মালদা, 25 নভেম্বর: দিন আনি দিন খাই অবস্থা পরিবারের ৷ অথচ ছেলে এমন রোগে আক্রান্ত যে, চিকিৎসার খরচের বহর অনেক ৷ ডাক্তার-বদ্যি করতে তাই দরজায় দরজায় ঘুরেছেন মা-বাবা ৷ একটু সাহায্যের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থেকেছেন পঞ্চায়েত অফিসের বাইরে ৷ কিন্তু খালি হাতেই ফিরতে হয়েছে সব জায়গা থেকে ৷ শেষমেশ অসহায় পরিবারের সহায় হলেন ব্লক ডেভলপমেন্ট অফিসার (বিডিও) (Malda BDO Helps Cerebral Palsy Patient) ৷ পরিবারটিকে সরকারি ভাতার ব্যবস্থা করে দেওয়ার পাশাপাশি, অসুস্থ ছেলেটির পড়াশোনা এবং চিকিৎসার ব্যবস্থাও করে দিলেন বিডিও ৷
মালদা জেলার চাঁচল 1 নম্বর ব্লকের অলিহণ্ডা অঞ্চলের শীতলপুর গ্রামে কোনও রকমে সংসার চলে দবিরুদ্দিন শেখ এবং নুরবানু বিবির ৷ এত সময় বিদ্যুৎ শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন দবিরুদ্দিন ৷ কিন্তু কয়েক বছর আগে, বিদ্যুতের খুঁটিতে উঠে কাজ করার সময় পড়ে গিয়ে আঘাত পান দবিরুদ্দিন ৷ তার পর থেকেও আজও হাত ঠিক হয়নি তাঁর ৷ তাই পুরনো কাজে আর ফেরার উপায় নেই ৷ এর, ওর জমিতে খেটেই দু’পয়সা রোজগার করেন ৷ সংসারের হাল ধরতে স্ত্রী নুরবানুও কৃষিশ্রমিকের কাজ বেছে নিয়েছেন ৷ ছোট ছেলেকেও সঙ্গে করে কাজে নিয়ে যান তিনি ৷
এ ভাবে মোটামুটি চলে যায় দবিরুদ্দিন এবং নুরবানুর সংসার ৷ কিন্তু তাঁদের দুশ্চিন্তার কারণ বড় ছেলে মৃণাল আলি ৷ বয়স 15 ছাড়িয়ে গেলেও, এখনও পরিষ্কার করে কথা বলতে পারে না সে ৷ চলাফেরার শক্তিও নেই তেমন ৷ এমনকি খেতেও পারে না ৷ চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন সেরিব্রাল পালসি-তে (Cerebral Palsy Patient) আক্রান্ত মৃণাল ৷ কিন্তু চিকিৎসার যা খরচ, তা চালানোর ক্ষমতা নেই দবিরুদ্দিন এবং নুরবানুর ৷ বহু চেষ্টা করেও আর্থিক সাহায্য জোগাড় করতে পারেননি তাঁরা ৷
আরও পড়ুন:Bengali Service in Post Office : পোস্ট অফিসে বাংলা ভাষায় পরিষেবার দাবিতে ডেপুটেশন বাংলা পক্ষর
তবে সব জানতে পেরে নিজে থেকেই তাঁদের সাহায্যে এগিয়ে এসেছেন বিডিও সমীরণ ভট্টাচার্য ৷ তিনি বলেন, ‘‘মৃণাল আমার সঙ্গে দেখা করেছে ৷ সে সেরিব্রাল পালসির রোগী ৷ কিছু সাহায্য করেছি ৷ যাতে দ্রুত সরকারি ভাতা পায়, তার ব্যবস্থা করা হয়েছে ৷ যাতে পড়াশোনা করতে পারে, তার জন্য সব রকম ভাবে সাহায্য করা হবে ৷ ওর চিকিৎসার জন্য চাঁচল হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা হয়েছে আমার ৷’’