মালদা, 10 সেপ্টেম্বর:আশাকর্মীর পদে চাকরি (Asha Worker Job) পাইয়ে দিতে দেড় লক্ষ দাবি করার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের এসটি মোর্চার সভাপতির বিরুদ্ধে । ইতিমধ্যে সেই অডিয়ো ক্লিপ (Viral Audio) সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে । যদিও সেই অডিয়ো ক্লিপের সত্যতা যাচাই করেনি ইটিভি ভারত ।
এই টাকা দিতে রাজি না-হওয়ায় স্ত্রীর চাকরি হয়নি বলে অভিযোগ তুলেছেন ওই চাকরিপ্রার্থীর স্বামী। অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা । অডিয়ো ক্লিপের ভয়েজ ম্যাচ করলে ওই নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে, দাবি তৃণমূলের । রাজনীতির বদলে অর্থনীতি করছে তৃণমূল বলে কটাক্ষ বিজেপির ।
হবিবপুরের পলাশবনা গ্রামের বাসিন্দা ললিত মাহাতো । এলাকায় তিনি তৃণমূল কর্মী হিসেবে পরিচিত । জানা গিয়েছে, তাঁর স্ত্রী জয়ন্তী মুর্মু এসটি কোটার আশাকর্মীর পদের জন্য আবেদন করেছিলেন । অভিযোগ, সেই পদের চাকরি পাইয়ে দিতে তৃণমূলের এসটি মোর্চার সভাপতি চুনিয়া মুর্মু দেড় লক্ষ টাকা দাবি করেন । সেই টাকা না দেওয়ায় সবচেয়ে বেশি নম্বর থাকা সত্ত্বেও জয়ন্তী মুর্মুর চাকরি হয়নি বলে অভিযোগ ললিতের ।
ললিত মাহাতো বলেন, "হবিবপুর ব্লকের ধূমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের একটি সেন্টারে এসটি কোটায় একটি আশাকর্মীর পোস্ট ছিল । সেই পদের জন্য আমার স্ত্রী আবেদন করে । অ্যাকাডেমিক প্রাপ্ত নম্বর ওপর 90 শতাংশ ও ইন্টারভিউয়ে 10 শতাংশ নম্বরের ভিত্তিতে নিয়োগ হওয়ার কথা ছিল । যতদূর জানি, তিনজন আবেদনকারীর মধ্যে আমার স্ত্রীর নম্বর সবচেয়ে বেশি ছিল (TMC leader demands lakh of rupees for job to Asha worker) ।
তিনি আরও বলেন, "যেদিন ইন্টারভিউ হয় তার আগের দিন তৃণমূলের এসটি মোর্চার সভাপতি চুনিয়া মুর্মু আমাকে ফোন করেন । ফোনে উনি জানান, স্ত্রীকে ওই চাকরি পাইয়ে দিতে দেড় লক্ষ টাকা দিতে হবে । ইন্টারভিউয়ের আগেই 50 হাজার টাকা দিতে হবে । আমি ঘুষ দিয়ে চাকরি নিতে কোনোদিনই রাজি ছিলাম না । তাই আমি সেই প্রস্তাব প্রত্যাখান করি । সেই কারণেই নম্বর বেশি থাকা সত্ত্বেও আমার স্ত্রীর চাকরি হয়নি । নম্বর কম থাকা সত্ত্বেও একজন ওই পদের চাকরি যোগ দিয়েছে । এ নিয়ে আমি মহকুমাশাসকের কাছে অভিযোগ জানিয়েছি ।"
ঘটনা প্রসঙ্গে রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী বলেন, "যে অডিয়ো ক্লিপ ভাইরাল হয়েছে তা চুনিয়া মুর্মুর কি না, সেটা এখনও যাচাই করা হয়নি । যদি সেই অডিয়োতে চুনিয়ার মুর্মুর গলার আওয়াজ প্রমাণিত হয়, তবে দল নিশ্চিতভাবে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে । একজন পার্টির দায়িত্ব থেকে দলকে বদনাম করবে এটা মেনে নেওয়া হবে না ।"
তৃণমূল নেতার অডিয়ো ভাইরাল আরও পড়ুন:প্রেমিকার দাদাকে খুন করতে ইউটিউব দেখে বোমা তৈরি, ধৃত যুবক
বিজেপির দক্ষিণ মালদা সাংগঠনিক জেলা সম্পাদক অম্লান ভাদুড়ি বলেন, "তৃণমূল চাকরি দেওয়ার কোম্পানি খুলেছে । শিক্ষা থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য বিভিন্ন দফতরে চাকরি দিচ্ছে এই এজেন্সি । আর এই এজেন্সির স্টাফ হচ্ছেন তৃণমূলের নেতারা । তৃণমূলের মন্ত্রীদের নির্দেশে এই স্টাফরা সমস্ত জায়গা থেকে চাকরি দেওয়ার নামে টাকা তুলেছে । কিছু লোক টাকা দিয়েছে, চাকরি হয়েছে । কিছু লোক টাকা দিলেও, চাকরি হয়নি । এরকম অনেক ঘটনা ঘটেছে । চাকরি নামে তোলা টাকার পাহাড় বাংলার মানুষ দেখেছে । এ নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই । তৃণমূলের লোকজন রাজনীতির বদলে অর্থনীতি করছে ।"