মালদা, 24 অগস্ট : বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে জেলা তৃণমূলে যেন ঘর ভাঙার পালা চলছে । দলের নির্দেশ উপেক্ষা করেই দলীয় গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানদের অপসারিত করছেন তৃণমূল সদস্যরা । তার জন্য বিজেপির হাত ধরতেও ছুৎমার্গ নেই কারোও । আজও তার প্রমাণ মিলেছে রতুয়া-1 নম্বর ব্লকের দেবীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে । বিজেপির সদস্যদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের প্রধান পঙ্কজ মিশ্রকে অপসারিত করেছেন শাসকদলের সদস্যরাই । তবে সব ছাপিয়ে সামনে উঠে এসেছে কালিয়াচক-2 নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির ঘটনা । মঙ্গলবার ওই পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূলের সভাপতিকেও অপসারণ করেছেন দলীয় সদস্যরা । এখানেও তাঁরা বিজেপির হাত ধরতে কার্পণ্য করেননি । এই ঘটনা দলীয় গোষ্ঠীকোন্দলের উদাহরণ বলে মন্তব্য করেছেন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি । যদিও এই ঘটনা নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে নারাজ মোথাবাড়ির বিধায়ক, রাজ্যের তিনটি দফতরের প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন ।
দীর্ঘদিন ধরেই কালিয়াচক-2 নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি টিংকু রহমান বিশ্বাসের বিরুদ্ধে দলবিরোধী কাজকর্মের অভিযোগে সরব হয়েছিলেন সংখ্যাগরিষ্ঠ তৃণমূল সদস্য । বিধানসভা নির্বাচনের আগে সভাপতির বিরুদ্ধে বেশ কয়েক কোটি টাকার টেন্ডার দুর্নীতি, দলীয় প্রার্থী সাবিনা ইয়াসমিনের বিরোধিতা করার অভিযোগও ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে । অবশেষে সভাপতির বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আসেন পঞ্চায়েত সমিতির সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য । এর বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন সভাপতি । কিন্তু 19 অগস্ট আদালতের তরফে অনাস্থা প্রক্রিয়া জারি রাখার নির্দেশ দেওয়া হয় । এদিন ছিল সেই অনাস্থা প্রস্তাবের তলবি সভা । সভাকে কেন্দ্র করে পঞ্চায়েত সমিতি চত্বর পুলিশি নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয় । দফতরের 200 মিটার এলাকায় জারি করা হয় 144 ধারা । শেষ পর্যন্ত অনাস্থা নিয়ে আসা পঞ্চায়েত সমিতির 14 জন সদস্য দফতরে উপস্থিত হন । সভাপতির পক্ষের কেউ সভায় উপস্থিত না হওয়ায় 14-0 ভোটে প্রস্তাব পাশ হয়ে যায় ।
22 আসনবিশিষ্ট এই পঞ্চায়েত সমিতিতে গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল 13টি, বিজেপি 5টি, কংগ্রেস 2টি এবং সিপিএম ও সিপিআই 1টি করে আসন পেয়েছিল । আজ সভাপতির বিরুদ্ধে তৃণমূলের সাত, বিজেপির পাঁচ ও কংগ্রেসের দুই সদস্য ভোট দিয়েছেন ।