পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

By

Published : Jun 19, 2020, 3:25 AM IST

ETV Bharat / city

কোরোনা প্রতিষেধক পরীক্ষায় নিজের শরীর ব্যবহারের সিদ্ধান্ত যুবকের

কোরোনার জন্য দেশে চলছে প্রতিষেধক তৈরির গবেষণা ৷ আর প্রতিষেধক পরীক্ষার জন্য প্রয়োজন মানব শরীর ৷ সেজন্য কোরোনার টিকা প্রয়োগে নিজের শরীর কার্যত দান করেছেন মালদার প্রত্যন্ত এক গ্রামের যুবক ৷ এই সিদ্ধান্তে খুশি তাঁর বাবা-মা ৷

prophylactic test of corona
কোরোনার টিকা প্রয়োগে শরীর দান

মালদা,18 জুন : বিশ্বজুড়ে কোরোনাভাইরাস থেকে মুক্তির উপায় খুঁজছে গোটা পৃথিবীর প্রতিটি দেশেই শুরু হয়েছে কোরোনার প্রতিষেধক তৈরির গবেষণা ৷ সেই তালিকায় রয়েছে ভারতও ৷ কিন্তু শুধু টিকা তৈরি করলেই হবে না ৷ মানব শরীরে তার প্রয়োগ অত্যন্ত জরুরি ৷ তারপরেই মানবদেহে সেই টিকা আদৌ কাজ করবে কিনা তা নিয়ে নিশ্চিত হতে পারবেন বিজ্ঞানীরা ৷ একথা কারও অজানা নয়, যার শরীরে সেই টিকা পরীক্ষার জন্য প্রবেশ করানো হবে, তাঁর জীবন সংশয়ও হতে পারে৷ কিন্তু সব জেনেও কোরোনার টিকা প্রয়োগে নিজের শরীর কার্যত দান করেছেন মালদা প্রত্যন্ত এক গ্রামের যুবক ৷ এর জন্য তিনি নিজের নাম ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিকেল রিসার্চে নথিভূক্তও করেছেন ৷

মালদার বামনগোলা ব্লকের প্রত্যন্ত পাকুয়াহাট সালালপুর গ্রামের বাসিন্দা দেবাশিস বাইন ৷ বয়স 28 বছর ৷ পাকুয়াহাট ডিগ্রি কলেজ থেকে স্নাতক হয়ে এখন ছোটোখাটো ব্যবসা করেন ৷ রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত ৷ তিনি অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের বামনগোলা ব্লক সম্পাদক ৷ বাবা শ্যামলচন্দ্র বাইন পাকুয়াহাট স্কুলের পার্শ্বশিক্ষক ৷ মা খুকু বাইন নিতান্তই গৃহবধূ ৷ একেবারেই নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার ৷ এহেন দেবাশিসের এই সিদ্ধান্ত অবাক করেছে এলাকার মানুষকে ৷ দেবাশিস বলেন, “গোটা বিশ্বের সঙ্গে ভারতবর্ষেও কোরোনা মহামারীর আকার নিয়েছে৷ লাখ লাখ মানুষ এই ভাইরাসে সংক্রামিত ৷ অথচ এই রোগের কোনও প্রতিষেধক এখনও বের হয়নি ৷ বিজ্ঞানীরা সেই প্রতিষেধক তৈরির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ৷ ভারতীয় বিজ্ঞানীরাও সেই চেষ্টা চালাচ্ছেন ৷ কিন্তু প্রতিষেধক মানুষের শরীরে প্রবেশ করানোর আগে তার সফল পরীক্ষা চাই ৷ তাই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এই পরীক্ষার জন্য আমি নিজের শরীর দান করব ৷ তার জন্য আমি ইতিমধ্যেই অনলাইনে ICMR-এ নিজের নাম নথিভূক্ত করেছি৷ আমার মনে হয়, কোরোনার টিকা আবিষ্কারের জন্য যুব সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে ৷ একাধিকবার এই টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ হবে ৷ তার জন্য মানব শরীর প্রয়োজন ৷ আমার শরীর যদি দেশবাসীর জন্য কোনও কাজে লাগে, তবে আমি গর্বিত হব৷”

ছেলের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন দেবাশিসের বাবা-মা’ও ৷ শ্যামলবাবু বলেন, “আমার ছেলে যদি দেশের কাজে লাগে তাহলে সেটা খুব ভালো হবে ৷ আমাদের কাছেও গর্বের বিষয় ৷ ছেলের এই সিদ্ধান্তে আমার কোনও আপত্তি নেই ৷ সবাই যদি এভাবে সাহস করে মানুষের পাশে এসে দাঁড়ায়, সেটা আরও ভালো কথা ৷ আমি নিশ্চিত, কোরোনা যুদ্ধে একজনকে এগিয়ে যেতে দেখে আরও অনেকে উদ্বুদ্ধ হবে ৷” খুকুদেবীর বক্তব্য, “ছেলের সিদ্ধান্তের কথা শুনে প্রথমে একটু ভয় পাচ্ছিলাম৷ কিন্তু এখন ওর সিদ্ধান্তে গর্ব বোধ করছি ৷ আমার ছেলে যদি দেশের কাজে লাগে, তার থেকে আনন্দের আর কী আছে !”

ABOUT THE AUTHOR

...view details