মালদা, 8 ফেব্রুয়ারি : দলনেত্রী জানিয়ে দিয়েছেন, পার্থ চট্টোপাধ্যায় আর সুব্রত বক্সীর স্বাক্ষরিত তালিকায় যাঁদের নাম থাকবে, তাঁরাই পৌর নির্বাচনে ঘাসফুলের প্রতীক পাবেন । মালদা জেলায় তৃণমূলের একটি বা দু'টি নয়, তিনটি তালিকা প্রকাশিত হয়েছে । প্রথম দু'টি তালিকা প্রকাশের পর দলীয় বিদ্রোহ প্রকাশ্যে আসতে জেলা তৃণমূল সভাপতি রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকের পর তৃতীয় তালিকা ঘোষণা করেন । সেই তালিকা অনুযায়ীই এখন চলছে শাসকদলের প্রার্থীদের মনোনয়ন জমা দেওয়ার পালা । কিন্তু বিদ্রোহের আগুন এখনও ধিকিধিকি জ্বলছে । দ্বিতীয় তালিকায় নাম থাকলেও কেউ যেমন তৃতীয় তালিকাতেও ব্রাত্য হয়ে পড়েছেন, তেমনই প্রথম তালিকায় নাম থাকা অনেকেরও ঘাসফুলের প্রার্থী হওয়ার সৌভাগ্য হয়নি । আগামিকাল মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন ৷ সেই তুষের আগুনে বিস্ফোরণ ঘটবে না তো ? প্রশ্নটা কিন্তু থেকেই গিয়েছে পুরাতন মালদা পৌরসভার ক্ষেত্রে (Old Malda Municipal Election 2022) ।
এই মুহূর্তে পুরাতন মালদা পৌর এলাকা জুড়ে প্রচারে নেমে পড়েছেন টিকিট পাওয়া প্রার্থীরা । চলছে দেওয়াল লিখন । তবে প্রার্থী তালিকায় ঠাঁই না পেয়ে ক্ষোভের আগুনে ফুটলেও এখনও প্রকাশ্যে মন্তব্য করতে চাইছেন না কেউ । এখনও তাঁদের আশা রয়েছে, শেষ মুহূর্তে কোনও ম্যাজিক হলেও হতে পারে । নতুন আরও কোনও তালিকা প্রকাশিত হতে পারে । তাই আরও 24 ঘণ্টা দলের মনোভাব মেপে নিতে চাইছেন তাঁরা । যদিও জানা যাচ্ছে, ভিতর ভিতর তাঁরা নির্দল হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেলেছেন । বিশেষত 4, 6, 11-সহ আরও কয়েকটি ওয়ার্ডে ঘাসফুলের প্রার্থীদের রাস্তায় ছড়িয়ে পড়তে পারে নির্দলের কাঁটা ।
পুরাতন মালদা পৌর এলাকায় শাসকদলের দেওয়াল লিখন শাসকদলের দ্বিতীয় তালিকায় 11 নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী হিসাবে নাম ছিল পরেশ ঘোষের । এলাকার রাজনীতিতে পোড়খাওয়া অধুনা তৃণমূল নেতা একসময় বাম রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন । বাম সমর্থিত নির্দল হিসাবে হারিয়ে ছিলেন পৌরসভার তৎকালীন চেয়ারম্যান বিভূতিভূষণ ঘোষকে । কিন্তু এবার দলের তৃতীয় প্রার্থী তালিকাতেও জায়গা পাননি ৷ 4 নম্বর ওয়ার্ডে প্রথমে নাম ছিল বিশ্বনাথ পাকড়াশির । নতুন মুখ হিসাবে তাঁকে ওই ওয়ার্ডে প্রার্থী করা হয়েছিল । পরে সেখানে তাঁকে সরিয়ে প্রার্থী করা হয়েছে নির্মল অধিকারীকে । শোনা যাচ্ছে, তিনিও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে রাজি নন । ফলে সেখানে কী হবে এখনও বোঝা যাচ্ছে না । 6 নম্বর ওয়ার্ডে দু’বারের কাউন্সিলর মাজিফুল ইসলাম এবার সংরক্ষণের গেড়োয় ভোটে দাঁড়াতে পারছেন না । তাঁর ওয়ার্ড এবার মহিলা সংরক্ষিত । প্রথমে তাঁর স্ত্রী রোকেয়া খাতুনকে প্রার্থী করে দল । কিন্তু পরে রোকেয়ার পরিবর্তে প্রার্থী করা হয়েছে জান্নাতুর নেশাকে । এই জান্নাতুন নেশার স্বামী মাস দুয়েক আগেই সিপিএম থেকে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন । বিষয়টি নিয়ে ওই ওয়ার্ডেও চাপা ক্ষোভ রয়েছে ।
এনিয়ে পরেশ ঘোষের বক্তব্যে হেঁয়ালি । বলেন, “দল যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাকে আমি মেনে নিয়েছি । আমি দলের ঊর্ধ্বে নই । দল যদি মনে করে আমাকে টিকিট দেবে, তাহলে ভোটে লড়াই করব । নইলে দলের সমর্থক হয়ে থাকব । বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে আমার কাছে নির্দল হয়ে লড়াই করার প্রস্তাব আসছে । 11 এবং 16 নম্বর ওয়ার্ড থেকে ইতিমধ্যে সেই প্রস্তাব এসেছে । কিন্তু আমি এখনও কাউকে নিজের কোনও মতামত দিইনি । দলের বিরুদ্ধে যাব না বলেই আপাতত ঠিক করে রেখেছি । এখনও সময় আছে । দল কী করছে সেটাই দেখছি ।”
আরও পড়ুন : AMC Election 2022 : ‘উনি কে ? চিনি না তো !’ বিজেপির রাজ্য সভাপতিকে চিনতেই পারলেন না আসানসোলবাসী