পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / city

প্রাইমারি স্কুলে ভার্চুয়াল লার্নিং? আধুনিক প্রাইমারি স্কুলের মডেল মালদার মালিহা প্রাথমিক বিদ্যালয়

অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে পড়ানো হয় খুদে পড়ুয়াদের । আধুনিক প্রাইমারি স্কুলের মডেল মালদার মালিহা প্রাথমিক বিদ্যালয় । কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয়, শিক্ষকদের এই প্রচেষ্টার কথা জানা নেই জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের ৷

By

Published : Jul 18, 2019, 12:33 AM IST

মালিহা প্রাথমিক বিদ্যালয়

মালদা, 17 জুলাই : সরকারি প্রাইমারি স্কুলে ভার্চুয়াল লার্নিংয়ের সুবিধা । অবাক হলেন ? কিন্তু সদিচ্ছা থাকলে যে তাও সম্ভব । মালদার প্রমাণ মালিহা প্রাথমিক বিদ্যালয় ।

ইংরেজবাজার ব্লকের কোতওয়ালি গ্রাম পঞ্চায়েতের দৌলতপুর গ্রামে অবস্থিত মালিহা প্রাথমিক বিদ্যালয় । চালু হয় 1973 সালে । বর্তমানে ছাত্র সংখ্যা 115 জন । শিক্ষক রয়েছেন 5 জন ।

গেটের পাশে রাখা রয়েছে প্রতিদিনের সংবাদপত্র (মালিহা প্রাথমিক বিদ্যালয়)

স্কুলে ঢুকতেই চোখে পড়বে গেটের পাশে রাখা রয়েছে প্রতিদিনের সংবাদপত্র । রয়েছে রিডিং কর্ণার, মাসিক পত্রিকা "ইচ্ছে ডানা", সোপ ব্যাঙ্ক , রবীন্দ্র-নজরুল কক্ষ, ফার্স্ট এইড কর্ণার, ন্যায্য মূল্যে পেন-পেনসিল-খাতার কর্ণার । অডিয়ো ভিশুয়ালের মাধ্যমে পড়ানো হচ্ছে খুদে পড়ুয়াদের । স্কুলে মিড-ডে মিল ঠিকমতো তৈরি হচ্ছে কিনা ? কোনদিন কী রান্না হবে ? খাবার খাওয়ার আগে সবাই ঠিকমতো হাত ধুচ্ছে কিনা ? এইসব দায়িত্ব নিজেদের কাঁধে তুলে নিয়েছে পড়ুয়ারা ।

মালিহা প্রাথমিক বিদ্যালয়

সহ শিক্ষক সুজয়কুমার মণ্ডল জানান, 2010 সালে স্কুলে যোগ দিয়েছিলেন । তখন পড়ুয়া সংখ্যা ছিল কম । যে ক'জন ছিল তারাও ঠিকমতো স্কুলে আসত না । পড়ুয়াদের টানতে নতুন কিছু করার চিন্তা-ভাবনা করা হয় । কিন্তু অর্থাভাবে তা সম্ভব হয়নি । 2016-17 সালে স্কুলের সংস্কারের জন্য কিছু টাকা বরাদ্দ হয় । আরও কিছু টাকা জোগাড় করা হয় । সব মিলিয়ে স্কুলটিকে নতুন করে সাজানো হয় । পরবর্তীকালে গ্রামবাসীরাও আর্থিক সাহায্য করে । পঞ্চায়েতের তরফেও সহযোগিতা মেলে ।

অডিয়ো ভিশুয়াল ক্লাসের পরিকল্পনা সুজয়বাবুর । বলেন, "আমি যখন ছোটোদের বাড়িতে পড়াতাম তখন ইউটিউবে ছবি দেখাতাম ৷ তাতে বাচ্চারা উৎসাহিত হত । তাই আমি অডিয়ো ভিশুয়ালের মাধ্যমে খেলার ছলে ওদের পড়ানোর ব্যবস্থা করেছি । বাচ্চারা আগে স্কুল আসতে চাইত না । কিন্তু তারা এখন নিজে থেকেই স্কুলে আসছে । এর ফলে স্কুলছুটের সংখ্যা এখন শূন্য । আরও অনেক পরিকল্পনা রয়েছে । "

মালিহা প্রাথমিক বিদ্যালয়

স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী নূর খাতুন বলে, "টিভি দেখে পড়তে ভালো লাগে । এতে পড়া মনে থাকে ।" অন্যদিকে স্কুলের ছাত্র সংসদের প্রধানমন্ত্রী, চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র নাসিম শেখের বক্তব্য, " স্কুলের মিড-ডে মিলের রান্না, খাবার খাওয়ার সময় সবাই ঠিকমতো হাত ধুচ্ছে কিনা আমি দেখি । স্কুল থেকে ছাত্রছাত্রীরা যেসব জিনিস কেনে তার হিসাবও আমি রাখি । "

আজকের দিনে সরকারি প্রাথমিক স্কুলের নাম শুনলেই ভ্রূ কোঁচকান অনেকে । সরকারি স্কুলে পড়ানো মানেই বাচ্চাদের ভবিষ্যতের বারোটা বাজা । অধিকাংশ অভিভাবকরা এটাই মনে করেন । আর তাই আজ শুধু শহর নয় প্রত্যন্ত গ্রামেও ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠছে বেসরকারি প্রাইমারি স্কুল । কিন্তু সদিচ্ছা থাকলে যে সরকারি স্কুলও হয়ে উঠতে পারে অত্যাধুনিক তা দেখিয়ে দিয়েছে মালিহা প্রাথমিক বিদ্যালয় ।

কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয়, শিক্ষকদের এই প্রচেষ্টার কথা জানা নেই জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের । সেকথা স্বীকার করেছেন নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক সংসদের এক কর্মী ৷ গোটা বিষয়টি জানানো হয় সংসদের চেয়ারম্যান আশিস কুণ্ডুকে ৷ সব শুনে "মিটিংয়ে ব্যস্ত আছি বলে ফোন কেটে দেন তিনি । " এটা কি সরকারি ব্যবস্থাকে আড়াল করার চেষ্টা চেয়ারম্যানের? হয়তো হতেও পারে ।

ABOUT THE AUTHOR

...view details