে সাতটা নাবালিকার বিয়ে আমরা আটকেছি । কখনও বাইরে থেকে নাবালিকাকে বিয়ে করে আনছে আবার কখনও এলাকায় লুকিয়ে লুকিয়ে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে । খবর পেলেই আমরা পৌঁছে যাই । পুলিশ ও প্রশাসন আমাদের সহযোগিতা করলে আমাদের আরও সুবিধা হয় ।"

স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্য নীলিমা রায় বললেন, "করোনাকালে নাবালিকার বিয়ে অনেকটাই বেড়ে গিয়েছিল । তবুও আমরা চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছি ৷ কোথাও কোনও নাবালিকার বিয়ে হলেই মেয়েরা পৌঁছে যায় । নিজেরাই পুলিশ ও চাইল্ড লাইনকে জানায় ।"

নাবালিকা বিয়ের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে রিয়া, পূজা, মামনিরা

বাল্য বিবাহ ও নারীপাচার রুখতে নিরলস লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে গ্রামের মেয়েরা ৷ এই লড়াই খুবই কঠিন ৷ কারণ এই অপরাধে সামিল থাকে তাদের নিজেদের লোকেরাই ৷ তবে হুমকি ও চোখরাঙানিকে উপেক্ষা করে আরও সচেতনতা গড়ে তুলে এই অপরাধের বিরুদ্ধে দৃঢ় প্রতিরোধ গড়ে তোলাটাই বড় চ্যালেঞ্জ পূজা, রিয়া ও মামনিদের কাছে ৷

আরও পড়ুন:Child Marriage Stopped: দেগঙ্গায় নাবালিকার বিয়ে রুখল পুলিশ, আসর থেকে পালাল বরযাত্রীরা

Last Updated : May 18, 2022, 10:21 PM IST

ABOUT THE AUTHOR

...view details