মালদা, 1 জানুয়ারি : প্রতি বছর বাঁধ কাটছে মহানন্দা ৷ বর্ষা এলেই রাতের ঘুম উড়ছে এলাকাবাসীর ৷ কোনও কারণে নদীবাঁধ ধসে পড়লে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে বেশ কয়েকটি গ্রামের আড়াই থেকে তিন হাজার ঘরবাড়ি ৷ বাঁধ রক্ষায় এলাকাবাসী আর্জি জানিয়েছে স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতকে । আবেদন জানিয়েছে ব্লক ও জেলা প্রশাসনকেও ৷ কাজ হয়নি ৷ তাই শেষ পর্যন্ত এলাকার সাংসদের কাছে হত্যে দিয়েছিল গ্রামবাসীরা ৷ শেষ পর্যন্ত বছরের শেষ দিন বাঁধের পরিস্থিতি পরিদর্শন করলেন সাংসদ ৷ কথা দিলেন, শুখা মরশুমেই যাতে সেচ দপ্তর এই বাঁধ সংস্কারের কাজ শুরু করে তার জন্য তিনি প্রয়োজনে রাজ্যের সেচমন্ত্রীরও দ্বারস্থ হবেন ৷
গত কয়েক বছর ধরেই পুরাতন মালদার সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ছাতিয়ান মোড়, নাগেশ্বরপুর প্রভৃতি এলাকায় মহানন্দার অল্পবিস্তর ভাঙন চলছে ৷ প্রতি বছর নদীগর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে বাঁধের একাংশ ৷ ছাতিয়ান মোড়ের মণ্ডলপাড়ায় মহানন্দা বড় বাঁক নিয়েছে ৷ ভাঙনের কারণ সেই বাঁক ৷ নদীর ওপারে মালদা শহরের দিকে মহানন্দায় চর পড়ছে ফি বছর ৷ ফলে নদীর জল সেদিকে যেতে না পেরে ধাক্কা খাচ্ছে মণ্ডলপাড়া এলাকার বাঁধে ৷ নদীর চরিত্র অনুযায়ী, প্রথমে বাঁধের নিচের অংশে ভাঙন হচ্ছে ৷ পরে উপরের অংশ ধসে যাচ্ছে নদীতে ৷ স্থানীয়দের আশঙ্কা, এভাবে ভাঙন চলতে থাকলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে মহানন্দা নতুন খাত ধরে বইতে শুরু করবে ৷ তার স্রোতে তলিয়ে যাবে কয়েকটি গ্রামের কয়েক হাজার বাড়িঘর ৷ দীর্ঘদিন ধরে তারা প্রশাসনের সব মহলে আসন্ন বিপদের কথা জানিয়েছে ৷ কোনও কাজ না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত তারা এলাকার সাংসদ খগেন মুর্মুর দ্বারস্থ হয় ৷
এলাকার বাসিন্দা সত্যনারায়ণ শ্রীবাস্তব জানাচ্ছেন, “এই বাঁধ নির্মাণের 50-55 বছর হয়ে গিয়েছে ৷ কিন্তু এখনও বাঁধের কোনও সংস্কার হয়নি ৷ প্রতি বছর বর্ষায় নদীর জল বাড়লেই বাঁধে ধস নামে ৷ এভাবে বাঁধের ভিতর সুড়ঙ্গ তৈরি হয়ে গিয়েছে ৷ বর্ষা বা বন্যা হলেই ভয়ে রাতের ঘুম উড়ে যায় ৷ কখন কোথায় বাঁধ ভেঙে সুড়ঙ্গ দিয়ে নদীর জল ভিতরে চলে আসবে বোঝা যায় না ৷ বাঁধ সংস্কারের জন্য আমরা একাধিকবার পঞ্চায়েতের মাধ্যমে প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে আবেদন জানিয়েছি ৷ কাজ না হওয়ায় আমরা শেষ পর্যন্ত সাংসদের দ্বারস্থ হয়েছি ৷”