মালদা, 2 জুন : আগামী 12 জুন গোটা বিশ্ব জুড়ে পালিত হবে শিশু শ্রমিক বিরোধী দিবস । এই দেশ কিংবা রাজ্যও তার ব্যতিক্রম নয় । ইতিমধ্যে তার তোড়জোড় শুরু হয়ে গিয়েছে প্রশাসনিক মহলে । এ নিয়ে আজ মালদা টাউন হলে একটি বিশেষ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয় (Meeting on child labour organised in Malda)। মালদা জেলার সঙ্গে সেই সভায় অংশ নিয়েছিলেন দুই দিনাজপুর ও মুর্শিদাবাদ জেলার সরকারি প্রতিনিধিরা । শিশু শ্রমিক নির্মূল করতে আগামী 13 জুন কলকাতায় রাজ্য স্তরের এমন আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে ।
ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজেশনের উদ্যোগে 2002 সালের 12 জুন প্রথমবার আন্তর্জাতিক শিশু শ্রমিক বিরোধী দিবস পালিত হয়েছিল । তারপর থেকে প্রতি বছর এই দিনটি সারা বিশ্বে শিশু শ্রমিক বিরোধী দিবস হিসাবে পালিত হয়। শিশু শ্রমিক নির্মূল করতে গোটা বিশ্বেই কঠোর কিছু আইন প্রবর্তিত হয় । এদেশও তার ব্যতিক্রম নয় । তার সুফলও মিলতে শুরু করেছিল । দু’বছর আগেও আগের মতো রাস্তাঘাটে সেভাবে শিশু শ্রমিকের দেখা মিলত না । কিন্তু সব উলটপালট করে দেয় করোনা । ভাইরাসের হামলায় নিম্নবিত্ত পরিবারগুলির অন্ন সংস্থানই সমস্যা হয়ে দেখা দেয় । ফলস্বরূপ আবারও দেখা মিলছে শিশু শ্রমিকদের (Child Labour)। গ্রাসাচ্ছদনের জন্য বাবা-মায়েরাই ছোট ছেলেমেয়েদের কাজের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন ।
শিশু শ্রমিক নির্মূল করতে চলতি বছর রাজ্য সরকার ইউনিসেফের যৌথ উদ্যোগে 30 এপ্রিল থেকে 12 জুন পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে শিশু শ্রমিক বিরোধী অভিযান চালানো হচ্ছে । শিশুদের অধিকার এবং তাদের সুরক্ষা নিয়ে প্রচার চালানো হচ্ছে গ্রামে গঞ্জেও । সেই কর্মসূচিতেই আজ মালদা টাউন হলে চার জেলাকে নিয়ে একটি আলোচনা সভার আয়োজন করা হয় । প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে সেখানে ছিলেন পুলিশ আধিকারিকরাও । সভায় দেখা গিয়েছে কিছু শিশুকেও । তবে মালদা কিংবা বাকি তিন জেলায় বর্তমানে শিশু শ্রমিকের সংখ্যা কত, তার কোনও পরিসংখ্যান শ্রম দফতরের কাছে নেই । কেন এই শিশু শ্রমিকরা কাজ করতে বাধ্য হচ্ছে, করোনা পরবর্তী চরম আর্থিক সংকটে কীভাবে তাদের কিংবা তাদের পরিবারের পেট ভরবে, তারও কোনও বার্তা নেই সংশ্লিষ্ট দফতরের কাছে ।
আরও পড়ুন :Online Exam : কলেজের অনুষ্ঠানে ভিড় জমিয়েও কেন অনলাইন পরীক্ষার দাবি, উঠছে প্রশ্ন
এ নিয়ে জয়েন্ট লেবার কমিশনার (বালুরঘাট) গোপাল বিশ্বাস বলেন, "করোনা প্রাদুর্ভাবের আগে পর্যন্ত শিশু শ্রমিকের সংখ্যা অনেকটাই কমে গিয়েছিল । গোটা রাজ্য, এমনকী দেশেও আমরা সেই ছবি দেখতে পেয়েছিলাম । কিন্তু করোনা পরবর্তী সময়ে ফের শিশু শ্রমিক বেড়ে যাচ্ছে । বর্তমান আর্থ সামাজিক পরিস্থিতি তাদের সেদিকে নিয়ে যাচ্ছে । শিশু শ্রমিকের সংখ্যা যাতে কমানো যায়, তার জন্যই আজকের এই সভা । আমরা বুঝি, আগে তাদের খাবারের ব্যবস্থা করতে হবে । তাদের অভিভাবকদের জন্য কাজের ব্যবস্থা করতে হবে । কিন্তু কাজের সংস্থান তো আমরা আর করতে পারি না । তার জন্য সরকার রয়েছে । আমাদের লক্ষ্য, শিশুদের সমাজের মূল স্রোতে রাখা । একটা বাচ্চা পড়াশোনা আর খেলাধুলোর মধ্যেই থাকবে । কারণ, সেটাই তার কাজ । এর জন্য সবাইকেই এগিয়ে আসতে হবে ।"