গজলডোবা, 11 অক্টোবর : গজলডোবায় হেলিপ্যাড তৈরি ইশুতে জোর ধাক্কা খেল রাজ্য । গজলডোবায় প্রস্তাবিত হেলিপ্যাড প্রকল্পে পরিবেশের ছাড়পত্র না মেলা অবধি কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিল জাতীয় পরিবেশ আদালত (ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইবুনাল) । জোর করে কাজ জারি রাখায় এনিয়ে রাজ্যের তিন দপ্তরকে শোকজ় করেছে গ্রিন ট্রাইবুনাল ।
পরিবেশবিদ সুভাষ দত্তর দায়ের করা মামলায় গজলডোবায় প্রস্তাবিত হেলিপ্যাড প্রকল্পে স্থগিতাদেশ দিল গ্রিন ট্রাইবুনাল । বন বিভাগের মুখ্য বনপাল, পর্যটন ও নগরোন্নয়ন দপ্তরের সচিবকেও শোকজ় করা হয়েছে ৷ জানাতে বলা হয়েছে, পরিবেশবিধি না মেনে কেন কাজ চালানো হয়েছিল। এক মাসের মধ্যে জবাব দিতে হবে ৷
9 অক্টোবর জারি হওয়া ওই নির্দেশিকা আজই সামনে এসেছে । নির্দেশিকা জারি করেছেন গ্রিন ট্রাইবুনালের বিচারপতি এসপি ওয়াংদি এবং সত্যবান সিং গারবিয়ালের ডিভিশন বেঞ্চ ।
পরিবেশবিদ সুভাষ দত্ত জানান, তিনি গজলডোবার পর্যটন প্রকল্প 'ভোরের আলো' ঘুরে দেখেছেন । পরিবেশবিধি না মেনে কাজ করা হচ্ছে জোর করে । সেখানে হেলিপ্যাড তৈরি হচ্ছে ৷ তার পাশেই একটি সরকারি পাখিরালয় রয়েছে ৷ প্রশ্ন তোলা হয়েছিল, সেখানে পাখিরা আকাশে উড়বে কীভাবে? বলেন, "সওয়াল-জবাব শুনে ওই কাজের উপর স্থগিতাদেশ দিয়েছে আদালত ৷"
এ বিষয়ে পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, "NGT যে নির্দেশ দেবে তা আমরা পালন করব ৷ আমি এখনও অর্ডারটা দেখিনি ৷ একটা শো কজ় করেছে ৷ কিছু বিষয় জানতে চায় NGT ৷ পুজোর ছুটির পরে যে তারিখ দিয়েছে তার মধ্যে পুরো বিষয়টা আমরা হলফনামা দিয়ে জানিয়ে দেব ৷ পাখিবিতানের কাছে কোনও নির্মাণ করা হচ্ছে না ৷ কিছুটা দূরে তৈরি করা হচ্ছে হেলিপ্যাড ৷ প্রথমে যে জায়গাটা ঠিক করা হয়েছিল সেটা নিয়ে BJP-র নেতৃত্বে আন্দোলন হয়েছিল ৷ আমরা কোনও সংঘাতে যাইনি ৷ তবে NGT-র নির্দেশ আমরা অনুসরণ করব ৷" তিনি আরও বলেন, "সুভাষ দত্তর কাজ আদালতে যাওয়া ৷ আমরা তাঁকে আদালতে যাওয়া থেকে আটকাতে পারি না ৷ উন্নয়ন ও প্রকৃতির মধ্যে ভারসাম্য রেখে কাজ করতে হবে ৷ "
গজলডোবায় প্রস্তাবিত 'ভোরের আলো' প্রকল্পে ইতিমধ্যেই কয়েক'শ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে রাজ্য । তৈরি হয়েছে রাস্তাঘাট । 'ভোরের আলো'-য় 6 টি কটেজ চালু হয়েছে । প্রস্তাবে রয়েছে সেখানে বেশ কিছু হোটেল নির্মাণের কথাও ৷ সেইসঙ্গে গল্ফ কোর্স ও হেলিপ্যাডের প্রস্তাবও রয়েছে ।
দিনকয়েক আগে গজলডোবা যাওয়ার পথে নির্মীয়মাণ উড়ালপুলের জন্য জমি অধিগ্রহণ কমতে গিয়েও বাধার মুখে পড়েছিল রাজ্য । হেলিপ্যাড প্রকল্প নিয়েও বিক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব । জমি বাঁচাও কমিটির সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে বিকল্প জমি ও উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিয়ে নির্মীয়মাণ উড়ালপুলের পাশে জমি অধিগ্রহণ সমস্যা মিটেছিল । পাশাপাশি প্রস্তাবিত হেলিপ্যাড প্রকল্পটি সংশ্লিষ্ট এলাকায় না করে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছিল রাজ্যের পর্যটন দপ্তর ।