মালদা, 12 অগস্ট : রোগীকে ভর্তি করাতে 100 টাকা, জরুরি বিভাগ থেকে ওয়ার্ডে নিয়ে যেতে 500 টাকা । এমনই সব রেট বেঁধে দেওয়া হয়েছে মালদা মেডিক্যালে । রেট বাঁধা হয়েছে আরও অনেক ক্ষেত্রে । এতদিন এনিয়ে অভিযোগ শোনা গেলেও কোনও প্রমাণ মিলছিল না । এদিন সেই প্রমাণ মিলেছে । জরুরি বিভাগ থেকে ওয়ার্ডে নিয়ে যেতে এক রোগীর ছেলের কাছে 500 টাকা দাবি করে এক নিরাপত্তাকর্মী । কর্মীর আকালে এখন তাকে জরুরি বিভাগে চতুর্থ শ্রেণির কর্মী হিসাবে অস্থায়ী নিয়োগ করা হয়েছে । রোগীর ছেলে মাত্র 100 টাকা দেওয়ায় সে মুমূর্ষু রোগীকে ওয়ার্ডের বাইরে রেখেই চলে যায় । অন্য একজনের মোবাইলে ধরা পড়া সেই ছবি ৷ এখন তা ভাইরাল । সংবাদমাধ্যমের কাছে এই ঘটনা জানতে পেরেই তদন্ত শুরু করেছে মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ ।
হরিশ্চন্দ্রপুরের লারিয়াল গ্রামের বাসিন্দা মর্জিনা বিবি রক্তাল্পতায় ভুগছেন । গতকাল তাঁকে চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় । বৃহস্পতিবার দুপুরে তাঁকে মালদা মেডিক্যালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে । তাঁকে মালদা মেডিক্যালে নিয়ে আসেন তাঁর ছেলে । জরুরি বিভাগে চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে তাঁকে ভর্তির সুপারিশ করেন । অসুস্থতার জেরে হাঁটতে পারছিলেন না মর্জিনা । তাই সেখানে কর্তব্যরত চতুর্থ শ্রেণির অস্থায়ী দায়িত্বে থাকা এক কর্মীকে ট্রলিতে চাপিয়ে মর্জিনাকে ওয়ার্ডে রেখে আসতে বলেন চিকিৎসকরা । ওই বিভাগ থেকে বেরোতেই শুরু হয় সেই কর্মীর জোরাজুরি ।
মর্জিনা বিবির ছেলে রমজান আলি বলেন, "মায়ের শরীরে রক্ত নেই । চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে তাঁকে রক্ত দিতে হয়েছে । আজ তাঁকে মালদা মেডিক্যালে রেফার করা হয়েছে । আমি মাকে নিয়ে জরুরি বিভাগে আসি । মাকে এখানে ভর্তি নিয়ে নেওয়া হয় । সেখানে থাকা হাসপাতালেরই এক কর্মী মাকে ট্রলিতে চাপিয়ে ওয়ার্ডের বেড পর্যন্ত নিয়ে যেতে আমার কাছে টাকা দাবি করে । আমি 50 টাকা দিতে চাই । কিন্তু সে বলে, তারা অনেকজন রয়েছে । 500 টাকা লাগবে । আমি গরিব মানুষ । অত টাকা আমার কাছে নেই । শেষ পর্যন্ত ওয়ার্ডের বাইরে ট্রলি রেখে দেয় সে । বাধ্য হয়ে আমি তাকে 100 টাকা দিই । সে টাকা নিয়ে সেখান থেকে চলে যায় । মাকে আর বেডে নিয়ে যায়নি । আমিই মাকে বেডে রেখে আসি ।"