মালদা, ১৪ ফেব্রুয়ারি : প্রাচীনকাল থেকেই ঔষধি হিসাবে হলুদের ব্যবহার প্রচলিত ৷ আধুনিক গবেষণা বলছে, হলুদের মধ্যে রয়েছে ক্যান্সার প্রতিহত করার ক্ষমতা৷ দেশের প্রতিটি ঘরেই রান্নায় ব্যবহৃত হয় হলুদ ৷ কিন্তু ভেজাল মেশানো হচ্ছে হলুদেও ৷ বহুদিন ধরেই মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুরে রমরমিয়ে চলছে এই ব্যবসা ৷ মূলত ইসলামপুর, তিলডাঙ্গি, রামপুর, মালিওর প্রভৃতি এলাকায় এই কালো বাজারি চলছে ৷ হরিশ্চন্দ্রপুর ১-এর বিডিও’র কাছে অভিযোগও জানিয়েছেন ওই এলাকার মানুষ ৷
হরিশ্চন্দ্রপুরের একাধিক মিলে হলুদ গুঁড়ো তৈরির যে ছবি ধরা পড়েছে তা দেখলে যে কোনও মানুষের চোখ কপালে উঠবে ৷ কিছু গোটা ও প্রায় পচে যাওয়া হলুদের সঙ্গে মেশানো হচ্ছে ধানের তুষের গুঁড়ো, চালের গুঁড়ো, আটা, বিভিন্ন রাসায়নিক রং, এমনকি ইটের গুঁড়োও ৷ সমস্ত সামগ্রী ভালো করে মিশিয়ে গুঁড়ো করা হচ্ছে, সেই হলুদ গুঁড়ো বস্তাবন্দী করে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন হাটেবাজারে৷ খালি চোখে সেই হলুদ গুঁড়োয় ভেজাল বোঝার উপায় নেই৷ বাজার চলতি নামি কম্পানির তুলনায় দামও বেশ খানিকটা কম হওয়ায় মানুষও না জেনেই সেই হলুদ গুঁড়ো দিয়েই রান্না করছে ৷ ফলে নানাবিধ রোগের শিকার হচ্ছে শিশু থেকে বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা৷ পেটের অসুখ থেকে শুরু করে বিভিন্ন অসুখে ভুগছে সবাই ৷
সম্প্রতি অসাধু ব্যবসায়ীদের এই ভেজাল হলুদ গুঁড়ো তৈরির কার্যপ্রণালি এলাকার মানুষজনের নজরে আসে ৷ খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রায় ১০ বছর ধরে ভেজাল হলুদ তৈরির ব্যবসা চলছে এলাকায় ৷ এই নিয়ে অভিযোগ দায়ের হয় বিডিও’র কাছে ৷ রামপুর এলাকার এক মিল মালিক অতীশ সাহা বলছেন, “বছর দুয়েক আগে আমি হলুদে ভেজাল মেশাতাম ৷ কিন্তু এখন সেসব বন্ধ করে দিয়েছি ৷ এখন পুরোপুরি বিশুদ্ধ হলুদ আমার মিলে ভাঙানো হয় ৷ তাতে আর কোনও ভেজাল মেশাই না ৷ তবে হরিশ্চন্দ্রপুরে ভেজাল হলুদের রমরমা কারবার চলছে ৷” রামপুর গ্রামের বাসিন্দা মহবুল শেখ বলেন, “এখানকার মিলগুলিতে হলুদের সঙ্গে আটা, রাসায়নিক রং সহ বিভিন্ন ধরনের জিনিস মেশানো হচ্ছে৷ সেই হলুদই সবাই খাচ্ছে ৷ আমরাও খাচ্ছি ৷ এতে শরীরের ক্ষতি তো হচ্ছেই ৷ প্রশাসনকে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে ৷”