পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / city

পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের তৃণমূল নেতার - তৃণমূল নেতার পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ

গ্রামের দু পক্ষের বিরোধে এক পক্ষের কয়েক জনের বিরুদ্ধে আদালতের মাধ্যমে ওয়ারেন্ট জারি করেন তদন্তকারী পুলিস অফিসার । ওয়ারেন্ট জারি হওয়া অভিযুক্তদের মধ্যে এলাকার তৃণমূল নেতা মেরাজুল ইসলামের তদন্তকারী অফিসারের বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ করলেন ।

complaint against police officer
পুলিস অফিসারের বিরুদ্ধে ঘুষের অভিযোগ

By

Published : Jun 9, 2020, 1:51 AM IST

মালদা, 8 জুন : রক্ষকই ভক্ষক! এক পুলিশের অফিসারের বিরুদ্ধে বিশাল অঙ্কের টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠল চাঁচলে ৷ এনিয়ে চাঁচল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন খোদ শাসকদলের নেতা ৷ গোটা ঘটনায় তীব্র আলোড়ন শুরু হয়েছে শাসকদলের অন্দরমহলে ৷ সাধারণ মানুষেরও চর্চায় উঠে আসছে এই ঘটনা ৷ অভিযোগের তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেেন চাঁচল মহকুমা পুলিশ আধিকারিক ৷ যদিও এই বিষয়ে অভিযুক্ত পুলিশ অফিসার কোনও মন্তব্য করতে চাননি ৷


অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারের নাম অনিমেষ কর্মকার ৷ তিনি ASI পদে কর্মরত ৷ বর্তমানে তিনি চাঁচল থানায় কর্মরত ৷ তাঁর বিরুদ্ধে 80 হাজার টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ৷ অভিযোগ তুলেছেন ওই এলাকার তৃণমূল নেতা মেরাজুল ইসলাম ৷ শুধু অভিযোগ তোলাই নয়, তিনি আজ অনিমেষ কর্মকারের বিরুদ্ধে চাঁচল থানায় অভিযোগও দায়ের করেছেন ৷ মেরাজুল সাহেব বলেন, “লকডাউন চলাকালীন প্রায় একমাস আগে স্থানীয় আশ্বিনপুর গ্রামে একটি মরা সাপ নিয়ে গ্রামবাসীদের দুই পক্ষের মধ্যে বচসা বাধে ৷ ওই মরা সাপ থেকে গন্ধ বের হওয়া নিয়েই এই বিবাদ ৷ সামান্য এই ঘটনার জেরে গ্রামে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষও হয় ৷ তারপর দুই পক্ষই একে অন্যের বিরুদ্ধে চাঁচল থানায় অভিযোগ দায়ের করে ৷" দুই পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশি তদন্ত শুরু হয় ৷ তদন্তকারী অফিসার ছিলেন অনিমেষ কর্মকার ৷ তিনি আদালতের মাধ্যমে মেরাজুল ও আরও কয়েকজনের নামে ওয়ারেন্ট জারি করেন ৷ মেরাজুলের দাবি, " আমি অনিমেষবাবুকে ফোন করে বিরোধী পক্ষের অভিযুক্তদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে বলি ৷ তিনি আমাদের থানায় ডাকেন ৷ থানায় আসলে তিনি সাফ জানান, টাকা ফেললেই কাজ হবে ৷ টাকা না দিলে কোনও কাজ হবে না ৷ 80 হাজার টাকা দিলে তিনি আমাদের লোকজনের বিরুদ্ধে রুজু করা ধারাগুলি পালটে দেবেন ৷ আমি সাক্ষী রেখে অনিমেষবাবুর হাতে 80 হাজার টাকা তুলে দিই ৷ কিন্তু তারপরেও তিনি বিরোধী পক্ষের কারও বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেননি ৷ উলটে আমাদের লোকজনকে হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন ৷ এনিয়ে আমি অনিমেষবাবুর সঙ্গে কথা বললেও তিনি আমার কোনও কথা কানে তুলতে রাজি নন ৷ তাই আজ আমি ওই পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে চাঁচল থানায় ঘুষ নেওয়ার লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি ৷ এনিয়ে আমি আইসির সঙ্গেও কথা বলেছি৷ আমরা ঘটনাটি দলের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও জানাচ্ছি ৷ আমি জানি, এভাবে ঘুষ দেওয়া আমার সঠিক কাজ হয়নি ৷ কিন্তু অনিমেষবাবুর কথায় চাপে পড়ে তাঁকে ঘুষ দিতে বাধ্য হয়েছিলাম ৷ আমাদের পক্ষের আট অভিযুক্ত প্রত্যেকে10 হাজার টাকা করে দিয়েছিল৷”

এই ঘটনা নিয়ে অভিযুক্ত পুলিশ অফিসার অনিমেষ কর্মকার কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি ৷ তবে চাঁচল মহকুমা পুলিশ আধিকারিক সজলকান্তি বিশ্বাস বলেন, “এখনও আমার কাছে অভিযোগপত্র পৌঁছোয়নি ৷ অভিযোগ হয়ে থাকলে সমস্ত কিছু খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে ৷ অভিযোগ সঠিক হলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে ৷” এদিকে এনিয়ে এলাকার আরও এক তৃণমূল নেতা, জেলা পরিষদ সদস্য সামিউল ইসলাম বলেন, “কোরোনা আবহে পুলিশ ও প্রশাসনের কর্মীরা নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন ৷ তার মধ্যে এই পুলিশ অফিসার যে কাজ করেছেন, তা মেনে নেওয়া যায় না ৷ এই অফিসার রাজ্য সরকারেরই বদনাম করছেন ৷ আমরা চাই, গোটা ঘটনায় পুলিশ কর্তৃপক্ষ যথাযথ তদন্ত করে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করুক ৷”

ABOUT THE AUTHOR

...view details