পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / city

প্রচারে "মন্ত্রী" রবী, কমিশনে বিরোধীরা; 'উন্নয়নে গা জ্বলছে', পালটা তৃণমূলের - congress

উপনির্বাচনের জন্য দলীয় প্রচারে গিয়ে নির্মীয়মাণ স্টেডিয়াম পরিদর্শনে যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ । আর তাই নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘণ করেছেন তিনি একযোগে এই অভিযোগে সরব বিরোধীরা ।

রবীন্দ্রনাথ ঘোষ

By

Published : May 13, 2019, 9:19 PM IST

Updated : May 13, 2019, 11:54 PM IST

মালদা, 13 মে : হবিবপুর বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে প্রচারে এসেছিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ । কিন্তু প্রচারের ফাঁকেই গতকাল তিনি কেন্দপুকুর হাইস্কুলের মাঠে গিয়ে নির্মীয়মাণ স্টেডিয়াম পরিদর্শন করেন । কাজের তদারকি করেন । এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই তাঁর বিরুদ্ধে প্রচারে এসে সরকারি কাজ পরিদর্শন ও তদারকির অভিযোগ এনে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ প্রধান তিন বিরোধী দল । উপযুক্ত প্রমাণ দিয়ে তারা কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছে । যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেন মালদা জেলা তৃণমূল সভাপতি দুলাল সরকার । তাঁর পালটা দাবি, রবীন্দ্রনাথবাবু কোনও নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করেননি ।

আগামী 19 মে রাজ্যের 6টি বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন । নির্বাচন রয়েছে হবিবপুর কেন্দ্রেও । গত শনি ও রবিবার এই বিধানসভা কেন্দ্রের বিভিন্ন এলাকায় ছোটো ছোটো সভা করেছেন রবীন্দ্রনাথ ঘোষ । তাঁর সঙ্গে ছিল দলের জেলা নেতৃত্ব । গতকাল বিকেলে নির্বাচনী প্রচারের ফাঁকেই কেন্দপুকুর হাইস্কুলের মাঠে চলে যান তিনি । ওই মাঠে নির্মাণ করা হচ্ছে একটি স্টেডিয়াম । সেই স্টেডিয়ামের সীমানা প্রাচীর নির্মাণের কাজ চলছে জোরকদমে । সেই কাজের তদারকি করেন । আর এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই বিরোধী শিবির থেকে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে । আজ এই বিষয়টি নিয়ে ETV ভারতের সামনে মুখ খুলেছেন জেলার বিরোধী ও শাসকদলের শীর্ষ নেতারা ।

BJP-র জেলা সভাপতি সঞ্জিত মিশ্র বলেন, "গতকাল রাতেই আমরা বিষয়টি শুনেছি । গতকাল রবিবাবু হবিবপুরের বিভিন্ন এলাকায় পাড়ায় পাড়ায় ঘুরেছেন । নির্বাচনী প্রচারের মধ্যে তিনি যে নির্মীয়মাণ স্টেডিয়াম পরিদর্শনে গিয়ে কাজের তদারকি করেছেন, সেটা আমাদের দলের ছেলেরা দেখেছে । তারা গতকালই রবিবাবুর সামনে এনিয়ে প্রতিবাদ করেছিল । এই কাজ আদর্শ নির্বাচনী আচরণবিধি বহির্ভূত । এই নিয়ে আজই আমরা নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানাচ্ছি । রবিবাবু একজন মন্ত্রী । নির্বাচনী আচরণবিধি নিশ্চয়ই তাঁকে বোঝানোর প্রয়োজন পড়ে না । কিন্তু তিনি মন্ত্রিত্ব ও দলীয় ক্যাডারদের একই পর্যায়ে নামিয়ে নিয়ে এসেছেন । তাছাড়া উনি কোনও নিয়ম নীতির তোয়াক্কা করেন না । দলের নিকৃষ্ট ক্যাডাররা যে কাজ করে, মন্ত্রী হয়ে তিনি একই কাজ করেন ।"

