মালদা, 16 জুন : এবার টাকা নিয়ে চাকরির ভুয়ো নিয়োগপত্র দেওয়ার অভিযোগ উঠল খোদ জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা মালতিপুরের বিধায়ক আবদুর রহিম বকসির বিরুদ্ধে (TMC district president of Maltipur)। এনিয়ে 14 জুন জেলাশাসকের দফতরে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন পাঁচ মহিলা । সেই চিঠি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গিয়েছে । যদিও আবদুর রহিমের বক্তব্য, তাঁকে কালিমালিপ্ত করতেই এসব মিথ্যে অভিযোগ আনা হচ্ছে । তবে এনিয়ে প্রবল রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়েছে জেলায় ।
জেলাশাসকের কাছে যে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়েছে, তাতে অভিযোগকারী হিসাবে নাম রয়েছে গাজোল ব্লকের উত্তর আলিনগরের বাসিন্দা ফরিদা খাতুন-সহ মোট পাঁচজনের । চিঠিতে বলা হয়েছে, আরএসপি দলে থাকার সময় অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীর চাকরি দেওয়ার নাম করে আবদুর রহিম তাঁদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নেন । তার কিছুদিন পর তিনি সরকারি নিয়োগপত্রও তাঁদের হাতে তুলে দেন। সেই নিয়োগপত্র নিয়ে তাঁরা শিশুকল্যাণ দফতরের প্রোজেক্ট অফিসারের সঙ্গে দেখা করেন । কিন্তু প্রোজেক্ট অফিসার জানিয়ে দেন, ওই নিয়োগপত্র ভুয়ো । তাঁরা দফতর থেকে ফিরে আবার আবদুর রহিমের সঙ্গে দেখা করেন । তিনি তাঁদের প্রতিশ্রুতি দেন, তাঁদের চাকরির জন্য তিনি চেষ্টা করে যাচ্ছেন । কিন্তু তাঁরা আবদুর রহিমের কাছে টাকা ফেরত চাইলে, তিনি তাঁদের নানা টালবাহানায় ঘোরাতে থাকেন (TMC leader accused for giving fake govt job appointment letters)।
আরও পড়ুন :Malda Flood Relief Corruption: গ্রুপ-ডি কর্মচারী অ্যাকাউন্টে বন্যাত্রাণের 69 লক্ষ টাকা! দুর্নীতির অভিযোগে বিডিও-র বিরুদ্ধে মামলা
সোশ্যাল মিডিয়ায় এই চিঠি ছড়িয়ে পড়তেই তোলপাড় পড়ে যায় জেলার রাজনৈতিক মহলে । এই মুহূর্তে কলকাতায় রয়েছে আবদুর রহিম । একসময় তিনি আরএসপির দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা ছিলেন । বছর কয়েক আগে শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরে তৃণমূলে যোগ দেন । বর্তমানে দলের জেলা সভাপতি । আবদুর রহিম ফোনে জানিয়েছেন, তাঁকে এবং তাঁর দলকে কালিমালিপ্ত করতেই এই মিথ্যে অভিযোগ করা হয়েছে । তিনি টাকা নিয়ে কাউকে ভুয়ো নিয়োগপত্র দিয়ে থাকলে অভিযোগকারীরা তো তাঁর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করতে পারতেন ৷ তিনি জেলায় ফিরে বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেবেন ।
সরকারি চাকরির ভুয়ো নিয়োগপত্র এনিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি । বিজেপির উত্তর মালদা সাংগঠনিক জেলার সভাপতি উজ্জ্বল দত্ত জানিয়েছেন, বাম-কংগ্রেসের দুর্নীতিবাজ নেতারাই এখন তৃণমূলের বড় ভরসা । তাই এমন অভিযোগ ওঠা খুবই স্বাভাবিক । সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র বলেন, "শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে কতটা দুর্নীতি হয়েছে তা রাজ্যবাসী দেখছেন । তাই এমন ঘটনা এখন ওই দলের নেতাদের কাছে জলভাত ।"
আরও পড়ুন :Malda TMC Leader: ভিন রাজ্যে দুর্ঘটনায় আহত শ্রমিক, নেতার মানবিক মুখ দেখল মালদা
তবে এই চিঠির সত্যতা কতটা, সেটাই জানতে চাইছেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী । তিনি বলেন, "আগে এই চিঠির সত্যতা সাইবার সেল দিয়ে প্রমাণ করা হোক । তারপরেই এনিয়ে কোনও কথা বলা যাবে ।" যদিও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা প্রশাসনের এক কর্তা অভিযোগের প্রাপ্তি স্বীকার করে জানিয়েছেন, অভিযোগ যখন হয়েছে, তখন তার তদন্ত হবেই ।