মালদা, 3 জানুয়ারি : প্রবল শীতেও ডেঙ্গির উপদ্রব অব্যাহত। মশারা কি চরিত্র বদলাচ্ছে? উঠছে প্রশ্ন। মশককূলের চরিত্র বদলের কথা স্বীকার করছেন মেডিকেল কর্তৃপক্ষ। জানুয়ারির ঠান্ডায় কাঁপছে গোটা রাজ্য ৷ শীতের দোসর হয়েছে বৃষ্টি ৷ কিন্তু হাড় কাঁপুনি শীতের মধ্যেও ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে ৷ মালদা মেডিকেল ভরতি রয়েছে ডেঙ্গির রোগী ৷ শুধু ডেঙ্গিই নয়, এই শীতে ধরা পড়ছে ম্যালেরিয়া সহ অন্যান্য মশাবাহিত রোগও ৷
প্রবল শীতেও ডেঙ্গির উপদ্রব মশারা কি চরিত্র বদলাচ্ছে? প্রশ্নটা উঠতে শুরু করেছে সব মহলেই ৷ মশা যে চরিত্র বদল করছে তা কার্যত স্বীকার করে নিচ্ছেন মালদা মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যক্ষ ও হাসপাতাল সুপার ৷ তিনি জানাচ্ছেন, প্রবল শীতের মধ্যেও বংশবিস্তার চলছে মশককূলের ৷ ফলে মশাবাহিত রোগ শীতেও পুরোপুরি বন্ধ হয়নি ৷ তবে তার দাপট এখন কিছুটা কম ৷ তাই গ্রীষ্ম, বর্ষা পেরিয়ে শীতে পা রাখা বাঙালির কাছে তাঁর আবেদন, ঠাণ্ডায় মশার কামড় খেতে হবে না ভেবে কেউ যেন মশারি ছাড়া না ঘুমোন ৷ কারণ, ডেঙ্গির মশা এডিস ইজিপ্টি শুধু যে দিনে কামড়ায় তা নয়, এই মশা রাতেও কামড়ায় ৷ মশার উপদ্রব থেকে বাঁচতে সবাইকে নিজের বাড়ি ও এলাকায় জল জমতে না দেওয়ারও পরামর্শ দিয়েছেন তিনি ৷
মালদা মেডিকেল সূত্রে জানা গিয়েছে, দিন সাতেক আগেও হাসপাতালের মেডিকেল ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ছিলেন ৪ জন ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগী ৷ আজ নতুন করে আরও এক রোগীর ডেঙ্গি পড়েছে ৷ ম্যালেরিয়া ও অন্যান্য মশাবাহিত রোগে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরও কয়েকজন ৷ শুধু মেডিকেলই নয়, মশাবাহিত রোগে আক্রান্ত হলে জেলার অন্যান্য সরকারি হাসপাতাল ও নার্সিং হোমগুলিতেও রোগী ভরতি থাকার খবর পাওয়া গিয়েছে ৷ শীতের সময় মশার এমন উৎপাত আগে তেমনভাবে লক্ষ্য করা যায়নি ৷
মালদা মেডিকেলের সহকারী অধ্যক্ষ ও হাসপাতাল সুপার অমিত দাঁ ইটিভি ভারতকে বলেন, “শীতকালে ডেঙ্গি যে হবে না, এমন কোনও কথা নেই ৷ দেখা যাচ্ছে, একজন ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগী দ্বিতীয়বার এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন ৷ তবে ডেঙ্গির বাহক এডিস ইজিপ্টাই প্রজাতির মশার প্রজননগত পরিবর্তন হচ্ছে ৷ তার জন্য পতঙ্গ বিশারদরাও সবাইকে সতর্ক করেছেন ৷ আমরা একটা কথা বলতে পারি, শীত পড়েছে বলেই যে মশারি টাঙাব না, পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকব না, তেমন ভাবলে চলবে না ৷ বাড়ি বা আশেপাশের এলাকায় জল কিছুতেই জমতে দেওয়া যাবে না ৷ ব্যক্তিগত সুরক্ষায় মশারি টাঙিয়ে শুতেই হবে ৷ আমরা সবাইকে সেই আবেদন করছি ৷ বছরের এই সময় মশা তেমন একটা সক্রিয় না থাকার কথা ৷ কিন্তু দেখা যাচ্ছে, এখনও মশককূল ভীষণভাবে সক্রিয় রয়েছে ৷" অমিতবাবু আরও জানান, যখন প্রবল শীতের মধ্যেও ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগীর দেখা মিলছে, তখন নিশ্চিতভাবে ডেঙ্গি আরও অনেকের মধ্যে ছড়িয়ে রয়েছে ৷ শীত পেরিয়ে গরম শুরু হলেই ডেঙ্গি ভাইরাস সক্রিয় হয়ে উঠতে পারে ৷