মালদা, 18 নভেম্বর : এখনও বেশিরভাগ মাঠের ধান পুরোপুরি পাকেনি । সামান্য কিছু জমিতে আমন ধান পাকলেও তা চাষির ঘরে ওঠেনি । এরই মধ্যে প্রশাসনের তরফে সরকারি সহায়ক মূল্যে ধান কেনার জন্য স্লিপ বিলি শুরু হয়ে গিয়েছে । সেই স্লিপ বিলি নিয়ে দালালরাজের অভিযোগ উঠেছে হরিশ্চন্দ্রপুরে । অভিযোগ, স্থানীয় মিল মালিক এবং প্রশাসনিক আধিকারিকদের একাংশের যোগসাজশে বঞ্চিত হচ্ছেন কৃষকরা । তাঁদের সহযোগিতায় সরকারি সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রির স্লিপ পৌঁছে যাচ্ছে ফড়েদের কাছে । ফড়ের দল কমিশনের লোভ দেখিয়েও কৃষকদের জমির নথি হাতিয়ে নিচ্ছে । শুধু চাষিরা নন, এই অভিযোগ স্থানীয় তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যেরও । এসব অবশ্য অভিযোগ সঠিক নয় বলে দাবি করেছেন সরকারি আধিকারিক ।
খরিফ মরশুমে চাষিদের উৎপাদিত ধান সরাসরি কেনা শুরু করেছে রাজ্য সরকার । গোটা রাজ্যেই এই কাজ শুরু হয়েছে । মালদা জেলায় চাষিদের ঘরে ধান উঠতে আরও কিছুদিন বাকি । তাই এখন বিভিন্ন এলাকায় ক্যাম্প করে সরকারি সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রির জন্য চাষিদের স্লিপ বিলি করা হচ্ছে । হরিশ্চন্দ্রপুর-2 নম্বর ব্লকের মালিওর-1 গ্রাম পঞ্চায়েতের খন্তা প্রাথমিক বিদ্যালয়েও গতকাল থেকে এই ক্যাম্প শুরু হয়েছে । এই স্লিপ বিলিকে কেন্দ্র করে আজ দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন চাষিরা । তাঁরা ওই ক্যাম্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারি আধিকারিককে ঘেরাও করেও বিক্ষোভ দেখান ।
স্থানীয় চাষি মুকলেসুর রহমানের অভিযোগ, "ফড়েরা কুইন্টাল পিছু দু'শো থেকে পাঁচশো টাকা দেবে বলে লোভ দেখাচ্ছে আমাদের । বিনিময়ে আমাদের কার্ড তাদের দিতে হবে। সরকারি আধিকারিকদের যোগসাজশে তারা আগে লাইনে দাঁড়াচ্ছে । আমার বাড়ি মিটনা গ্রামে । সেখান থেকে ক্যাম্পে আসতে কিছুটা সময় লেগেছে । এখানে আসলে ওরা বলছে, তারা নাকি গতকালই নিজেদের নাম লিস্টে তুলে ফেলেছে । কীভাবে এটা হল ? এখানে গোটা বিষয়টাতেই দুর্নীতি হচ্ছে । মিল মালিকদের যোগসাজশে সরকারি কর্মীরা দুর্নীতিতে জড়িত ।"
একই বক্তব্য আরেক কৃষক আজিজুর রহমানের । তিনি বলেন, "ফড়েদের সঙ্গে রাইস মিলারদের যোগ রয়েছে । এর সঙ্গে সরকারি আধিকারিকরাও জড়িত । এদের প্রধান লক্ষ্য, প্রকৃত কৃষকরা যাতে সরকারি ক্যাম্পে ধান বিক্রিতে উৎসাহ হারায় । তারা যেন গ্রামে ফড়েদের ধান বিক্রি করতে বাধ্য হয় । ফড়েরা সেই ধান সরাসরি মিলে ধান বিক্রি করবে । এখানে স্থানীয় একটি রাইস মিলের নাম বেশি শোনা যাচ্ছে । প্রতি কুইন্টালে 300-400 টাকা সরকারি আধিকারিক, মিল মালিক ও ফড়েদের মধ্যে বণ্টন হয়ে যাচ্ছে । এসব এখানে চলতে দেওয়া হবে না ।"