মালদা, 19 অগস্ট : কেন প্রতি বছর ভাঙন আর বন্যার মুখোমুখি হচ্ছে মালদা জেলা ? তার স্থায়ী প্রতিকার কী হতে পারে ? গৌড়বঙ্গে নদী বাঁচাও আন্দোলনের পুরোধা, রাজ্য নদী বাঁচাও কমিটি সবুজ মঞ্চের যুগ্ম আহ্বায়ক তুহিনশুভ্র মণ্ডল ইটিভি ভারতকে জানালেন সেই কথাই ৷ বললেন, এই সমস্যার একমাত্র সমাধান হল বোল্ডার পাইলিং ৷
গত এক সপ্তাহের মধ্যে প্রথমবার স্থিতিশীল হয়েছে গঙ্গার জলস্তর । মঙ্গলবার দুপুর 12টায় নদী 25.86 মিটার উচ্চতায় স্থিতিশীল হয়েছে । সেই সময় গঙ্গার জলস্তর সর্বোচ্চ বিপদসীমা 25.30 মিটার থেকেও 56 সেন্টিমিটার বেশি ছিল । যদিও সেচ দফতরের আশঙ্কা, ক্ষণিকের জন্যই স্থিতিশীল হয়েছে গঙ্গা । কারণ, এখনও আপার ক্যাচমেন্টে বৃষ্টি চলছে । উত্তরপ্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ডে বৃষ্টি না থামা পর্যন্ত গঙ্গার জলস্তর বাড়বে । এদিকে জলের চাপে গতকাল রাতে ভূতনির কোশিঘাটে নদীবাঁধের বড় অংশে ধস নেমেছে । তবে এখনও পর্যন্ত বাঁধের পুরো অংশ নদীতে তলিয়ে যায়নি । অন্যদিকে, ফুলহরের জলস্তর বৃদ্ধিও অব্যাহত রয়েছে । বেলা বারোটায় তার জলস্তর ছিল 28.08 মিটার । বিপদসীমা 27.43 মিটার থেকে 65 সেন্টিমিটার বেশি ।
এই অবস্থায় নদী বিশেষজ্ঞ বলেন, "বন্যা খুব স্বাভাবিক প্রক্রিয়া । বন্যা না হলে এদেশে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ব-দ্বীপ সৃষ্টি হত না । মাটির উর্বরতা বাড়ত না । ফসলও ফলত না । কিন্তু বর্তমান সময়ে দেখা যাচ্ছে, হঠাৎ হঠাৎ কোনও কোনও অঞ্চলে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত হচ্ছে । এবছর ঝাড়খণ্ডেও স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে । তার জেরে মালদার নদীগুলিতে জলস্তর অনেক বেড়ে গিয়েছে । আমি গতকালই মানিকচকের গোপালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বালুটোলা ও এলাহিটোলা পরিদর্শন করেছি । ওই দুই গ্রামে গঙ্গা ভাঙন মারাত্মক আকার নিয়েছে । মানুষজন নিজেদের ঘরবাড়ি ভেঙে অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন । এক ভয়াবহ পরিস্থিতি । আসলে নদীগুলির নাব্যতা যেমন কমেছে, তেমনই বর্ষায় তাতে জলপ্রবাহের মাত্রাও অনেক বেড়ে গিয়েছে । এতেই বন্যা আর ভাঙন প্রবল আকার ধারণ করছে । নদী তার গতিপথ বদলে ফেলছে । এছাড়া বিশ্ব উষ্ণায়ণের প্রভাবে অনিয়মিত জলবায়ু পরিবর্তনেও বৃষ্টির চরিত্র বদলে যাচ্ছে । কম সময়ে অতিরিক্ত বৃষ্টি হচ্ছে । বৃষ্টির বণ্টন সঠিকভাবে হচ্ছে না ।"