মালদা, 24 অগস্ট: গঙ্গাকে ছাপিয়ে গেল কোশি। অনামি এই নদী এখন কয়েক লাখ মানুষের রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে । অস্তিত্বের সংকটে পড়েছে অন্তত তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েত। তাঁরা সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করছেন । দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন জেলাশাসক (DM said administration will take proper steps)।
মরা কোশি নদীতে এখন গঙ্গার জল বইতে শুরু করেছে । উত্তর চণ্ডীপুরের বড় কালুটোনটোলা গ্রামে কোশির দাপটে বিপন্ন প্রান্তিক বাঁধ । আরও খারাপ পরিস্থিতি বিলাইমারি ও মহানন্দটোলার পশ্চিম রতনপুর, সামসুদ্দিনটোলা, খাসমহল, নাসিরটোলা, ভাষারামটোলা, ঈশ্বরটোলা, হজরতটোলা, ইদ্রিশটোলার মতো গ্রামগুলির । বিগত তিন দিন ধরে রতুয়ায় প্রায় 4 কিলোমিটার এলাকা ভাঙনে বিপর্যস্ত ৷
সংকটে থাকা গ্রামগুলির বাসিন্দারা ইতিমধ্যে নদী তীরবর্তী এলাকার গাছপালা কাটতে শুরু করেছেন । পশ্চিম রতনপুরের বাসিন্দা নন্দলাল চৌধুরী বলেন,‘‘এক সময় এই নদীর নাম ছিল মরা নদী। কিন্তু তিনদিন ধরে তার ভাঙনে আমরা দিশেহারা । কেশরপুর মৌজায় বাঁধ প্রায় ভাঙতে বসেছে। ওই বাঁধ ভাঙলে শুধু বিলাইমারি, মহানন্দটোলা নয় ভূতনি চরও ভেসে যাবে। এখন বাঁধ থেকে নদী মাত্র 50 মিটার দূরে। কোশি এখন উজান আর ভাটি, দু’দিকেই কাটছে । আমার এই 65 বছর বয়স পর্যন্ত কোশিতে ভাঙন দেখিনি । এভাবে ভাঙন হলে 3-4 দিনের মধ্যে বাঁধ ভেঙে যাবে।”
নদীর কোশির দাপটে বিপন্ন একাধিক গ্রাম আরও পড়ুন: কোচবিহারে নদী ভাঙন রোধে 11 কোটি টাকা বরাদ্দ রাজ্যের
খাসমহল গ্রামের মহম্মদ ফরজান আলি বলেন, “আগে কখনও কোশির ভাঙন দেখিনি। এখানে প্রায় 40 হাজার লোক রয়েছে । যেভাবে নদী পাড় ভাঙছে, তাতে সামাল দেওয়া কঠিন। এভাবে ভাঙন চললে আমরা উদ্বাস্তু হয়ে যাব। আতঙ্কে রাতে ঘুমোতে পারছি না। বিধায়ক-সাংসদরা শুধু আমাদের ভোট নেন। আমাদের বাঁচাতে কিছু করেন না। সরকারের কাছে আমাদের আর্জি, এই এলাকাকে রক্ষা করা হোক।”
জেলাশাসক নীতিন সিংঘানিয়া জানান, কোশির ভাঙনের খবর পেয়ে সেচ দফতরের ইঞ্জিনিয়াররা গতকালই এলাকা পরিদর্শন করেছেন। জরুরি ভিত্তিতে ভাঙন রোধের কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রতুয়া 1 ব্লকের ভাঙন বিধ্বস্ত এলাকাতেও দ্রুত প্রশাসনিক দল পাঠানো হচ্ছে।