মালদা, ১১ সেপ্টেম্বর : মালদার গৌড়ের বাসিন্দা বৈদ্যনাথ মণ্ডল । পেশায় তিনি দোকানদার ৷ প্রত্নতত্ত্ব জিনিস সংগ্রহ করাই তাঁর নেশা ৷ প্রায় 19 বছর ধরে জেলার প্রাচীন ইতিহাসের খোঁজে ঘুরে বেড়ান ঐতিহাসিক গৌড়ের আনাচেকানাচে৷ এতদিন ধরে সেই কাজ করতে করতে নিজের দোকানটাকে একটি আস্ত সংগ্রহশালায় পরিণত করে ফেলেছেন তিনি । বহুদিনের ইচ্ছে যে তাঁর এই সংগ্রহ দিয়ে তৈরি করা হোক একটি সংগ্রহশালা ৷ তার জন্য তিনি জেলা প্রশাসন সহ নবান্নতে চিঠি দিয়েছেন ৷ যোগাযোগ করেছেন গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়েও ৷ তবে আক্ষেপ, কোথাও থেকে তিনি কোনও উদ্যোগ দেখতে পাননি ৷ তাই তাঁর বদ্ধ দোকানঘরেই আটকে রয়েছে প্রাচীন বাংলার ইতিহাস ৷
ইতিহাসপ্রসিদ্ধ গৌড়ের একটি সৌধের সামনে তাঁর ছোটোখাট দোকান৷ বৈদ্যনাথবাবু বলেন, "এতদিন ধরে খুঁজে খুঁজে প্রাচীনকালের অনেক জিনিসই পেয়েছি৷ একসময় এই ঘরটা সেই সব প্রাচীন ঐতিহাসিক নিদর্শনে প্রায় ভরতি হয়ে গিয়েছিল ৷ কয়েক বছর আগে জেলার তৎকালীন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কল্যাণ মুখোপাধ্যায় দোকান সিল করে 10 পেটি জিনিস নিয়ে চলে যান ৷ কিন্তু তাতে আমার ইতিহাস খোঁজা বন্ধ হয়ে যায়নি ৷ ফের আমি গৌড়ের কোনা কোনা খুঁজে 7-8 পেটি প্রাচীন জিনিস সংগ্রহ করেছি ৷ এখানে কোনও পুকুর খোঁড়া হলে কিংবা জমি চাষ করার সময় এখনও প্রাচীন ইতিহাসের নিদর্শনের দেখা মেলে ৷ বৃষ্টি হলে প্রাচীনকালের তৈরি মৃৎপাত্র থেকে কাদা ধুয়ে নেমে যায় ৷ আমার চোখে পড়লে সেসব জিনিস নিয়ে আসি ৷ তবে শুধু মাটির জিনিসই নয়, তার সঙ্গে পাথর, লোহা, এমনকি প্রাচীনকালের তামার মুদ্রাও আমি এভাবে সংগ্রহ করেছি ৷ গৌড়ে বিভিন্ন জায়গা থেকে পর্যটকরা আসে ৷ তারা ইতিহাসকে খুঁজতে, দেখতে, বুঝতেই এখানে আসে ৷ তাই আমি চাই, আমার সংগ্রহ করা জিনিস দিয়ে গৌড়ে একটি সংগ্রহশালা তৈরি করা হোক৷ তবে আমার ইচ্ছে থাকলেও আদপে কী হবে, তা আমি বলতে পারব না ৷ আমার ইচ্ছের কথা জানিয়ে জেলা প্রশাসন, এমনকী নবান্নতেও চিঠি দিয়েছি ৷ কিন্তু কোনও উত্তর পাইনি৷ উত্তর না পেয়ে আমি গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গেও যোগাযোগ করি ৷