শিলিগুড়ি, 30 সেপ্টেম্বর: "ভারতীয় চা পর্ষদ (Tea Board of India) যদি এখনও শিল্পপতি সঞ্জয় বনসলের (Sanjay Bansal) হাতে থাকা 10টি চা বাগান (Tea Garden) অধিগ্রহণ না করে, তাহলে পরিষদের দরজায় তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হোক !" শুক্রবার শিলিগুড়িতে (Siliguri) আয়োজিত একটি সাংবাদিক সম্মেলনে এই মন্তব্য করলেন কার্শিয়াঙের বিধায়ক তথা বিজেপি নেতা বিষ্ণু প্রসাদ শর্মা (Bishnu Prasad Sharma) ৷
এদিন বিষ্ণু জানান, বর্তমানে দার্জিলিঙের 10টি চা বাগান সঞ্জয় বনসলের অধীনে রয়েছে ৷ তিনি টাকার বিনিময়ে ওই বাগানগুলি 'লিজ' নিয়েছেন ৷ বাগান দেখিয়ে একের পর এক ঋণ নিয়েছেন ৷ কিন্তু, বাগানের বা সেখানকার শ্রমিকদের স্বার্থে কোনও পদক্ষেপ করেননি ৷ পুজোর আগে শ্রমিকদের বোনাস দেওয়া দূরে থাক, তাঁদের রোজের পারিশ্রমিকও ঠিক মতো দেওয়া হচ্ছে না ৷ ফলে উৎসবের মরশুমে একপ্রকার অনাহারে দিন কাটছে চা শ্রমিকদের ৷ বিষ্ণুর দাবি, জিটিএ-এর মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক অনিত থাপাকে গোটা ঘটনা জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি ৷ তিনি চা বাগানের শ্রমিকদের কল্যাণে তহবিল তৈরির নামে আমজনতার কাছ থেকে যে টাকা তুলেছেন, তাও শ্রমিকদের স্বার্থে ব্যবহার করেননি ৷
আরও পড়ুন: চা বাগান শ্রমিকদের পরিবারের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যার সমাধানে বৈঠক চা পর্ষদের
এই প্রেক্ষাপটে চা পর্ষদের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন বিষ্ণু ৷ তাঁর মতে, অবিলম্বে সংশ্লিষ্ট চা বাগানগুলি অধিগ্রহণ করা উচিত ৷ এদিকে, পুজোর সঞ্জয় বনসলের চা বাগানগুলি ফেলে পালিয়েছেন আধিকারিকরা ৷ এর মধ্যে একটি চা বাগানের ম্য়ানেজারকে ধরে ফেলেন স্থানীয় বাসিন্দারা ৷ তাঁকে আটকে রাখা হয়েছে বলে দাবি বিষ্ণুর ৷ আর তা নিয়েই চড়ছে রাজনীতির পারদ ৷
এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা বলেন, "সঞ্জয় বনসল খুব পরিকল্পিতভাবে এসব করছেন ৷ প্রথমে রাজ্য সরকারের কাছ থেকে মাত্র 31 কোটি টাকার বিনিময়ে মোট 14টি চা বাগান লিজ নেন তিনি ৷ তারপর চারটি চা বাগান অবৈধভাবে বিক্রি করে দেন ৷ এরপর বাকি 10টি বাগানও অবহেলায় ফেলে রেখেছেন ৷ পরবর্তীতে রুগ্ন চা বাগানের উন্নয়নের নাম করে ব্যাংক থেকে 110 কোটি টাকা ঋণ নেন সঞ্জয় ৷ পরে একটি বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থা থেকে আরও 400 কোটি টাকা ঋণ নেন ৷ এই 510 কোটি টাকা হাতে আসার পর 14টি নতুন সংস্থা খোলেন তিনি ৷ কিন্তু, চা বাগান ও সেখানকার শ্রমিকদের কাছে ঋণের সুফল এখনও পৌঁছয়নি ৷"
বিষ্ণুর দাবি, "চারমাস আগেই আমি বিষয়টি আঁচ করে জেলাশাসক ও রাজ্য সরকারকে জানিয়েছিলাম ৷ কিন্তু আমার কথায় কর্ণপাত করা হয়নি ৷ চা বাগানের শ্রমিকদের উন্নয়নের জন্য জিটিএ-এর কার্যনির্বাহী আধিকারিক অনিত থাপা প্রায় আড়াই কোটি টাকা চাঁদা তুলেছিলেন ৷ এখন সেই টাকা ওই 10টি চা বাগানের শ্রমিকদের দেওয়া হোক ৷ পুজোর মুখে শ্রমিকদের জামাকাপড় কেনা দূরে থাক, খাবার পর্যন্ত নেই ৷"