ভিডিয়োয় দেখুন

জেলা কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি কালীসাধন রায় বলেন, "একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসাবে তিনি প্রচারে যেতেই পারেন । কিন্তু মন্ত্রী হিসাবে তিনি এখন কোনও সরকারি কাজ পরিদর্শন করতে পারেন না । আতঙ্ক থেকেই তিনি এই কাজ করেছেন । মালদা জেলা নির্বাচন আধিকারিকও নিজেকে শাসকদলের দাসে পরিণত করেছেন । সব দেখেও তিনি না দেখার ভান করছেন । গোটা বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই আমরা নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছি ।"

CPI(M) জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র আবার মন্ত্রীর রাজনৈতিক জ্ঞান নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন৷ তিনি বলেন, "গতকাল হবিবপুরের কেন্দপুকুরে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তরের মন্ত্রী এসেছিলেন । হবিবপুরে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী 19 মে । নির্বাচনের জন্য গোটা দেশের পাশাপাশি হবিবপুরেও এখন নির্বাচন আচরণবিধি লাগু রয়েছে । আগামী 27 মে পর্যন্ত তা লাগু থাকবে । এই অবস্থায় একজন মন্ত্রী নির্বাচনী প্রচারে দলীয় নেতা হিসাবে আসতেই পারেন । কিন্তু গতকাল তিনি দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে কেন্দপুকুরে রাজ্য সরকারের একটি প্রকল্প পরিদর্শনে যান । নির্বাচনী প্রচার ও সরকারি কাজের তদারকি একসঙ্গে মেলানো যায় না । এতে ভোটারদের প্রভাবিত করার পাশাপাশি নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘণ করা হয়েছে । আমরা এই নিয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ জানাচ্ছি । নির্বাচনী আচরণবিধির বইপত্র সবার কাছে আছে । সেটা মন্ত্রীর কাছেও আছে । আসলে এসব নিয়ে পড়াশোনা করেন না । শেখেন না, জানেনও না ।"

যদিও এই ইশুতে বিরোধীদের সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূলের মালদা জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত সভাপতি দুলাল সরকার । তিনি বলেন, "বিরোধীরা তো বিরোধিতা করবেই । গতকাল উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ উপনির্বাচন উপলক্ষ্যে হবিবপুরে প্রচারে গেছিলেন । তবে তিনি কোথাও মন্ত্রীর প্রোটোকল ব্যবহার করেননি । এমন কী মন্ত্রীর গাড়িও ব্যবহার করেননি । হবিবপুরে সভা করার পর তিনি পার্বতীডাঙায় আরেকটি সভা করতে যাচ্ছিলেন । সেই রাস্তাতেই কেন্দপুকুর পড়ে । রাস্তার পাশেই সেখানে স্টেডিয়াম তৈরি হচ্ছে । তাই পার্বতীডাঙা যাওয়ার পথে তিনি সেখানে দাঁড়িয়ে নির্মীয়মাণ স্টেডিয়ামটি দেখেছেন । তখন সেখানে কোনও সরকারি লোক ছিল না । কোনও মিস্ত্রি কাজ করছিল না । কোনও ঠিকাদারও ছিল না । যে কোনও লোকই কোনও কাজ দাঁড়িয়ে দেখতে পারে । তিনিও সেই কাজ দেখেছেন । সেটা যদি বিরোধীদের গায়ে লাগে তবে তা লাগতেই পারে । আসলে বিরোধীরা ক্ষমতায় থাকলেও সেখানে কোনও উন্নয়ন করতে পারেনি । তাই এখন উন্নয়ন দেখে তাদের গা জ্বলছে । ভোটারদের প্রভাবিত করা হয়নি ।"

Last Updated : May 13, 2019, 11:54 PM IST

ABOUT THE AUTHOR

...view details